এবার সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি

তিন দফা দাবিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সড়ক পরিবহন মালিক
শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটে যাত্রীশূন্য রাজধানীর
গাবতলী বাসস্ট্যান্ড। এবার সংগঠনটি দাবি আদায়ে সারা দেশে
পরিবহন ধর্মঘট ডাকার হুমকি দিচ্ছে। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঢাকা-আরিচা-খুলনা রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচলে ধর্মঘটের চতুর্থ দিনে সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার দুপুরে যশোর শ্রমিক ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুমকি দেওয়া হয়।
১৯ মে সকালে ফরিদপুরের মধুখালীতে ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিসহ তিন দফা দাবিতে ২০ মে থেকে খুলনা অঞ্চলের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল আলম বলেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকদের মুক্তি না দিলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবহন ধর্মঘট সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। কারণ, পুলিশের ওপর আমাদের আস্থা নেই। পুলিশ দিয়ে ওই ঘটনার তদন্ত করা হলে আমরা ন্যায়বিচার পাব না বলে আশঙ্কা করছি।’
সংগঠনের আহ্বায়ক আলী আকবর লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, ১৮ মে রাতে ঢাকা থেকে সোহাগ পরিবহনের একটি বাস বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ফরিদপুরের মধুখালীতে বাসটি ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতি করে ডাকাতেরা নেমে যাওয়ার পর চালক আয়নাল হোসেন বাসটি নিয়ে থানায় হাজির হন। এ সময় তিনি ডাকাতির বিষয়টি উল্লেখ করে মামলার নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু মধুখালী থানার ওসি ১৯ মে ফরিদপুরের এসপির নির্দেশে চালককে সকাল পর্যন্ত বসিয়ে রাখেন। এরপর চালক আয়নাল, হেলপার অপু ও চেকার রবিউলকে আসামি করে ডাকাতির মামলা করে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা ও বরিশাল রুটে পরিবহনের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। এ কারণে গত ২২ মে থেকে পরিবহনের পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮ রুটে ভাড়ায় চালিত সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২৩ মে পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা ধর্মঘট অব্যাহত রাখেন। এ দাবি আদায় না হলে, মালিক-শ্রমিক মিলে সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘট ও বাস ধর্মঘট ডাকা হবে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার জামিল হাসান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯ মে ভোরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়া বাসের ২২ জন যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের ভাষ্য, যাত্রীবেশী সাত ডাকাত আশুলিয়া থেকে বাসে ওঠে। ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকা পার হওয়ার পরপরই ওই ডাকাতেরা বিনা বাধায় চালকের কাছ থেকে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতির পর যাত্রীদের দাবির মুখে বাধ্য হয়ে চালক বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালী রেলগেট এলাকায় থামালে যাত্রীরাই মধুখালী থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান।

No comments

Powered by Blogger.