ফরিদপুরে নদীর মোহনা থেকে মাটি উত্তোলন

(ফরিদপুর সদরের মদনখালীতে পদ্মা নদী ও কুমার নদের মোহনা ও মোহনাসংলগ্ন এলাকা থেকে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে ভরে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো) ফরিদপুরে নদীর মোহনা থেকে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে মটি কাটা হচ্ছে। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষায় শহররক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ফরিদপুর সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মদনখালীতে পদ্মা ও কুমার নদের মোহনা ও মোহনাসংলগ্ন এলাকা থেকে একটি খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে কয়েকটি ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে।
খননযন্ত্রের চালক শহরের গোয়ালচামট এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই এলাকার ইটভাটা এমপি ব্রিকসের মালিক আবু সাইদের নির্দেশে এ মাটি কাটা হচ্ছে। প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৩৫ ট্রাক মাটি ওই মালিকের দুটি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে প্রায় ২০০ ঘনফুট মাটি ধরে। সে হিসাবে ওই জায়গা থেকে প্রতিদিন ২৭ হাজার ঘনফুট মাটি খননযন্ত্র দিয়ে কাটা হচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দা লাবলু মিয়া বলেন, ‘১৫ দিন ধরে মাটি কাটা হচ্ছে। নদীর মোহনায় আমরা ১৭টি দরিদ্র পরিবার বসবাস করতাম। মাটি কাটা শুরুর আগে আমাদের ওই জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এভাবে পদ্মা ও কুমার নদের মোহনা থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটায় আগামী বর্ষায় ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া শহররক্ষা বাঁধের খুব কাছ থেকে মাটি কাটায় বাঁধের গোড়া দুর্বল হয়ে যাবে। এতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা শহররক্ষা বাঁধ বর্ষায় ধসে পড়তে পারে।
আবু সাইদ বলেন, ‘আমি মোহনা থেকে অনেক দূরে নিজের খরিদ করা জমি থেকে মাটি কাটছি। আমি পাগল নই যে সরকারি জায়গা থেকে মাটি কাটব।’ কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদ করার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তারা এত দিন আমার জমিতেই থাকত। এখন আমার প্রয়োজনে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এত দিন আমার জমি ভোগদখলের জন্য তাদের কাছ থেকে আমি কোনো টাকা নিইনি।’
ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সাদেক উজ্জামান বলেন, মোহনার মধ্য থেকেই মাটি কাটা হচ্ছে। মোহনার জমি কোনো ব্যক্তির মালিকানা হতে পারে না। এ জন্য ১৭টি পরিবারকেও উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, নদীর মোহনা থেকে মাটি কাটার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটা বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.