দা দিয়ে কুপিয়ে খুন বালাগঞ্জের নিখোঁজ ইমাম ও গাড়িচালক- ৬ দিন পর লাশ উদ্ধার by ওয়েছ খছরু ও মাছুম চৌধুরী

‘খালু মাওলানা আব্দুস শুকুরকে মোবাইল ফোনে ডেকে আনি। তাকে এনে বাড়ির বড় ঘরে বসাই। এ সময় চালক আরশকে চলে যেতে বারবার তাগিদ দেই। কিন্তু চালক যায়নি। পরে খালু শুকুরকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করার পর চালক আরশকে খুন করি। আর খুনের পর তাদের দু’জনের লাশ বাথরুমে পুঁতে রাখি।’ সিলেটের বালাগঞ্জে নিখোঁজ মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল হামিদ শুকুর ও গাড়িচালক আরশ আলীকে খুনের বর্ণনা এভাবেই দেয় ঘাতক মারজানুল আলম শিমুল। মাওলানা শুকুর ও গাড়িচালক আরশ গত শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার ৬ দিন পর গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় বালাগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের দুই জনের লাশ উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে খুনের ঘটনার পুরো রহস্য উদঘাটন করেছে। বালাগঞ্জ পূর্ববাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল হামিদ শুকুর ও গাড়িচালক আরশ আলীকে শনিবার রাতে খুন করা হয়। এরপর বাথরুমের মধ্যে ইটের দেয়াল তুলে তাদের লাশ পুঁতে রাখা হয়েছিল। এদিকে, গতকাল দু’জনের লাশ উদ্ধার নিয়ে দিনভর উত্তেজনা চলেছে সিলেটের বালাগঞ্জের ইলাশপুরে। লাশ উদ্ধারের খবরে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাস্থল প্রবাসী ফিরোজ মিয়ার ওই বাড়িতে দফায়-দফায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। শনিবার মধ্যরাতে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের পূর্ব বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুস হামিদ শুকুর গাড়িচালক আরশ আলীকে নিয়ে বালাগঞ্জ সদর থেকে তাজপুরে আসছিলেন। পথিমধ্যে তারা হঠাৎ গুম হয়ে যান। তবে পার্শ্ববর্তী লামাপাড়া এলাকা থেকে সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হলেও তাদের দু’জনকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় বালাগঞ্জে বিক্ষোভ হয়েছে। প্রশাসনকে দেয়া হয় আলটিমেটামও। এই অবস্থায় বালাগঞ্জ থানা পুলিশ গুম হওয়া দু’জনকে উদ্ধার করতে তদন্তে নামে। তদন্তের এক পর্যায়ে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ মাওলানা আব্দুস শুকুরের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে অনুসন্ধান চালায়। পুলিশ উপজেলা সদরের গাড়িচালকদের কাছে জানতে চায় মাওলানা শুকুর কোথায় বেশি যাতায়াত করতেন। এ সময় চালকরা জানান, মাওলানা আব্দুস শুকুর প্রায় সময় তার শ্যালিকা আফিয়ার ইলাশপুরের বাড়িতে যেতেন। চালকদের কথামতো বালাগঞ্জ থানার এসআই অরূপ কুমার চৌধুরী পুলিশ দল নিয়ে সকাল ১০টায় ইলাশপুর গ্রামে আসেন। ইলাশপুর গ্রামে বিয়ে হয়েছে মাওলানা শুকুরের শ্যালিকা আফিয়া বেগমের। আফিয়া বেগমের স্বামী ফিরোজ মিয়া মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে বসবাস করছেন। প্রতি দুই বছর পরপর তিনি বাড়ি আসেন। ফিরোজ মিয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে মারজানুল আলম শিমুল (২২), মেয়ে শিরিন বেগম (১৯) ও ছোট ছেলে শাকিল (১২)। দারোগা অরূপ বাড়িতে এসে প্রথমে শিমুলের খোঁজ করেন। তিনি শিমুলকে ডেকে এনে জানতে চান তার খালু মাওলানা শুকুর ও গাড়িচালক আরশের কোন খবর জানেন কিনা। জবাবে শিমুল জানায়, সে কিছুই জানে না। সবার মতো সে-ও তাদের খুঁজছে। এ সময় দারোগা দেখতে পান শিমুলের হাতে ব্যান্ডেজ। জানতে চান, হাতে ব্যান্ডেজ কেন। শিমুল জানায়, কাজ করতে গিয়ে গতকাল কেটেছে। এরপর শিমুলের বোন শিরিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দারোগা। জিজ্ঞাসাবাদে শিরিন জানায়, তার ভাইয়ের হাত কেটেছে পরশু দিন। তাদের দু’জনের বক্তব্যে ব্যাপক গরমিল লক্ষ্য করা যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এক পর্যায়ে তার বাড়ির বিভিন্ন দৃশ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ হলে শিমুল, মা আফিয়া বেগম ও বোন শিরিনকে এক কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিমুল ঘটনা স্বীকার করে। মাওলানা শুকুর ও গাড়িচালক আরশকে খুনের ঘটনা সে স্বীকার করে। আর এ খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান পুলিশের বড়কর্তারা। দারোগা অরূপ চৌধুরী জানান, দুপুরের দিকে শিমুল ঘটনার স্বীকার করে। এরপর থেকে লাশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশ মা ও তিন সন্তানকে এক কক্ষে বন্দি করে রাখে। খুনের বিষয়টি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছেও স্বীকার করেন মা ও দুই সন্তান। শিমুল জানায়, ‘প্রথমে খালুকে খুন করি। এরপর চালককে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেই। খুনের ঘটনার সময় বেশ ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় হাতও কেটে যায়।’ লাশ পুঁতে রাখার ব্যাপারে শিমুল সাংবাদিকদের জানায়, সে একাই লাশ বাথরুমে পুঁতে রাখে। লাশ পুঁতে ৬ ইঞ্চি ইট দিয়ে বিশেষ কায়দায় দেয়াল তৈরি করে ফেলে। কি কারণে খুন করা হয়েছে- এ প্রশ্নের জবাবে শিমুল জানায়, তার মা আফিয়া বেগম ও বোন শিরিনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়েছিলেন ইমাম শুকুর। তিনি প্রায়ই তার বাড়িতে আসেন এবং মা ও বোনের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেন। এ সব দৃশ্য সহ্য করতে  না পেরে সে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানায়। শিমুলের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন আফিয়া বেগম। তিনি সাংবাদিকদের জানান, মাওলানা শুকুরের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের সম্পর্ক চলছে। মাওলানা শুকুর প্রায় রাতে তার বাড়িতে চলে আসতেন। এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা অবস্থান করে চলে যেতেন। তিনি জানান, পরবর্তীকালে মাওলানা শুকুর তার মেয়ে শিরিনের সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাদের দু’জনের সঙ্গে অনৈতিকভাবে তিনি মিলিত হতেন। তবে, ঘটনার ব্যাপারে মুখ খোলেনি শিরিন। সে এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে। আফিয়া বেগম ও তার ছেলে শিমুলের দেয়া বক্তব্য মেনে নিতে নারাজ এলাকার মানুষ। তারা বলেন, মাওলানা শুকুর শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। কখনও এই মানুষটি কাউকে গালি দেননি, সেখানে অনৈতিক সম্পর্কের প্রশ্নই ওঠে না। তারা বলেন, ঘটনাটিকে হালকা করতে এই কাহিনী সাজানো হয়েছে। তারা জানান, মাওলানা আব্দুস শুকুর ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তার একাউন্টে অর্ধ কোটি টাকা রয়েছে। এই টাকা আত্মসাৎ করতে তাকে খুন করা হয়েছে। আর খুনের বিষয়টি জানতেন তাদের আত্মীয়স্বজনরা। গ্রামের লোকজন জানান, মাওলানা শুকুরের সঙ্গে ঘাতক শিমুলের সম্পর্ক ভাল ছিল। এক সময় শিমুলও মাওলানা আব্দুস শুকুরের সঙ্গে চলাফেরা করতো। পুলিশ জানায়, ঘটনার জানাজানি হওয়ার পর সেখানে কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হওয়ায় উদ্ধার কাজ চালাতে তাদের বেগ পেতে হয়। সর্বশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ পাওয়ার পর বিকাল ৩টার দিকে তারা উদ্ধার করে শ্রমিক নিয়োগ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ লাশ দু’টি উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসে। এ সময় মাওলানা শুকুর ও গাড়িচালক আরশের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সন্ধ্যায় পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে। আটকৃতরা প্রবাসী ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী আফিয়া বেগম, ছেলে মারজানুল আলম শিমুল, মেয়ে শিরিন, ভাই শাকিল। সিলেটের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশ তদন্তে ছিল। তিনি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। এদিকে, দিনভর উত্তেজিত থাকা স্থানীয় জনগনকে শান্ত করেন এডিশনাল এসপি রওসুনুজ্জামান, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া, ইউনিয়ন চেয়ারম্যন আব্দুন নূর। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় লোকজনের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হয়। এ কারণে বিকালের পর তারা কোন ভাঙচুর চালাননি। উপজেলা চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া জানিয়েছেন, মানুষ এই জোড়া খুনের সঠিক বিচার চায়। এ ঘটনার স্থানীয়রা কিছুটা বিক্ষোভ দেখালেও পরে তারা শান্ত হয়েছে। শোকে স্তব্ধ বালাগঞ্জ: শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে বালাগঞ্জ। গোটা উপজেলায় নেমে এসেছে পিনপতন নীরবতা। মাওলানা আবদুস হামিদ শুকুরকে বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের সব মানুষ এক নামেই চিনেন। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে তিনি বালাগঞ্জ পূর্ববাজার মসজিদে ইমামতি করছেন। তার বাড়ি বোয়ালজুর ইউনিয়নের খারমপুর গ্রামে। তিনি তিন সন্তানের জনক। আর সিএনজি চালক আরশ আলীও বালাগঞ্জ সদরের পরিচিত গাড়িচালক। অমায়িক আচরণের কারণে সে সবার কাছে পরিচিত ছিল। আরশ আলীর বাড়ি বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী খাসিপুর গ্রামে। মারা যাওয়ার খবর শোনার পর মাওলানা শুকুরের বৃদ্ধা মা সালেহা খাতুন বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। ছেলের জন্য অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি। গোটা বাড়িতেই চলছে কান্নার রোল। সালেহা খাতুন জানিয়েছেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বোনের বাড়িতে স্বামী মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক মাওলানা আবদুল শুকুরের স্ত্রী সুফিয়া বেগম। সন্তানদের নিয়ে তিনিও বিলাপ করছিলেন। সিএনজি অটোরিকশা চালক আরশ আলী ছিল সবার কাছে পরিচিত ব্যক্তি। বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের কারও সঙ্গে তার বিরোধ ছিল না। খাসিপুর গ্রামের তার বাড়ি। নদীর তীরে ছোট্ট টিনের চালা ঘরে বাস করতেন আরশ আলী। এনজিও সংস্থা থেকে লোন নিয়ে তিনি গাড়ি কিনেছিলেন। ৬ দিন ধরে নিখোঁজ থাকায় তার বাড়িতেও চলছে কান্নার রোল। গতকাল মৃত্যুর খবর পৌঁছা মাত্র গোটা গ্রামে কান্নার রোল পড়েছে। দুই সন্তানকে বুকে আঁকড়ে ধরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন স্ত্রী রায়না বেগম। স্বামীর শোকে পাথর হয়ে গেছেন। মা সুরজান বিবির আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছিল খাসিপুরের পরিবেশ। তিনি বারবার বলছিলেন, আমার ছেলেকে মারলো কেন? তার তো কোন দোষ ছিল না।
ইলাশপুরে শোকার্ত মানুষের ঢল: ইমাম শুকুর ও গাড়িচালক আরশের লাশ উদ্ধারের খবরে দুপুর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে ইলাশপুরে। তাজপুর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশেই ইলাশপুর গ্রাম। মূল রাস্তা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে ঘটনাস্থল। দুপুরে মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে শোকার্ত ও ক্ষুব্ধ মানুষের ঢল নামে। এ সময় সেখানে গিয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় সেখানে থাকা বালাগঞ্জ থানা পুলিশ দল পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়। পরে সিলেটের পুলিশ সুপার নুর আলম মিনার নির্দেশে সেখানে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে, বিকাল চারটার পর ইলাশপুর গ্রামে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালানো হয় বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। এই সময়ের মধ্যে বাড়ির চারটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
৬ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস সময়: সকালের দিকে বালাগঞ্জ থানার এসআই অরূপ চৌধুরী নিশ্চিত হয়ে যান ইমাম চালকের লাশ প্রবাসী ফিরোজ মিয়ার বাড়িতেই আছে। এ সময় তিনি সঙ্গে থাকা পুলিশ দল দিয়ে বাড়ির সবাইকে একঘরে নিয়ে আটকে রাখেন। বিষয়টি জানান, বালাগঞ্জ থানার ওসি অখিলকে। খবর পেয়ে ওসিও সেখানে ছুটে যান। একই সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া, ইউএনও আশরাফুজ্জামানও ঘটনাস্থলে যান। খবর দেয়া হয় সিলেটের পুলিশ সুপারকে। পুলিশ সুপারের নির্দেশের এডিশনাল এসপি রওসুনুজ্জামান ও সহকারী পুলিশ সুপার গোপাল চন্দ্র সেখানে যান। তার আগেই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনা পাওয়ার পর বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় লাশ উদ্ধার পর্ব। কিন্তু বিশেষ কায়দায় লাশ গুম করার কারণে উদ্ধারে কিছুটা বিলম্ব হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। লাশ দু’টি উদ্ধার করতে ৬ জন শ্রমিককে কাজে লাগাতে হয়।
যেভাবে পুঁতে রাখা হয় দুটি লাশ: প্রবাসী ফিরোজ মিয়ার বাড়িতে মোট ৬টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে বাড়ির মূল ঘরের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে একটি বাথরুম। এই বাথরুমের আস্তরণপর্ব এখন শেষ হয়নি। বাথরুমের ভেতরে এক পাশে রয়েছে কমোড। অন্যপাশে রয়েছে গোসলের জন্য বেশ কিছু খালি জায়গা। ইমাম শুকুর ও গাড়ি চালক আরশকে হত্যার পর দু’টি লাশ বাথরুমে রাখা হয়। পরে বিশেষ কায়দায় ইট দিয়ে লাশ দু’টি ঢেকে দেয়া হয়। দেখলে মনে হয় বাথরুমের মধ্যে মাজার বসানো হয়েছে। ওপরের অংশটা মাজারের মতো উঁচু করা রয়েছে। বিকাল ৩টা থেকে নির্মাণ করা অংশ ভাঙতে ৬ জন শ্রমিকের প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, ভাঙা শুরু হওয়ার পর থেকেই বাথরুম থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু হয়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দু’টি লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ। ৬ দিনের পুরনো লাশ হওয়ায় অনেক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যায় গোটা এলাকায়।

No comments

Powered by Blogger.