ব্যাগে চকোলেটের নামে গুলি : লন্ডন থেকে আসা বিমানযাত্রী গ্রেফতার

সিলেটের ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের ব্যাগেজে দেড় শতাধিক রাউন্ড শটগানের কার্তুজ পাওয়া যাওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, স্ক্যানার ফাঁকি দিতে কার্তুজগুলোকে সিগারেটের প্যাকেটের রাঙতা দিয়ে মোড়ানো ছিল, যা দেখতে লাগছিল অনেকটা চকলেটেরে মতো।
আব্দুস সবুর নামে এই ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে একটি সরাসরি ফ্লাইটে করে সিলেটে এসেছিলেন। গোলাবারুদসহ গ্রেফতারের পর সবুরকে ওসমানি বিমানবন্দর থানা হাজতে নিয়ে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। আগামীকাল তাকে সিলেটের আদালতে সোপর্দ করা হবে। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে বিমানের সরাসরি ফ্লাইটে চড়ে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেটের ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন আব্দুস সবুর। তিনি বাংলাদেশী ব্রিটিশ নাগরিক হলেও তার আদি নিবাস সিলেটের বিয়ানিবাজার। সেখানেই সবুরের আরো দুই ভাই বসবাস করেন এবং তাদের কাছেই বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগেরে কর্মকর্তা প্রবাদ কুমার সিংহ বলেন, আগে থেকেই তাদের কাছে খবর ছিল এই ব্যক্তির ব্যাগেজে গোলাবারুদ রয়েছে। প্রবাদ কুমার বলেন, গ্রিন চ্যানেল পার হবার পর সবুরকে প্রথমে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি জবাব দেন এগুলো চকোলেট। তারপর আবারো চ্যালেঞ্জ করলে তিনি জবাব দেন এগুলো সিগারেটের রাঙতায় মোড়ানো চকলেট।
পরে কর্মকর্তা ব্যাগ খুলে দেখতে পান সেখানে রয়েছে সিগারেটের রাঙতায় মোড়ানো দেড়শ’টি শটগানের গুলি। প্রবাদ কুমার আরো বলেন, অনেক সময় স্ক্যানারকে ফাঁকি দেয়ার জন্য অনেকেই সিগারেটের রাঙতায় জিনিসপত্র মুড়িয়ে নেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমানে অস্ত্র-গোলাবারুদ বহনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে, ভ্রমণকালে যেসব বিমানবন্দর ব্যাবহার করা হবে প্রতিটি বিমানবন্দরে এই অস্ত্রগোলাবারুদের ঘোষণা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হবে, কিন্তু সবুর এসবের কিছুই করেননি। তিনি ওসমানী বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বলেছেন, বিয়ানিবাজারে তার ভাইয়ের লাইসেন্সধারী শটগানের জন্য এগুলো তিনি এনেছেন এবং লন্ডনে অবস্থানরত আরেক ভাইয়ের শটগানের লাইসেন্স ব্যাবহার করে এগুলো তিনি কিনেছেন। কিন্তু কোনো ঘোষণা ছাড়া কিভাবে তিনি লন্ডন হিথ্রোর নিরাপত্তাজাল অতিক্রম করলেন এগুলো নিয়ে? সেই প্রশ্ন তুলছেন ওসমানী বিমানবন্দরের কর্মকর্তারাও।
জবাবে সবুর বলেছেন, তিনি হিথ্রোর নিরাপত্তা বাধা অতিক্রম করবার জন্য সেখানে তার ভাইয়ের অস্ত্রের লাইসেন্স দেখিয়েছেন। কিন্তু ওসমানি বিমানবন্দরে তিনি সেই লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। বিমানবন্দরে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আব্দুস সবুরকে গ্রেফতার করে ওসমানি বিমানবন্দর থানা হাজতে নিয়ে রাখা হয়। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ গউসুল হোসেন বলছেন, সবুরের ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনকে অবগত করা হয়েছে। আগামিকাল এ ব্যাপারে বিস্তারিত একটি চিঠি পাঠানো হবে হাইকমিশনের উদ্দেশে।

No comments

Powered by Blogger.