মোদিকে ৮ বছরের মেয়ের চিঠি

মায়ের সঙ্গে তায়্যিবা।
ছোট্ট তায়্যিবার চিন্তাগুলো ছিল অনেক বড় বড়। তার সঙ্গীরা যখন হেসে-খেলে দিন কাটাত, তায়্যিবা তখন ভাবত অন্য কথা। ভাবত কীভাবে তার চিকিৎসার টাকা জোগাড় হবে? কবে সে মা-বাবার চিন্তা দূর করতে পারবে।
আট বছরের ফুটফুটে মেয়ে তায়্যিবা জন্মের পর থেকে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত। বুঝতে শেখার পর থেকে দেখছে তার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা। মায়ের কপালে সারাক্ষণ চিন্তার ভাঁজ।
অসুস্থ থাকায় খুব বেশি খেলাধুলা করতে পারে না তায়্যিবা। বেশির ভাগ সময় কাটে টিভি দেখে। টিভিতে সে দেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন সময়ে মানুষদের সাহায্য করছেন। দেখতে দেখতে তায়্যিবার মনে হয়, মোদি তো তার দেশেরই প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কাছেই সে সাহায্য চাইবে।
মা-বাবাকে বলতেই হেসে উড়িয়ে দেন ছোট্ট তায়্যিবার কথা। কিন্তু তায়্যিবা তার সিদ্ধান্তে অটল। ছোট্ট হাতে সে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখে। তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে সাহায্য চায়।
মা, বাবার চোখ কপালে ওঠে যখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি আসে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তায়্যিবার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। দিল্লির গুরু তেজ বাহাদুর হাসপাতালে এখন তায়্যিবার চিকিৎসা চলছে।
ছোট্ট তায়্যিবা বলে, তার বাবা জুতোর কারখানার শ্রমিক। তার আয়ে টেনেটুনে চলে পাঁচজনের সংসার। তার ওপর তায়্যিবার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন মা-বাবা। টিভিতে মোদিকে দেখে তায়্যিবার মনে হয়, সেও ভারতের নাগরিক। চাইলে প্রধানমন্ত্রী তাকে সাহায্য করতে পারেন।
তায়্যিবার চিকিৎসক এসকে কার্লা বলেন, চার থেকে পাঁচ বছর আগে তিনি প্রথম তায়্যিবাকে দেখেন। সে জন্ম থেকে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত। তায়্যিবার হৃদ্‌যন্ত্রের ভালভে সমস্যা। ধমনিতেও জটিলতা রয়েছে। এসব কারণে প্রায়ই তার সর্দিকাশি হতো। শ্বাসকষ্ট ও রক্তশূন্যতায় ভুগত। সে ঠিকমতো বেড়ে উঠছিল না। আগ্রায় তার চিকিৎসা সম্ভব ছিল না। চিকিৎসাটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল। ১৫-২০ লাখ রুপি দরকার।
তায়্যিবার পরিবার আগ্রার বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থায় মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তা চান। তাতে খুব বেশি লাভ হয়নি।
তায়্যিবার এখন আর চিন্তা নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদি তার পাশে আছেন। আগ্রার একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে তায়্যিবা। সে ব্যাংকার হতে চায়। এনডিটিভি অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.