থাইল্যান্ডে বিক্ষোভকারীরা কোণঠাসা সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ

দমনাভিযানের মুখে নিজেদের শিবিরে কোণঠাসা হওয়া সত্ত্বেও থাইল্যান্ডের লাল শার্ট বিক্ষোভকারীরা গতকাল বুধবার সরকারের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। সরকারি বাহিনী যদি তাঁদের ওপর আবার হামলা চালায়, তাহলে তাঁরা পাল্টা জবাব দেবেন। খবর এএফপির।
বিক্ষোভকারীদের অন্যতম নেতা জতুপ্রন প্রমপ্যান বলেছেন, হত্যাকারীদের সঙ্গে সমঝোতা হওয়া অসম্ভব। তিনি বলেন, সরকারের পতন না ঘটা পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
ব্যাংককের মূল বাণিজ্যিক এলাকার অদূরে বাঁশের খুঁটি, গাড়ির টায়ার ও প্লাস্টিক শিট দিয়ে তৈরি অস্থায়ী ছাপরার নিচে গতকালও তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেছেন। তবে তাঁদের খুঁটি দিয়ে ঘেরা চত্বরে ধারালো বাঁশের চটা ও ইট-পাটকেলের স্তূপ দেখা গেছে। নিরাপত্তা বাহিনী প্রয়োজনবোধে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা এসব জড়ো করায় যেকোনো সময় আবার সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
গত ১০ এপ্রিল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হলে কমপক্ষে নিরাপত্তাকর্মী ও সংবাদকর্মীসহ ২৫ জন নিহত হন। আহত হন শত শত লোক। সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা গুলি চালানোয় এবং গ্রেনেড নিক্ষেপ করায় ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তবে বিক্ষোভকারীরা সে অভিযোগ বরাবরের মতো গতকালও প্রত্যাখ্যান করেছেন। লাল শার্ট নেতা নাত্তায়ুত সাইকুয়ার বলেছেন, সরকার বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন শুরু করেছে। সাধারণ বুদ্ধি-বিবেক থাকা যেকোনো লোকই বুঝতে পারবেন এম ১৬ রাইফেলধারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাঁশের চটা নিয়ে আন্দোলনকারীরা কখনোই গায়ে পড়ে সংঘর্ষ বাধাতে যাবেন না।
বাণিজ্যিক এলাকা সিলোম রোডে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন সত্ত্বেও গত মঙ্গলবার কাঁটাতারের ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীরা সেখানে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁরা সে পরিকল্পনা বাতিল করেন।
ব্যাংককের দুটি এলাকায় বিক্ষোভকারী ও সেনাসদস্যরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের গতকালও অস্থায়ী ছাউনির নিচে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। সেখানে লাউড স্পিকারে একের পর এক নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন। আবার অনেককেই নেচে-গেয়ে আনন্দ করতে দেখা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী অভিজিৎ ভেজ্জাজিভা বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে তিনি পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচন দেবেন না।

No comments

Powered by Blogger.