আগুনে পুড়ছে দার্জিলিং পাহাড়, পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংয়ের বাড়ি ও পার্টি অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় বৃহস্পতিবার ব্যাপক তল্লাশির পর থেকে দার্জিলিং পাহাড় এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। মোর্চার ডাকা অনির্দিষ্টকালের বন্ধের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে থেকে দার্জিলিং সদরের বাইরে বেশ কয়েকটি জায়গায় মোর্চা সমর্থকদের আগুনে পুড়ছে রেল স্টেশন, পঞ্চায়েত অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, গতকাল রাতেই কালিম্পং ও মিরিকের দু’টি পঞ্চায়েত অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় মোর্চা সমর্থকরা। অফিসগুলো ওই সময় বন্ধই ছিল। একই ভাবে, রিম্মিকে লোধামায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং তারখোলার ফরেস্ট অফিসের একটি কোয়ার্টারে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তবে দার্জিলিংয়ে শুক্রবার সকাল থেকে কোনো অশান্তির খবর না পাওয়া গেলেও চলছে সর্বাত্মক বন্ধ। দাকানপাট বন্ধ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের রাস্তায় রাস্তায় চলছে পুলিশি টহলদারি। শহর পুলিশের নিারাপত্তার ঘোরাটোপে থাকার কারণে এবার শহরের  বাইরের অঞ্চলগুলিকে হামলার জন্য বেছে নিয়েছে মোর্চা সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার গুরুংয়ের পাতলেবাসের বাড়ি ও সংলগ্ন পার্টি অফিসসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি অভিযানকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে মোর্চা সমর্থকদের সঙ্গে। পুলিশকে লক্ষ্যে করে ইটবৃষ্টি, পেট্রোলবোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। মোর্চা সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, লাঠিচার্জও প্রয়োগ করে।
দার্জিলিংয়ের অশান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের আরজি মেনে কেন্দ্রীয সরকার অতিরিক্ত ৪ কোম্পানি আধাসামারিক বাহিনী পাঠাচ্ছে দার্জিলিংয়ে। এর আগেই ১০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে।  প্রশাসনের অভিযোগ, শুক্রবার ভোররাতে তারাখোলা বনবাংলোয় আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।  যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে মোর্চা পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই।
পাহাড়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়  আরও ৯ পুলিশ কর্তাকে দার্জিলিং পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে থাকছেন ৬ জন আইপিএস অফিসার। বাকি তিনজন ডব্লুুবিসিএস অফিসার। এর আগে তিনজন আইপিএস অফিসারকে বিশেষ  দায়িত্ব দিয়ে দার্জিলিংয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে,  ভারত সরকারের ১৯শে জুনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে রাজ্য সরকার।  যদিও মোর্চার তরফে দাবি করা হয়েছে, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হলে তারা বন্ধ তুলে নিতে রাজি। অজ্ঞাতবাস থেকে বিমল গুরুং অভিযোগ করেছেন, সমতলে কংগ্রেস, সিপিএম’র সঙ্গে যা হয়েছে, পাহাড়েও সেই পথ অবলম্বন করে সব ক্ষমতা দখল করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাহাড়ের সব মানুষকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন মোর্চা নেতা। জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা বলেছেন, মোর্চার এই আন্দোলন এখন আর শুধু মোর্চার নয়। এটি পাহাড়ের গণ আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। আগেই জিএনএলএফ পরিষ্কার করে দিয়েছিল, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে তারা মোর্চার পাশেই আছে। অন্যদিকে  মোচার্র সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বৃহস্পতিবার রাতে নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুধু মাত্র গোর্খাল্যানড নিয়ে তারা আলোচনায় বসতে রাজি। 

No comments

Powered by Blogger.