অবরোধ-হরতাল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২২৯৬ জন -সরকারি তথ্য by দীন ইসলাম

অবরোধ, হরতালসহ আন্দোলন পরিকল্পনাকারীর নেতৃত্বে রয়েছেন ২০ দলীয় জোটের দুই হাজার ২৯৬ নেতাকর্মী। এদের মধ্যে বিএনপির রয়েছেন এক হাজার ৫৯৯, জামায়াতের ৬৯৫, এলডিপি, জাগপা, খেলাফত মজলিস ও বিজেপি’র একজন করে মোট চারজন এবং ইসলামী ঐক্য জোটের দুইজন। তারাই সব ধরনের সহিংসতামূলক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত। এ সহিংসতাকে বেগবান করতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চল থেকে চরমপন্থি ও একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্য যোগ দিচ্ছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকা-ের জন্য দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চল থেকে মাছ ও সবজির ট্রাকে করে অস্ত্রের চালান ঢাকায় আনা হয়েছে। এরই মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ সদর দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার পতনের জন্য চলমান সহিংসতা আরও বেগবান করা হবে। অবরোধের পর লাগাতার হরতাল ও অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা করতে বিডিআর বিদ্রোহের পলাতক ও জামিনপ্রাপ্ত সদস্যদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলকেন্দ্রিক বিএনপির উচ্চপর্যায়ের এক নেতার মাধ্যমে চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় বেশ কয়েকজন চরমপন্থি সদস্যদের দেখা গেছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে কাওরান বাজার এলাকার ৩-৪টি ট্রাকে মাছ ও সবজির সঙ্গে অস্ত্রের চালান এসেছে। সরকার পতনের মরণ কামড় উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ৫ই জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পতনের আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপ শুরু করেছে। এবারের আন্দোলনের প্রধান টার্গেটে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। ঢাকাকে অবরোধ ও হরতালের সময় দেশের অন্য জেলাগুলোর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন রাখা। একই সঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে জনমনে ও সরকারের প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল করে রাখবে। প্রয়োজনে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এমনকি নিজ দলের জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করে  কৌশলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেশের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করতে চায় বিএনপি- জামায়াত জোট। জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার পতনের জন্য বিএনপি-জামায়াত দলীয় ক্যাডারদের থেকে বেশি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের ব্যবহার করছে। এসব জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে জেএমবি, হুজিবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। এসব সংগঠন ও চরমপন্থি সদস্যদের সাভার,  কেরানীগঞ্জ, আশুলিয়াসহ রাজধানী ঢাকার আশেপাশের এলাকায় ভাড়া বাসায় রাখছে। সেখান থেকে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে পেট্রলবোমা হামলা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ ধ্বংসাত্মক কর্মকা- পরিচালনা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকার পতনের লক্ষ্যে চলমান সহিংসতা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রতিবেদনের আদলে পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে রাজধানী ঢাকার প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার উপকণ্ঠ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি, সবকিছু সরকারের কন্ট্রোলে চলে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.