প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণের অর্থ ফিরিয়ে নেবে চীন -চলতি মাসেই কাজ শুরু না করলে সমস্যা হবে

চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শুরু না করলে প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র’ প্রকল্পে অনুদান দেওয়া অর্থ ফিরিয়ে নেবে চীন।
বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে না পারলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র প্রকল্পে তারা কোনো অর্থ ব্যয় করবে না।
অর্থাত্ যে ২১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তা ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুলাই পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদে এ প্রদর্শনী কেন্দ্র স্থাপন হওয়ার কথা।
এ জন্য প্রকল্পব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এতে ২১০ কোটি টাকা অনুদান দেবে চীন। আর অবশিষ্ট ৫৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করবে সরকার।
কিন্তু ১৬ মাস পার হলেও নানা জটিলতার আবর্তে প্রদর্শনী কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শুরুই হতে পারছে না।
চীনা দূতাবাসের এ বক্তব্যে প্রকল্পটির উদ্যোগ গ্রহণকারী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চিন্তায় পড়েছে।
তবে তারা এখনো পরিকল্পনা কমিশন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছে না। এ সংস্থা দুটির ঢিলেমির কারণেই কাজ শুরু হতে পারছে না বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, কয়েকটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে এই প্রকল্পে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চীন সরকার। এগুলো হচ্ছে—সরবরাহকারী ও প্রদর্শনকারীদের তাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে পণ্যের সরাসরি তুলনা করার সুযোগ সৃষ্টি করা, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য পণ্যের মান তুলনা করার সুযোগ সৃষ্টি করা, ভোক্তাদের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে পরিচিত করা, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ উন্নত করা।
ইতিমধ্যে প্রকল্পটির নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ জন্য ৩৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
চূড়ান্ত নকশা অনুযায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রের দৈর্ঘ্য হবে ৪০০ মিটার, প্রস্থ ৭৫ মিটার, সামনের দিকের উচ্চতা ১৫ দশমিক ৯২ মিটার এবং পেছনের দিকের উচ্চতা ৮ দশমিক ৭৫ মিটার। প্রদর্শনী কেন্দ্রের সামনে ২০ মিটার খালি জায়গা থাকবে। ভৌত নির্মাণের কাজ হবে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫০ বর্গফুট।
প্রদর্শনী কেন্দ্রটি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নির্মাণ করার কথা রয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ডিপিপি অনেক আগেই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলেও কমিশন এতে অনুমোদন দিতে গড়িমসি করছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে পাওয়া যাচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তি পত্র।
তবে পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এ প্রকল্পের ওপর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় চেষ্টা করা হবে যাতে চীনের অনুদানের এ অর্থ ফেরত না যায়। অর্থাত্ কাজটি ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে শুরু করা যায় সে চেষ্টাই করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.