পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন ২০ জানুয়ারি থেকে

(৪২০ কোটি ডলার ফেরত পাবে ইরান) ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ে তেহরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির সম্পাদিত অন্তর্বর্তী চুক্তিটি আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোববার এ ঘোষণা দিয়েছে। খবর : রয়টার্স ও বিবিসি অনলাইন। নভেম্বরের চুক্তি অনুযায়ী ইরান ৭০০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক অবরোধ থেকে রেহাই পাবে। কয়েক ধাপে তা বাস্তবায়িত হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কিছু নিষেধাজ্ঞা থেকে চুক্তি বাস্তবায়নের প্রথমদিন থেকেই রেহাই পাবে ইরান। কিছু নিষেধাজ্ঞা চুক্তির শেষদিন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া বিদেশে আটকে থাকা ইরানি রাজস্ব (৪২০ কোটি ডলার) দেশে নিতে পারবে তেহরান। ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে লাগাম টানতে গত নভেম্বরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় তেহরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি ছয় মাসের একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি করে। ইরানের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তী এ চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পরই তেহরান ও ছয় বিশ্বশক্তি পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ে বিতর্কের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা শুরু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি একটি চুক্তিতে পেঁৗছতে আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। একই সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গের মতো ঘটনা ঘটলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও হুমকি দিয়ে রেখেছেন তিনি। ওবামা তার বিবৃতিতে বলেছেন, যতদিন চুক্তি মেনে চলবে ততদিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানকে অর্থনৈতিক অবরোধ থেকে 'মধ্যম মাত্রার নিষ্কৃতি' দেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন বলেছেন, চুক্তিটি বাস্তবায়িত হচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে তারা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) আহ্বান জানাবেন। অন্যদিকে, ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরকচি বলেছেন, অন্যপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না বলে প্রতীয়মান হলে চুক্তিবলে ইরান শর্তগুলো মান্য করা বন্ধ করতে পারবে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তিনি বলেছেন, 'আমরা তাদের বিশ্বাস করি না।'
নভেম্বরের ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরান ৫ শতাংশ বিশুদ্ধতার ওপরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করবে না এবং ২০ শতাংশে সমৃদ্ধ করা ইউরেনিয়ামের মজুদ 'নিষ্ক্রিয়' রাখবে। বিনিময়ে দেশটির স্বর্ণ, মূল্যবান ধাতব, মোটরগাড়ি ও পেট্রোকেমিক্যাল রফতানির ওপর থেকে পশ্চিমা কিছু নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হবে। জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ছয় সপ্তাহে যেক'টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উভয় পক্ষ সমাধানে পেঁৗছেছে সেগুলো হলো_ ২০ জানুয়ারি থেকে ইরান তার ২০ শতাংশে সমৃদ্ধ করা ইউরেনিয়ামে জলমিশ্রিত করে পাতলা করে ফেলবে। ৬ মাসের মধ্যে ওই ধরনের ইউরেনিয়ামের সম্পূর্ণ মজুদ এভাবে নিষ্ক্রিয় করা হবে। কুওম শহরের ফোরদো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। আরক ভারী পানির চুলি্ল কেন্দ্রে মাসিক পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হবে।
ইরানের পক্ষ নিল দুবাই : ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সময় এসেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তাই মনে করি। ইরানকে একটি সুযোগ দিন। দেশটি আমাদের প্রতিবেশী এবং আমরা কোনো সমস্যা চাই না। নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে সবাই উপকৃত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.