আত্মঘাতী হামলার প্রতিবাদে লাহোরে সর্বাত্মক ধর্মঘট

সুফি সাধকের মাজারে আত্মঘাতী বোমা হামলার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী ধর্মঘটে দোকানপাট ও অফিস-আদালত ছিল বন্ধ। বিক্ষুব্ধ জনতা এ হামলার প্রতিবাদে পাঞ্জাব সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে।
সুন্নি মুসলিম কাউন্সিলের ডাকে এ ধর্মঘট পালিত হয়। কাউন্সিলের নেতা রাগিব নাঈম বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ‘শাহবাজ শরিফ নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দেয়। তারা বলে, সন্ত্রাসীদের দমনে তিনি বারবার যে প্রতিজ্ঞা করেছেন, তা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন।
সুফি সাধক হজরত সৈয়দ আলী বিন উসমান হাজবেরির মাজারে গত বৃহস্পতিবার রাতে পর পর দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ৪৩ জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ১৭৫ জন।
মাজারে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এ হামলার ঘটনাকে নৃশংস অভিহিত করে বলেছেন, পাকিস্তানে জঙ্গিবাদ দমনে সব ধরনের সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে পুলিশ এ হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করলেও কাউকেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
লাহোরে দায়িত্ব পালনকারী এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, ধর্মঘটে ব্যস্ত সড়কগুলো ছিল একেবারেই ফাঁকা। গ্রীষ্মকালীন ছুটির কারণে স্কুলগুলো ছিল আগে থেকেই বন্ধ। শনি ও রোববার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় কর্মজীবীরা ঘর থেকে বের হননি। দোকানপাটও ছিল বন্ধ।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, এ হামলার দায়দায়িত্ব এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা খণ্ডিত দুটি মস্তকের পরিচয়ও পাওয়া যায়নি। তাদের পরিচয় উদ্ঘাটনে সময় লাগবে বলে তাঁরা জানান।
তবে তদন্তকারী দলের এক সদস্য বলেছেন, ‘আত্মঘাতী হামলায় নিহত একজনের লাশ আমরা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। আমাদের ধারণা, নিহত এই ব্যক্তি দুই হামলাকারীর একজন। আমরা তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছি।’
এ হামলার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা গত শুক্রবারও রাজপথে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা গাড়ির টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ হামলার জন্য উগ্রপন্থী তালেবানদের দায়ী করে তারা।

No comments

Powered by Blogger.