বেসরকারীকরণ অব্যাহত রাখতে ঢাকা চেম্বারের জোর সুপারিশ

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারীকরণে বিরতি দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংগঠনটি মনে করে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার স্বার্থে বেসরকারীকরণ জরুরি।
পাশাপাশি সংগঠনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) কার্যক্রম সফল করার জন্য একটি স্থিতিশীল পিপিপি নীতিমালা করে বেসরকারি বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। খবর ইউএনবির।
গতকাল বুধবার মতিঝিলে চেম্বার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ২০১০-১১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল কাসেম খান বলেন, ‘সরকার যদি বেসরকারীকরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমরা তা সমর্থন করব না। বরং এটা অব্যাহত রাখতে হবে। এর ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য তহবিল সংস্থান করা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, পিপিপির জন্য একটি সুসংহত নীতিমালা লাগবে। কেননা যখনই যে সরকার ক্ষমতায় আসুক, চলমান প্রকল্প যেন বন্ধ না হয় ও বেসরকারি বিনিয়োগ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নীতিমালার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে।
আর এটি নিশ্চিত করা গেলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। ফলে বিনিয়োগও বাড়বে বলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মন্তব্য করেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে যে ছয় হাজার ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই বরাদ্দ অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি ঢাকা চেম্বার দ্রুত কয়লা নীতি চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির জন্য ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে রেল খাতের প্রতি সরকারকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে রেলওয়ের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের তাগিদ দেওয়া হয়।
চেম্বারের পক্ষ থেকে দ্রুত চূড়ান্ত শিল্পনীতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আরও বলা হয়, শিল্পনীতির সঙ্গে রাজস্বনীতির সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে দেশে শিল্পায়ন হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আয়তন খুব বড় ও চ্যালেঞ্জিং বলে তিনি মনে করেন না। বরং এটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করাই বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি সরকারকে প্রকল্পে অগ্রাধিকার ঠিক করার আহ্বান জানান।
আরেক প্রশ্নের জবাবে চেম্বারের অন্যতম পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এক শতাংশ করায় রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর তাই এই হার দশমিক ২৫ শতাংশে অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
চেম্বারের আরেক পরিচালক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সারা দেশে কর কার্যালয় স্থাপন করার বদলে কর বিভাগকে কম্পিউটারায়ন ও স্বয়ংক্রিয়করণের দিকে অধিকতর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেটে ঢাকা চেম্বারের সুপারিশমতো ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.