লন্ডনে লিবীয় দূতাবাসের সব কর্মীকে বহিষ্কার

লন্ডনে লিবীয় দূতাবাসের সব কর্মীকে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদকে (এনটিসি) বৈধ সরকার বলে স্বীকৃতি দিয়েছে তারা। লন্ডনে দূত নিয়োগে এনটিসিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ এসব কথা জানান।
লন্ডনে পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ-বিষয়ক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেগ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও আমি এনটিসিকে লিবিয়ার একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে আমরা এনটিসির সঙ্গে সম্পর্ক রাখব।’ তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর লন্ডনে মুয়াম্মার গাদ্দাফির নিযুক্ত লিবীয় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সসহ সব কর্মীকে যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হেগ আরও বলেন, ‘আমরা গাদ্দাফির সরকারকে আর দেশটির কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেব না।’
গত মে মাসে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে ব্রিটিশ দূতাবাসে হামলা হয়। এরপর যুক্তরাজ্য সে দেশে নিযুক্ত লিবিয়ার দূতকে বহিষ্কার করে। এ সময় দেশটিতে নিযুক্ত লিবিয়ার সামরিক কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়।
বর্তমানে ত্রিপোলিতে ব্রিটিশ কোনো দূত নেই। তবে এনটিসির শক্ত ঘাঁটি লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিতে ব্রিটিশ সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি নিযুক্ত রয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেগ বলেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশের সরকারের সঙ্গে আমরা যেমন সম্পর্ক বজায় রাখি, এনটিসির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে না। লন্ডনে লিবীয় দূতাবাসে নতুন দূত নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমরা এনটিসিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
সংকট সমাপ্তি নিয়ে মতবিরোধ: লিবিয়ার চলমান সংকটের সমাপ্তি কীভাবে হবে—তা নিয়ে গাদ্দাফি ও বিদ্রোহীদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ দূত আবদুল ইলাহ আল খতিব এ কথা জানান। তিনি চলতি সপ্তাহে এনটিসির ঘাঁটি বেনগাজি ও গাদ্দাফির নিয়ন্ত্রণে থাকা ত্রিপোলি সফর করেন।
গত মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে আল খতিবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, সংকটের ব্যাপারে রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছার বেলায় দুই পক্ষের মধ্যে গভীর মতভেদ রয়েছে। তবে দুই পক্ষই সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্টতার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে।
প্রবাসীদের নিয়ে রাজনৈতিক দল: যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী লিবীয় নাগরিকদের নিয়ে নিউ লিবিয়া পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বেনগাজির ওজু হোটেলে এ ঘোষণা দেন রমজান বেন আমের।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পড়াশোনা করে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাস করছেন আমের। বার্তা সংস্থা এএফপিকে আমের জানান, গাদ্দাফি বলেছেন, তিনি দিনের পর দিন ধাপে ধাপে লিবিয়াকে গড়ে তুলেছেন। আসলে তিনি ধাপে ধাপে, বিশেষ করে বেনগাজিকে ধ্বংস করেছেন।
আমের দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে তাঁদের ২০ হাজার সমর্থক রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.