কোচিও নেই আইপিএলে

আইপিএলে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সংখ্যা আট থেকে বেড়ে ১০ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ২০১১ আইপিএলে উল্টো দলসংখ্যা কমে সাত হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) কার্যক্রম দেখে তাই মনে হচ্ছে।
রাজস্থান রয়্যালস ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে আগেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে আইপিএল থেকে। তাদের জায়গা পূরণ করতে পারত সাহারা পুনে ওয়ারিয়র্স ও কোচি। কিন্তু মালিকানা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিবাদ এখন পর্যন্ত না মেটাতে পারায় গতকাল কোচিকেও বহিষ্কারাদেশের নোটিশ দিয়েছে বিসিসিআই।
নাগপুরে গতকালকের আইপিএল পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিসিআই সভাপতি শশাঙ্ক মনোহর। অবশ্য নিজেদের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে ফেলার জন্য কোচি মালিকদের ৩০ দিন সময় দিয়েছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে ৩১তম দিন থেকে কোচি দলকে বিলুপ্ত বলে ধরে নেওয়া হবে।
আইপিএলে কোচিবিষয়ক এই বিতর্ক চলছে অনেক দিন ধরে। কিন্তু কোচির বিতর্কিত ঘটনাবলির মধ্যে এসে পড়েছে ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের নাম। কোচির অন্যতম মালিকপক্ষ সত্যজিৎ গায়কোয়াড় দাবি করেছেন, শুরু থেকেই গাভাস্কার তাঁদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য গাভাস্কার কোচি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুক্ত থেকে নৈতিকভাবে সঠিক কাজ করেছেন কি না?
অবশ্য গাভাস্কার এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, কোচি তাঁকে ক্রিকেটীয় বিষয় দেখার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বিসিসিআই কোচির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত তিনি কোচিকে হ্যাঁ-না কোনোটাই বলছেন না।
কোচিকে নিয়ে ঝামেলার শুরু আসলে এই ফ্রাঞ্চাইজিটির জন্মলগ্ন থেকেই। কোচির মালিকানা নিকটজনদের পাইয়ে দিতে নিজের প্রভাব খাটিয়েছিলেন, এমন অভিযোগ মাথায় নিয়ে কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শশী থারুরকে পর্যন্ত মন্ত্রিসভা ছাড়তে হয়েছে। লোলিত মোদিকে ভারতীয় ক্রিকেট থেকেই বিতাড়িত হতে হয়েছে। কিন্তু ঝামেলার শেষ হয়নি।
এখন সমস্যা, কোচি দলটি যারা কিনেছে, সেই কনসোর্টিয়ামের বিভিন্ন পক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে চাইছে না। আবার তারা কেউ মালিকানা ছাড়তেও রাজি নয়। কোচির ৭৫ শতাংশ মালিকানার সমান অংশীদার অ্যাংকর আর্থ, পারিনি ডেভেলপার, রোসি ব্লু ও ফিল্ম ওয়েভ। বাকি ২৫ শতাংশের মালিক গায়কোয়াড় পরিবারের রঁদেভু স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড।
গতকাল সভা শেষে শশাঙ্ক মনোহর বললেন, ‘আমরা রঁদেভু ও অন্যান্য মালিক; দুই পক্ষ থেকেই জবাব পেয়েছি। দুই পক্ষই মনে করে, তাদের মধ্যে ঝামেলা এখনো আছে।’ এই ঝামেলা না মিটলেই শেষ কোচির সম্ভাবনা।
অবশ্য এসব বিতর্কের মধ্যে না থাকলেও সুনীল গাভাস্কার বলছেন, কোচিকে আরও একটু সময় দেওয়া উচিত, ‘আমি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকলে নিজেদের মধ্যে সমস্যা মেটাতে কোচিকে আরও সময় দিতাম। কারণ এই সময়ে এত টাকা দিয়ে মালিকানা কেনার মতো অন্য লোক পাওয়া সহজ কথা হবে না।’
তার চেয়েও বড় কথা, আগামী নভেম্বরেই চতুর্থ আইপিএলের দলগুলোর খেলোয়াড় নিলামে অংশ নেওয়ার কথা। সেই নিলাম কি ৭ দলের মধ্যেই হবে, নাকি নতুন দল খুঁজে পাবে বিসিসিআই?

No comments

Powered by Blogger.