ফুটবলে আসছে ‘ঢাকা সিটি লিগ’

ঘরোয়া ফুটবল ঢেলে সাজাচ্ছে বাফুফে। ঢাকার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগ আর আলাদাভাবে আয়োজন না করে সবগুলোর সমন্বয়ে একটা লিগ করার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, গত দেড় বছরে বাফুফের শীর্ষ পদে থেকে তাঁর কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। ব্যাপারটাকে তিনি এভাবে ব্যাখ্যা করলেন—‘যত বেশি লিগ তত বেশি সমস্যা।’
বাফুফে সভাপতির কথা, “এতগুলো লিগ আয়োজন করা বাস্তবসম্মত হচ্ছে না। লিগগুলো বর্ষপঞ্জি মেনে করতে পারলে কথা ছিল, কিন্তু কমিটি নিয়ে নানা সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছে না। টাকা-মাঠ ইত্যাদি সমস্যাও প্রবল। তাই শুধু পাইওনিয়ার রেখে বাকি তিন লিগকে একসঙ্গে একটা নামে আয়োজন করলে ভালো ফল আসবে। নাম হতে পারে ‘ঢাকা সিটি লিগ’। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে এটাই সংগতিপূর্ণ হবে।”
বি-লিগ কমিটির মাধ্যমে পরিকল্পনাটা উপস্থাপন করা হবে বাফুফের নির্বাহী কমিটির কাছে। বি-লিগ কমিটির মতামত গুরুত্বপূর্ণই। কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ পরোক্ষে স্বাগতই জানালেন সালাউদ্দিনের পরিকল্পনাকে, ‘যেহেতু বি-লিগে দল ওঠানামা করবে এই লিগের দ্বিতীয় স্তর থেকে, এবং সেই স্তরে ঢাকার বর্তমান সিনিয়র ডিভিশন (প্রথম বিভাগ) থেকে কয়েকটি দল চলে যাবে, তাই ধারাবাহিকতা রাখার জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ মিলিয়ে একটা লিগ করা যেতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা নেবে বাফুফের নির্বাহী কমিটি।’
ঢাকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ লিগ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে, তবে বাকি আছে পাইওনিয়ার ও সিনিয়র ডিভিশন লিগ। কমলাপুর স্টেডিয়ামে সংস্কারকাজ চলতে থাকায় সিনিয়র ডিভিশন লিগ কয়েক মাস পিছিয়েও এখনো করা যায়নি। এ অবস্থায় কমলাপুর স্টেডিয়াম খেলার উপযোগী হওয়া সাপেক্ষে ঈদের পর নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে, জানালেন বাফুফে সভাপতি। তার আগে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় তা পেশ করে অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা তাঁর।
মূল সমস্যা, ঢাকা মহানগরী ফুটবল লিগ কমিটির অধীনে থাকা পাইওনিয়ার লিগ কমিটি নিয়ে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই কমিটির নেতৃত্বে যাদের আনা হয়েছে, তারা ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী বলে একটা পক্ষ মেনে নিতে পারেনি। নিজেদের পছন্দনীয় লোকদেরই তারা কমিটিতে চায়। এ নিয়ে দিন কয়েক আগে লিগ কমিটি অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। জল গড়িয়েছে অনেক দূর, এখন মহানগরী লিগ কমিটির চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন মালুর বিরুদ্ধে জোট বেঁধে তাঁকে সরানোর চেষ্টা চলছে। নেতৃত্ব নিয়ে এমন দ্বন্দ্ব লিগ কমিটিকে প্রায় অকার্যকর করে ফেলেছে। কমিটি খেলা চালাতে পারছে না।
বি-লিগ থেকে বিপিএল: বি-লিগের নাম বদলে বাংলাদেশ পেশাদার লিগ (বিপিএল) করার চিন্তাভাবনা চলছে। কারণটাও জানালেন সালাউদ্দিন, ‘দেশ-বিদেশে অনেকেই প্রশ্ন করে, বি-লিগ কি দেশের দ্বিতীয় লিগ? তাহলে প্রথম লিগ কোনটা? যেহেতু বি-লিগই দেশের এক নম্বর লিগ, তাই বিভ্রান্তি এড়াতে বাংলাদেশ পেশাদার লিগ নাম দিতে চাই। সে ক্ষেত্রে এই লিগের দ্বিতীয় স্তরের নাম হবে বি-লিগ। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঘরোয়া ফুটবলের নতুন কাঠামো দাঁড়াচ্ছে এমন—বাংলাদেশ পেশাদার লিগ, বি-লিগ, তারপর ঢাকার একমাত্র লিগ এবং সবশেষে বয়সভিত্তিক পাইওনিয়ার লিগ।

No comments

Powered by Blogger.