রোহিঙ্গাদের‘দুই সন্তান’ নীতি বাতিলের আহ্বানযুক্তরাষ্ট্রের

রোহিঙ্গা মুসলমানদের সর্বোচ্চ দুই সন্তান গ্রহণের নীতি অবিলম্বে পরিহার করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নীতির সমালোচনা করে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি একে মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করার পর যুক্তরাষ্ট্র এ আহ্বান জানাল। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের কর্তৃপক্ষ মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সর্বোচ্চ দুই সন্তান নীতি আরোপ করেছে। এ নীতি অনুযায়ী তাঁরা দুটি সন্তানের বেশি সন্তান নিতে পারবেন না। বৌদ্ধদের সঙ্গে দফায় দফায় ভয়াবহ সহিংসতার পর উত্তেজনা কমাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইয়েন সাকি বলেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের সর্বোচ্চ দুটি সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, এতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ সাকি জোরালো দাবি জানিয়ে বলেন, ‘জন্ম নিয়ে বৈষম্যমূলক ও বাধ্যতামূলক যেকোনো ধরনের নীতির বিরোধিতা করবে ওয়াশিংটন।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে আমরা মিয়ানমার সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের চাপ দিয়েছি। কোনো বিলম্ব ছাড়াই এ ধরনের সব নীতি প্রত্যাহার করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ গত সপ্তাহে অং সান সু চি বলেন, ‘এটি মানবাধিকারের পরিপন্থী। এ রকম বৈষম্য থাকা ভালো নয়। তা ছাড়া এটি মানবাধিকারের সঙ্গে যায় না।’ দুই সন্তান নীতি ছাড়াও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাখাইনের দুই এলাকা বুথিডাউং ও মাউনডাউয়ে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ দুটি শহরের ৯৫ শতাংশ বাসিন্দাই মুসলিম। সরকারি এক কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এসব পদক্ষেপ কার্যকর হয় বলে জানান রাখাইন রাজ্যের মুখপাত্র উইন মিয়াং। তিনি জানান, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা প্রশমন এবং সংখ্যালঘু মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এ কমিশনকে। সহিংসতা এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা দ্বিগুণ করারও পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। উইন মিয়াং বলেন, রাখাইনদের চেয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১০ গুণ বেশি। অতিরিক্ত জনসংখ্যাই অস্থিরতার কারণ। রাখাইন কর্তৃপক্ষের এ জনসংখ্যানীতিকে ‘জঘন্য অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.