কোরীয় উপদ্বীপে মার্কিন রণতরী মোতায়েন

শক্তি প্রদর্শনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি ‘স্ট্রাইক গ্রুপ’কে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে কোরীয় উপদ্বীপের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উত্তর কোরিয়ার তৎপরতায় বাড়তে থাকা উদ্বেগের জেরে এ যুদ্ধবহরকে সেখানে পাঠানো হয় বলে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান। কার্ল ভিনসন নামের ওই স্ট্রাইক গ্রুপটিতে একই নামের একটি বিমানবাহী রণতরী আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে রণতরীর এ বহরটি সিঙ্গাপুর থেকে কোরীয় উপদ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয়। খবর বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ডের মুখপাত্র ডেভ বেনহাম বলেন, ‘এ অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সামরিক হুমকি এখনও বেশ জোরালো। দেশটির বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং বিরক্তিকর পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় রণতরী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধংদেহী আচরণের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের উপস্থিতি বাড়ানো প্রয়োজন বলে অনুভব করছি।’ দিন দিন পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে উত্তর কোরিয়া। চলতি মাসের প্রথমদিকেও দেশটি তরল জ্বালানিচালিত একটি স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর তৃতীয় বহর জানিয়েছে, ওই স্ট্রাইক গ্রুপটিকে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর দিকে যেতে বলা হয়েছে।
তবে বিবৃতিতে নির্দিষ্ট গন্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী সামরিক ওই বহরটির অস্ট্রেলিয়ার একটি বন্দরে যাওয়ার কথা থাকলেও তা না করে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যাবে এটি। কার্ল ভিনসনে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, সামরিক হেলিকপ্টার, দুটি মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং একটি মিসাইল ক্রুজার রয়েছে। এ রণতরী থেকে বিমান হামলার পাশাপাশি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো সম্ভব। একই সঙ্গে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা ঠেকাতেও বিশেষ সক্ষমতা আছে এ রণতরীর। চলতি বছর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনসহ দেশটির কর্মকর্তারা বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বা একই ধরনের কোনো পরীক্ষা করতে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার স্থপতি কিম ইল সাংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকীতে পরীক্ষাটি করা হতে পারে। গত সপ্তাহের মাঝামাঝি ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৈঠক করেছেন। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে বেইজিংকে আরও বেশি কিছু করার তাগাদা দিয়েছেন ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য করণীয় বিকল্পগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছেন ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা। এগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ থাকলেও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ও মিত্র প্রতিবেশীকে নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন তারা।
কিমকে হত্যার কথা ভাবছে আমেরিকা! : উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলায় কোরিয়া উপদ্বীপে পরমাণু বোমা মোতায়েন বা উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে হত্যার কথা চিন্তা করছে আমেরিকা। শনিবার এনবিসির খবরে এ দাবি করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু তৎপরতার জবাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এনএসসি)। এসব পদক্ষেপের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু বোমা মোতায়েন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে হত্যার কথাও বলা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.