যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'প্রটোকল কার' : গরিবের ঘোড়ারোগ' by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু

'রিবের ঘোড়ারোগ'_কথাটা এ দেশের গ্রামবাংলায় বহুল প্রচলিত। কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে! যাঁরা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তাঁরা অহরহই বলেন, এই দরিদ্র দেশের চেহারা পাল্টাতে হলে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে, নিজেরা ত্যাগ করে হলেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে। বিরোধী শিবিরে যাঁরা থাকেন, তাঁরাও এমন কথাই বলেন। পাশাপাশি এ-ও বলেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে জনস্বার্থবিরোধী সব কিছু হটিয়ে দেবেন।
অতীতে যাঁরা ক্ষমতার বাইরে ছিলেন, তাঁরা যেমন এমন কথা বলেছেন, তেমনি আজ যাঁরা ক্ষমতার বাইরে তাঁরাও একই কথা বলছেন। স্বাধীন-সার্বভৌম প্রায় চার দশকের এই বাংলাদেশের এ বড় চেনাজানা চিত্র। এ দেশে ব্যবস্থার বদল না করে অবস্থা বদলের প্রচেষ্টা চলে। এর চেয়ে বড় স্ববিরোধিতা আর কী হতে পারে? ব্যবস্থা এ দেশের শাসকশ্রেণীর অনুকূলে রাখার প্রচেষ্টা এত জোরদার বলেই অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। উপরন্তু নিত্যনতুন এত বিচিত্র ব্যবস্থার জন্ম দেওয়ার মহড়া চলে, যে ব্যবস্থা সিংহভাগ দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের ভাগ্যবদলের সংগ্রামকে রীতিমতো ব্যঙ্গ-উপহাস করে। এমনই এক নতুন ব্যবস্থার জন্ম দিতে চলেছে সরকার। ২৩ নভেম্বর কালের কণ্ঠের শীর্ষ প্রতিবেদনে সে চিত্রই ফুটে উঠেছে।
এবার 'প্রটোকল কার'_শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি ভিআইপিদের প্রটোকল দেওয়ার নামে প্রতি জেলায় একটি করে 'প্রটোকল কার' কেনা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম প্রটোকলের জন্য পৃথক গাড়ি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলো। বিলাসবহুল এসব গাড়ি কেনার জন্য সরকারের খরচ হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা, যা দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশের জনগণের কষ্টার্জিত টাকা। এখানেই শেষ নয়। সরকারের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত কর্মকর্তাদের জন্য আরো ৭৬টি গাড়ি কেনার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। সব মিলিয়ে এই 'বিলাসী' প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় শত কোটি টাকা। যে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর বড় একটা অংশ নূ্যনতম চিকিৎসাসেবা পায় না, শিক্ষাবঞ্চিত লাখ লাখ ভবিষ্যৎ কর্ণধার, সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি যেখানে এখনো উচ্চারণসর্বস্ব অঙ্গীকার আর প্রতিশ্রুতির জটাজালে বন্দি; সেখানে এই যে 'যথাযথ দায়িত্ব-কর্তব্য' পালনের অজুহাতে বিপুল অঙ্কের 'বিলাসী' প্রকল্প, এ বিষয়টিকে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়? আমরা জানি, এ প্রশ্নের জবাব অন্তহীন। গাড়ি কেনাই তো শেষ কথা নয়। এসব গাড়ির পরিচালনা ব্যয় বহনের মতো শক্তি-সামর্থ্য আমাদের কতটা আছে, সে হিসাব নিশ্চয়ই নীতিনির্ধারকদের জানা আছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, নানা বাহানা তৈরি করে এ গণতান্ত্রিক সরকারও কি রাষ্ট্রীয় অপচয়ের খাতটি স্ফীত করে চলবে?
আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সিংহভাগ কাজ সম্পন্ন হয় বিদেশি ঋণ, দান, অনুদান ইত্যাদির মাধ্যমে। দেশের মানুষের ঘাড়ে ঋণের বোঝা ক্রমেই হয়ে উঠছে অবহনযোগ্য। এ অবস্থায় আমাদের ভাগ্যনিয়ন্ত্রকদের 'বিলাসী' হয়ে ওঠার অবকাশ কোথায়? অন্তহীন সমস্যা জর্জরিত দেশটিকে কখনো কখনো শাসকরা উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছেন, তাঁদের স্ববিরোধিতা আর নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে দায়িত্বশীলদের মুখে খই ফুটেছে উন্নয়নের আর এর বিপরীতে পরিলক্ষিত হয়েছে লুটপাটের মহড়া। এর পক্ষে দৃষ্টান্ত দেওয়ার মতো ঘটনা আছে অজস্র এবং মানুষ এ থেকে পরিত্রাণ পেতেই মহাজোট সরকারকে অনেক বেশি প্রত্যাশা পোষণ করে বিপুল জনরায়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পথটি সুগম করে দেয়। কিন্তু দৃষ্টান্তযোগ্য জনরায় নিয়ে ক্ষমতাসীন এই মহাজোট সরকার জনস্বার্থের, জনমতের কিংবা জন-আকাঙ্ক্ষার যদি মূল্য না দিয়ে 'বাহানা'কে প্রশ্রয় দেয়, রাজনৈতিক চেলা-চামুণ্ডা আর অসাধু ক্ষমতাবান আমলাদের ভোগ-বিলাসিতার চিত্রটিকে আরো পুষ্ট করে, তাহলে স্বপ্নধারণকারী পরিবর্তনকামী সাধারণ মানুষের গত্যন্তরটা কী? এই যে 'বিলাসী' প্রকল্পের পেছনে সরকার এত বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় করতে যাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের কোন কল্যাণ হবে? আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, সরকারিভাবে যেকোনো কিছু ক্রয়ের উদ্যোগ-আয়োজন শুরু হওয়া মাত্র একদল স্বার্থান্বেষী নিজেদের উদরপূর্তি করতে অধিকতর সক্রিয় হয়ে ওঠে। হয়তো এই 'প্রটোকল কার' ক্রয়ের ক্ষেত্রেও এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। কোনো অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে একটা নাম লাগে, প্রকল্প বানাতে হয়, কিছু লোককে এর জন্য দায়িত্ব দিতে হয় এবং এরই সঙ্গে সঙ্গে নানা পক্ষ এসব প্রক্রিয়া থেকে লাভবান হওয়ার পাঁয়তারা করতে থাকে। আমাদের অভিজ্ঞতায় এ-ও আছে, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ক্রয়কৃত হাজার হাজার গাড়ি সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে আর ফেরত আসেনি। এমনকি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাও জানে না, এসব গাড়ি কার বা কাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে! এ বিষয়টি জাতীয় সংসদেও গড়িয়েছিল; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। প্রটোকলের গাড়িগুলোর অবস্থাও কি তা-ই হবে? বিপুল অঙ্কের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে 'নাই' হয়ে যাবে। সরকার এই টাকাটা তো অবশ্যই কোনো কার্যকর খাতে ব্যয় করতে পারত, যে কার্যকর খাতগুলো অর্থাভাবে উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে না। এসব বাদ দিয়ে হঠাৎ এ উদ্যোগ-আয়োজন কেন? এ তো 'গরিবের ঘোড়ারোগ'-এরই নামান্তর।
স্বাধীনতা অর্জনের পর আমরা প্রায় চার দশক অতিক্রম করতে চলেছি। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যেও স্বপ্নের বাংলাদেশ কেন গড়া সম্ভব হয়নি, তা সচেতন মহলের অজানা নয়। স্বপ্নের বাংলাদেশ আপাতত থাক; কিন্তু দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশ তো কারো কাম্য নয়। সরকারি ভিআইপি বা ভিভিআইপিরা নিশ্চয়ই দেশের সাধারণ মানুষের চেয়ে বড় নন। তাঁদের জন্য 'প্রটোকল কার' কিনে সরকার কোন উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে চাইছে_তাও বোধগম্য নয়। এসব গাড়ি কেনার জন্য যে যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছে, তা তো একেবারেই খোঁড়া যুক্তি। গাড়ি কেনার মতো অনুৎপাদনশীল খাতে সরকার এত বিপুল টাকা খরচ করে কেন ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে_এ-ও বড় প্রশ্ন। আগেই বলেছি, গাড়ি কেনাই শেষ কথা নয়; আছে এর জ্বালানি, চালক, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ইত্যাদিও। এখন যে 'প্রটোকল কার' নেই, তাতে কি চলছে না? অতীতেও তো 'প্রটোকল কার' ছিল না তাতে কী ক্ষতি হয়েছে? দুর্মুখেরা বলছেন, এই 'প্রটোকল কার' কেনার মাজেজাটা অন্যত্র। তাঁদের এমন মন্তব্য একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। এ সম্পর্কেও আগেই বলেছি। ইতিপূর্বে এ বছরের প্রথম দিকে কালের কণ্ঠের ভিন্ন এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, আমলাদের গাড়ি বিলাসের কারণে ৯৭ জন গাড়ি-বিলাসী আমলার অতিরিক্ত ১০১টি গাড়ির পেছনে মাসে খরচ হয় পাঁচ কোটি ৮১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান করতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। অথচ সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে, এসব গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে আমলাদের পারিবারিক কাজে! এ অভিযোগও তো আছে, অতিরিক্ত গাড়ি যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দপ্তর, প্রকল্পের গাড়ি ক্ষমতার জোর খাটিয়ে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসেন। এ ক্ষেত্রে কেউ আপত্তি করলে ফল ভালো হয় না_এমন কথাও যথেষ্ট চাউর। কাহিনী আরো আছে, যেগুলো উল্লেখ করে এ নিবন্ধের কলেবর দীর্ঘ করতে চাই না।
'গরিবের ঘোড়ারোগ'_এ যেন অনেকটাই আমাদের চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছে। তাই বলে তা রাষ্ট্রব্যবস্থারও অঙ্গ হয়ে যাবে? সরকারি ভিআইপি কিংবা ভিভিআইপিদের সফর তো নির্দিষ্ট নয়। তা ছাড়া সরকারের হাতে এত গাড়ি মজুদ আছে, যেগুলো ঠিকমতো পরিচালনা করলে ভিআইপি-ভিভিআইপিদের জন্য গাড়ি কেনার কোনোই প্রয়োজন নেই। সরকারি বিভাগে গাড়ি দেওয়া হয় কারো ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসিতার জন্য যে নয়, এটি বিলাসী আমলাদের মনে করিয়ে দেওয়াও নিষ্প্রয়োজন। যে গাড়িগুলোর এত দিন কোনোই প্রয়োজন পড়েনি, আজ হঠাৎ তা এত আবশ্যক হয়ে উঠল কেন, তা প্রধানমন্ত্রী খতিয়ে দেখলে সাধারণ মানুষ অবশ্যই খুশি হবে। অসংখ্য শিক্ষার্থী এখনো মাটিতে বসে ক্লাস করে, অনেক সরকারি হাসপাতালে ওষুধ নেই, প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই, জনস্বার্থের অনুকূলে নেই আরো অনেক কিছু, অনেক আদালত ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ ইত্যাদি সীমাহীন সমস্যা-সংকটে জর্জরিত এ দেশে প্রটোকলের জন্য গাড়ি কেনা বন্ধের যৌক্তিক সুরাহা হয়তো একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন। এসব বিষয় আমলে না নিলে দিনবদল হবে শুধু হাতেগোনা কয়েকজনের_আপামর জনগোষ্ঠীর নয়। দেশের সাধারণ মানুষ নানামুখী বঞ্চনায় তাড়িত থাকবে আর এর বিপরীতে আমলা-রাজনীতিক কিংবা অন্য ক্ষমতাবানদের মনস্তুষ্টির জন্য সরকারকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থের জোগান দিতে হবে, তা তো হতে পারে না। জনকল্যাণের অপর নামই যদি হয় রাজনীতি, তবে চলমান রাজনীতির দর্শন পাল্টাতেই হবে। দরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের লালন। মনে রাখা দরকার, অতীতে শাসকশ্রেণীর বাড়বাড়ন্তের কারণেই মানুষের অবস্থা খারাপ হয়েছিল। এমনটি আর না ঘটলেই মঙ্গল। একটা কথা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না, মানুষ কিন্তু এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, তাদের অচেতন করে রাখার সব রকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও।
=========================
রাজনৈতিক আলোচনা- 'বিদ্যমান ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন ডা. মিলন' by সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী  রাজনৈতিক আলোচনা- 'প্রয়োজন সরকার ও বিরোধী দলের সহাবস্থান' by ড. তারেক শামসুর রেহমান  আলোচনা- 'উপকূলের মাটির মানুষের কান্না' by জয়নুল আবেদীন  আগামী দিনের লক্ষ্য নির্ধারণে দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন  দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী গড়ার স্বপ্নের নতুন পথ  প্রকৃতি- বাংলাদেশের ঝুঁকি বাড়ছে কমেনি কার্বন নিঃসরণ by ইফতেখার মাহমুদ  প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস 'সামাজিক ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রেই বেশিকার্যকর'  আলোচনা- 'তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয়' by by মোহাম্মদ জমির  রাজনৈতিক আলোচনা- 'গণতন্ত্রের স্বার্থে পারস্পারিক সম্মানবোধ' by ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ  শিল্প-অর্থনীতি 'চরম দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে' by জাহাঙ্গীর শাহ  বিশেষ রচনা- মেডির মিরাকল by মাসুদ রহমান  ভ্রমণ- 'ঘুরি দেশে দেশে' by মাহফুজ রহমান  প্রকৃতি- 'বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে হাঁক, দ্বিগুণ হবে বনের বাঘ' by খসরু চৌধুরী  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'সংসদীয় গণতন্ত্র, না ভানুমতির খেল' by সোহরাব হাসান  গল্পালোচনা- 'এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু...' by মুস্তাফা জামান আব্বাসী  ফিচার গল্প- ‘ইতালির রাস্তায় পুলিশ খুঁজতাম' by বাবুল আক্তার  খবর- মৃত ভেবে মাছুমার নিথর দেহ ওরা ফেলে দেয় মহাসড়কে  অদ্ভুত ফিচার- 'বাংলার বিস্ময়ঃ আশ্চর্য কুলাগিনা' by মেহরিন জাহান  স্মরণ- 'ডা. মিলনকে যেন না ভুলি' by পলাশ আহসান  রাজনৈতিক আলোচনা- 'যার যা কাজ' by আতাউস সামাদ  নিবন্ধ- 'অবলা বলে কেন না-বলা থাকবে' by মোস্তফা হোসেইন  ইতিহাস- সিপাহি বিদ্রোহঃ সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে 


দৈনিক কালের কণ্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু
সাংবাদিক


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.