খালেদা-তারানকো ফোনালাপ

রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে পর্দার অন্তরালে আন্তর্জাতিক মহলের নানামুখী প্রচেষ্টার মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কথা বলেছেন জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এই আলাপে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে তারা কথা বলেছেন। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণ সম্ভব বলে তারানকোকে জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
জানা গেছে, আমেরিকায় অবস্থানরত দলের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য সম্প্রতি তারানকোর সাথে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক চলাকালেই মোবাইলে তারানকো খালেদা জিয়ার সাথে কথা বলেন।
তারানকো বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আগে থেকেই অবহিত রয়েছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে বড় দুই দলের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছিলেন তিনি। নানামুখী প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তখন তার সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। ২০ দলীয় জোটের বর্জনের মধ্য দিয়ে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচি পালনে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে তারানকোকে দায়িত্ব দিয়েছেন। জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, তারা সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগী। ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেসাই বিসওয়ালের সাথে বৈঠক করেছেন তারানকো। সেখানে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একাধিকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘ।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব:) মাহবুবুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেছেন, ‘জাতিসঙ্ঘ শান্তির জন্য কাজ করে। এর আগে তারানকো বাংলাদেশে এসেছিলেন। এবারো সঙ্কটকালে তাকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। সে দিক থেকে চিন্তা করলে কথা হতে পারে। তবে আমি বিষয়টি জানি না।’
শিগগিরই পরিস্থিতি পাল্টে যাবেÑ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপির নেতারা বলেছেন, সঙ্কট নিরসনে অন্তরালে নানামুখী উদ্যোগ চলছে। কূটনৈতিক তৎপরতাও আশাব্যঞ্জক। উদ্যোগী হয়েছে জাতিসঙ্ঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থানও দেশের জনগণের পক্ষে। সরকার এখন পর্যন্ত ‘একরোখাভাবে’ হাঁটলেও খুব কম সময়ের মধ্যে বাধ্য হবে জনগণের দাবি মেনে নিতে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠক করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, ওই বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জানতে চান বর্তমান সমস্যা সমাধান কিভাবে দেখছে বিএনপি। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তার পর নতুন জাতীয় নির্বাচন বর্তমান সঙ্কটের সমাধান করতে পারে। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় তিনি দেখছেন না।

No comments

Powered by Blogger.