আরও মার্কিন সামরিক উপদেষ্টা চায় ইরাক

সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের জন্য বিমান থেকে ফেলা মার্কিন অস্ত্রের কিছু
অংশ ইসলামিক স্টেট বাহিনীর হাতে পড়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে।
আমাক নিউজ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত মঙ্গলবার
পোস্ট করা ভিডিও থেকে নেওয়া এই ছবিতে সম্ভাব্য একটি
অস্ত্রের বান্ডিলের পাশে অস্ত্র হাতে এক জঙ্গিকে দেখা যায়।
ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই করতে আরও মার্কিন ‘সামরিক উপদেষ্টা’ চেয়েছে বাগদাদ। ওয়াশিংটন বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইরত কুর্দি যোদ্ধাদের সহায়তার জন্য বিমান থেকে ফেলা মার্কিন অস্ত্র তাদের হাতে পড়েছে বলে দাবি করেছে জঙ্গি সংগঠনটি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আল-জাজিরা, বিবিসি ও এএফপির। মার্কিন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার জানান, ইরাকি বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আরও সামরিক উপদেষ্টা চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে বাগদাদে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ইরাকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ অনুরোধ জানানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অল্প কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন। ইরাক ঠিক কতজন সামরিক উপদেষ্টার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। ইরাকে এই মুহূর্তে সামরিক উপদেষ্টা ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক হাজার ৪০০ জন সদস্য আছেন। ইরাক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্থলসেনা চায়নি। মার্কিন কর্মকর্তারাও বারবার বলছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরাকে যুদ্ধ করতে স্থলসেনা পাঠাবেন না। যে সামরিক উপদেষ্টাদের পাঠানো হয়েছে, তাঁরা কেবল ইরাকি বাহিনীকে সীমিত আকারে সহায়তা ও পরামর্শ দেবেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইরাকে আইএসবিরোধী অভিযান কয়েক মাস ধরে চালানোর প্রয়োজন হতে পারে। ইতিমধ্যে আইএসের দখলে যাওয়া মসুল শহর ও আনবার প্রদেশের অনেক এলাকা উদ্ধার করতে বেশ সময় লেগে যেতে পারে।
ইরাকি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি: ইরাকের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালেদ আল-ওবায়েদি গত মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অনেক এলাকা আইএসের কাছে হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঘটনায় সামরিক বাহিনীর ব্যর্থতার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। ইরাকি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন বা ভুল করেছেন, তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। আমরা গভীরভাবে ও আন্তরিকতার সঙ্গে সামরিক ব্যর্থতার বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’
খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র: তুরস্কের সীমান্তসংলগ্ন সিরীয় শহর কোবানিতে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইরত কুর্দিদের জন্য গত সোমবার বিমান থেকে ২৭ বান্ডিল অস্ত্র ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইন্টারনেটে ছাড়া একটি ভিডিওচিত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই অস্ত্র আইএসের হাতে পড়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠীটির সমর্থক একটি সংগঠন ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মার্কিন সামরিক বাহিনী সোমবার বিমান থেকে ওই অস্ত্র ফেলার বিষয়টি প্রকাশ করে। পরে এক বিবৃতিতে জানায়, এক বান্ডিল অস্ত্র লক্ষ্যস্থানে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় সেগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। শত্রুদের হাতে পড়তে পারে, এ আশঙ্কা করেই ওই অস্ত্রগুলো ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। পেন্টাগনের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল জন কারবি বলেন, ভিডিওচিত্রটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

No comments

Powered by Blogger.