হার্ট অ্যাটাকের পর যা করবেন এবং যা করবেন না

হার্ট অ্যাটাক তখনই হয় যখন হার্টে রক্ত চলাচল সঠিক ভাবে হতে পারে না এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে হার্টের পেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিবছর শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাকে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করে থাকেন। তবে এর পেছনে দায়ী থাকে শুধুই অসাবধানতা, অসতর্কতা এবং নানা শারীরিক জটিলতা। তবে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরেও অনেক মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের পর অনেক নিয়ম কানুন কঠোর ভাবে মেনে চললেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব। তাই হার্ট অ্যাটাকের পর কি কি করা উচিত এবং কোন কাজগুলো একেবারেই করা উচিত নয় তা জেনে রাখা জরুরী সকলের জন্য। আপনার সাবধানতায়ই বাঁচতে পারে একটি জীবন।
হার্ট অ্যাটাকের পর অবশ্যই করণীয়
১) হার্ট অ্যাটাকের পর শারীরিক অন্যান্য জটিলতা না দেখা দিলে রোগী বিছানায় উঠা বসা বা সময়ের সাথে সাথে অল্প হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। হার্ট অ্যাটাক হলেই যে বাকি জীবন শুয়ে কাটিয়ে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং সঠিক পরামর্শে সামান্য হাঁটা চলা রোগীর জন্য ভালো। তবে অবশ্যই আগের চাইতে বেশি বিশ্রাম নিতে হবে রোগীকে।
২) হার্ট অ্যাটাকের পরপর প্রথম দিকে তরল খাবার, এরপর নরম খাবার এবং পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো সম্ভব। এতে কোনো জটিলতার সৃষ্টি হবে না।
৩) পুরো রুটিন তৈরি করে খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম ও ঔষধের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই রুটিনের বাইরে যাওয়া যাবেন না হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী ৪-৬ সপ্তাহ সময় পর্যন্ত।
৪) খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার এবং ফলমূল বেশি পরিমাণে খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। বিশেষ করে শাক সবজির তালিকা বড় করতে হবে প্রতিদিনের খাবারে।
৫) হাসপাতাল থেকে ফেরার প্রথম দিকে ঘরেই হালকা হাঁটাহাঁটি ও অল্প ব্যায়াম শুরু করা উচিত। এরপর সময়ের সাথে সাথে বাড়ির বাইরে হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করা উচিত। এবং প্রথম দিকে ৫-১০ মিনিট পরে প্রতি সপ্তাহে ৫-১০ মিনিট করে হাঁটাচলা ও ব্যায়ামের সময় বাড়ানো উচিত। তবে ব্যায়ামের ফলে যদি বুকে ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৬) শারীরিক অবস্থা ও মানসিক অবস্থা দুটোই ঠিক থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ৬ সপ্তাহ পর থেকেই স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে পারেন। তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, রোগীকে আগের মতো কাজের চাপ নিতে দেয়া চলবে না এবং বিশ্রামের ব্যাপারে অবহেলা করা চলবে না।
হার্ট অ্যাটাকের পর এড়িয়ে চলুন
১) অনেকেই শরীর কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর থেকেই নিজের ঔষধ কমিয়ে ফেলেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই। এই কাজটি ভুলেও করতে যাবেন না। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে নিজেকেই ঠেলে দেবেন।
২) খাবারের দিকে কড়া নজর রাখুন। ফ্যাট, তেল-চর্বি, ক্যালরি ও কোলেস্টরল সমৃদ্ধ খাবার একেবারেই খাবেন না। এবং গরুর মাংসকে একেবারেই না বলুন।
৩) ভারী কাজ ও ভারী ব্যায়াম করবেন না। এতে আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে।
৪) অতিরক্ত কাজের চাপ নেবেন না, মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। ‘আমি সুস্থ হবো তো’, এই ধরণের চিন্তা করে বিষণ্ণ থাকবেন না। এতে ক্ষতি আপনিই ডেকে আনবেন।
৫) শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেই ডাক্তারের পরামর্শ মানতে হবে না এবং রুটিন না মেনে চলার ভুল কাজটি করবেন না একেবারেই। আপনার সর্তকতাতেই সুস্থ থাকতে পারবেন আপনি।

No comments

Powered by Blogger.