আসন্ন যুদ্ধের জন্য ‘তৈরি থাকতে’ ১০ দেশকে চিঠি উ. কোরিয়ার

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি রাষ্ট্রকে চিঠি দিয়ে আসন্ন পরমাণু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক করলেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমেরিকার সামরিক মহড়ার জেরে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান-এর সাধারণ সম্পাদককে এ কথা জানিয়ে চিঠি পাঠালেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং-হো। তিনি জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ১০টি আশিয়ান রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আসন্ন পরমাণু গণহত্যা সম্পর্কে সতর্ক করা হোক। সেই সঙ্গে ওই দশ সদস্য রাষ্ট্রকে আমেরিকার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। সম্প্রতি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর কোরিয়ার পাঁচটি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উত্‍‌ক্ষেপণ ঘিরে আমেরিকার হুমকির জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পিয়ংইয়ংয়ের ষষ্ঠ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সম্ভাবনা আঁচ করে কোরিয়া উপদ্বীপের উদ্দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গড়া যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি ইউএসএস কার্ল ভিনসন-সহ বিশাল নৌবহর পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। বর্তমানে তার অবস্থান ওকিনাওয়ার পূর্বে ফিলিপাইন সাগরে। ইউএস প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জানিয়েচেন, ‘মার্কিন নৌবহরের বর্তমান অবস্থান উত্তর কোরিয়ায় আঘাত হানার জন্য আদর্শ।
এখন শুধুমাত্র নির্দেশের অপেক্ষা।’ প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহে ম্যানিলায় আশিয়ান রাষ্ট্রজোটের বৈঠকে কোরিয়া উপদ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনায় বসবেন সদস্যরা। মনে করা হচ্ছে, সেই বৈঠক নিশানা করেই আসিয়ান-এর সাধারণ সম্পাদককে চিঠি পাঠিয়েছে পিয়ংইয়ং। যদিও, আসিয়ান বৈঠক সম্ভাব্য আলোচনার বিষয় সম্পর্কে চলতি সপ্তাহে যে খসড়া পাওয়া গিয়েছে, তাতে কোরিয়া উপদ্বীপ সম্পর্কে আলোচনার জায়গাটি এখনও শূন্য রয়েছে। অর্থাৎ এ সম্পর্কে কী বক্তব্য পেশ করা হবে, তা এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করা হয়নি। উল্লেখ্য, লাওস ও কম্বোডিয়ার মতো একাধিক আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়ালালামপুরে কিম জং-উনের সৎভাই কিম জং-নামের হত্যার পরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে। আসিয়ান সাধারণ সম্পাদককে লেখা চিঠিতে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, ‘সকলেই জানে, পরমাণু আঘাত হানার ব্যবস্থা করার মানে যে কোনও সময় কোরিয়া উপদ্বীপে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হতে পারে। এই ধরনের সামরিক মহড়া কোনও মতেই নিরাপত্তার জন্য হতে পারে না।’

No comments

Powered by Blogger.