ফেরত যাচ্ছে জাপানের ঋণ- তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) দেওয়া ২০০ কোটি টাকার ঋণ যদি আমরা ব্যবহার করতে পারতাম, তাহলে দেশের ভেতর ও বিদেশের সঙ্গে টেলিযোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত হতো। কিন্তু নানা ছলছুতায় বারবার দরপত্র আহ্বানের ফেরে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে জাইকা নিজেই নিরবচ্ছিন্ন অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ঋণ প্রত্যাহার করে নেয়। এটা দেশের জন্য সত্যিই বিব্রতকর। এতে বিশ্বের উন্নয়ন সহযোগী অন্য দেশ ও সংস্থাগুলো একটি নেতিবাচক সংকেত পাবে।
জাপান বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। অনেক বড় বড় প্রকল্প তাদের সহযোগিতায় আমরা সম্পন্ন করেছি। আলোচ্য প্রকল্পে জাইকা মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছিল, যা ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য। সাধারণত এত সহজ শর্তে বড় ঋণ পাওয়া যায় না। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে যে উদার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এসেছিল, এ ক্ষেত্রে আমরা তার যথাযথ মূল্য দিতে পারলাম না। এটা খুবই পরিতাপের বিষয়।
কেন পারলাম না? কারণ, চার বছর আগে প্রাক্যোগ্যতার দরপত্র হওয়ার পর থেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অজুহাতে একের পর এক দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিষয়টি হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠানকে প্রাক্যোগ্য করে দরপত্র আহ্বানের কথা বলা হয়। এর পরেও কিন্তু বিষয়টির মীমাংসা করা গেল না। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে গেল। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতা নির্দিষ্ট সেই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে জাইকার অনাপত্তি সত্ত্বেও বিটিসিএল পুনঃ দরপত্র আহ্বান ও ঋণচুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই দীর্ঘসূত্রতা জাইকা মেনে না নিয়ে ঋণের টাকা ফিরিয়ে নেয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজন ছিল। কেন সেটা বাতিল হলো সে বিষয়ে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না হলে ভবিষ্যতে আরও বিপর্যয় আসতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.