শেম! শেম! স্লোগানে ট্রাম্পকে নিজগৃহে বরণ

ছয় মাস আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ট্রাম্প প্রথমবারের মতো সোমবার নিজ বাড়িতে এসেছিলেন। তবে সেটি সুখকর হয়নি। শত শত মানুষ নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে তার বিলাসবহুল ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তার লিমুজিন যখন বাড়ির পথে ছিল, তখন বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন- শেম! শেম। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি হতে চাননি ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের গাড়িবহর ফিফথ এভিনিউ ধরে না গিয়ে উল্টোপথে একটি ওয়ানওয়ে সড়ক দিয়ে অন্ধকারের মধ্যে ট্রাম্প টাওয়ারে পৌঁছায়। স্বভাবতই সেই পথে কোনো বিক্ষোভকারী ছিলেন না। তবে ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া প্রহরা। গ্রীষ্মের লম্বা অবকাশ যাপনের অংশ হিসেবে তার নিজের টাওয়ারে কয়েকদিন অবস্থান করবেন ট্রাম্প। এরপর তিনি ফিরে যাবেন নিউ জার্সিতে তার নিজস্ব গলফ ক্লাবে। বিতর্কিত নির্বাচনে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হলেও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্কে তার জনপ্রিয়তা সব সময়ই তলানিতে। আজীবন নিউইয়র্কের বাসিন্দা ট্রাম্প এ শহরকে ভালোবাসলেও তিনি তার প্রতিদানে শুধু ঘৃণা আর বিরোধিতাই পেয়েছেন। সোমবারও বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়েছিলেন যেন তারা প্রেসিডেন্টকে জানান দিতে পারেন যে তাদের কাজে ভোটারদের সমর্থন নেই। এজন্য ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। এ শহরটি ডেমোক্রেটদের ঘাঁটি। ট্রাম্প টাওয়ারে ট্রাম্পের আগমনের সময় বিক্ষোভকারীরা অত্যন্ত কাব্যিক স্লোগান তোলেন। যেমন- ‘হে হে হো হো ট্রাম্প দ্য রেসিস্ট হ্যাজ টু গো; নো ট্রাম্প, নো কেকেকে, নো ফ্যাসিস্ট ইউএসএ; লাভ নট হেট, দ্যাটস হোয়াট মেকস আমেরিকা গ্রেট।’ এ সময় অনেকের হাতে শোভা পাচ্ছিল বিশাল ব্যালুন, যাতে লেখা ছিল- ফু ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের রণহুংকার এবং ভার্জিনিয়ায় উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়বাদীদের তাণ্ডবে ট্রাম্পের মৌন সমর্থন ট্রাম্পবিরোধীদের এ বিক্ষোভ আয়োজনে উৎসাহিত করেছে। নিউইয়র্কের বাসিন্দা ও শিল্পী ৩৬ বছর বয়সী মাইকেল ওয়াং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি সপ্তাহই এখন নতুন কিছু। তার হাতে শোভা পাচ্ছিল ‘পরমাণু যুদ্ধ রেটিং গেমস নয়’ লেখা ফেস্টুন। বিক্ষোভকারীরা বিকাল ৫টা থেকে জড়ো হতে থাকেন। তারা ট্রাম্প টাওয়ারমুখী সড়ক অচল করে দেন। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ তিন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে। এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘সাত মাস পর বাড়িতে এসে ভালো লাগছে, তবে হোয়াইট হাউস অবশ্যই স্পেশাল, এর মতো জায়গা হয় না। যুক্তরাষ্ট্রই আমার নিজের বাড়ি।’ নিউইয়র্কের ফিফথ এভিনিউয়ে অবস্থিত ৬৮তলা বিশিষ্ট ট্রাম্প টাওয়ারের লবিতে বসেই ২০১৫ সালের ১৬ জুন প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

No comments

Powered by Blogger.