লালমনিরহাটে মাঠে নেমেছেন ডজন খানেক মনোনয়নপ্রত্যাশী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ডজনখানেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতাদের পদচারণায় এখন মুখরিত সর্ব উত্তরের ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটের তিনটি আসন। জেলায় মোট ভোটার আট লাখ ৭৫ হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার চার লাখ ৩৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মহিলা ভোটার চার লাখ ৩৯ হাজার ৫৬৬ জন। নির্বাচনের এখনো অনেক দিন বাকি থাকলেও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে নবীন-প্রবীণ মিলে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তাদের এ ঘন ঘন যোগাযোগ রক্ষাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এত দিন তাদের অনেককেই মাঠে দেখা না গেলেও মনোনয়ন পেতে বেশ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অনেকটা নিশ্চিত হওয়ায় দিন দিন নির্বাচনের মাঠ গরম হয়ে উঠছে।  এ দিকে একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে বিএনপি দু’টি পৌরসভা ও পাঁচ উপজেলায় সস্মেলন করে কমিটি গঠনের কাজ শেষ করেছে।
গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপির সম্মেলনে লালমনিরহাটে এসেছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সম্মেলনকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। সব বিভেদ ভুলে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় দলটি। লালমনিরহাট-৩ সদর ১৮ ভোটার সংখ্যা মোট আট লাখ ৭৫ হাজার ৪৭৯। এর মধ্যে পুরুষ সংখ্যা চার লাখ ৩৫ হাজার ৯১৩ জন এবং মহিলা চার লাখ ৩৯ হাজার ৫৬৬ জন। এ আসনে গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদ দুলাল এমপি নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেননি। তবে আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদ দুলাল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির জোট হলে এরশাদের সহোদর জি এম কাদের এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু এরই মধ্যে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠনের কাজসহ দুর্নীতিবিরোধী সাইকেল র্যালি করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি বিএনপির লালমনিরহাট সদর আসনের দীর্ঘ দিনের একক প্রার্থী। লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারী) লালমনিরহাট ১৭ বর্তমান ভোটার তিন লাখ ৩১ হাজার ৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৭ এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ৬৬ হাজার ১৯ জন। এ আসনে বর্তমান সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান আহম্মেদের প্রার্থিতা অনেকটাই নিশ্চিত। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক এমপি সালেহ উদ্দিন আহম্মেদ হেলালের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দিকে জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় নেতা রোকন উদ্দিন বাবুলের প্রার্থিতাও অনেকটা নিশ্চিত। লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) লালমনিরহাট ১৬ ভোটার সংখ্যা মোট তিন লাখ দুই হাজার ৭০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩ এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ৫১ হাজার ৯৩৯ জন। এ আসনে বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন এবং পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবুলের নাম শোনা যাচ্ছে। এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা শাহীন আকন্দ, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি জয়নুল আবেদীনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জেলার রাজনীতি নিয়ে মাঠপর্যায়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা সহিংসতা ও সঙ্ঘাত নয়, চায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা।

No comments

Powered by Blogger.