কৃষি এগোবে, কিন্তু কৃষক? by শাইখ সিরাজ

আমাদের প্রধান দুটি ফসল ধান ও পাট বৃষ্টিপাতের ওপর বহুলাংশে নির্ভর করছে। বৃষ্টিপাত কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হলে বিকল্প হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভের পানি। কিন্তু যেহেতু প্রতি বছর ভূপৃষ্ঠে প্রচুর পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেটা আমাদের কাজে লাগাতেই হবে এখন যেখানে বাংলাদেশের কৃষি দাঁড়িয়ে আছে, ২০২১ সালে তা থেকে দৃশ্যপট অনেকটাই বদলে যাবে।

অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব_ তাতে সন্দেহ নেই। আমি যখন কৃষি নিয়ে কথা বলি, কৃষক ও কৃষির সঙ্গে যুক্ত কৃষি শ্রমিকদের কথা বলি, কৃষাণির কথা বলি তখন অনাবিল আনন্দ অনুভব করি। ফসলের মাঠ আমাকে তৃপ্তি দেয়, কৃষাণ-কৃষাণিরা দেয় প্রেরণা। আগামী কয়েক বছরে তারা দেশকে যে আরও অনেক কিছু দেবে_ তাতে সন্দেহ নেই। তবে এর প্রকৃত স্রষ্টা যারা, তাদের ঘরে সুফল কতটা উঠবে, সেটা নিয়ে কিন্তু যথেষ্ট সংশয় রয়েছে আমার।
বাংলাদেশের কৃষিতে বহু বহু বছর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কম ছিল। ব্যক্তিগতভাবে বিনিয়োগ হয়েছে এবং যার যার সঙ্গতি অনুযায়ী এটা হয়েছে। যে কৃষকের দিন গুজরান হয় কোনো রকমে, তার পক্ষে সময়মতো সার, সেচের পানি, কীটনাশক কিংবা অন্যান্য উপকরণ জোগান দেওয়া কীভাবে সম্ভব?
আমার ধারণা, আগামী কয়েক বছরে কৃষি খাতে বড় বড় খামার গড়ে উঠবে। এটা করা হবে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি গড়ে তোলার তাগিদ থেকে। পুঁজিও এর অন্যতম প্রেরণা। ইতিমধ্যে যান্ত্রিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তা বাড়তে থাকবে। এখন বেশিরভাগ জমি খণ্ড খণ্ড, যা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের উপযুক্ত নয়। বেসরকারি উদ্যোক্তারা বড় অঙ্কের অর্থের থলি নিয়ে যখন এগিয়ে আসতে থাকবেন, তারা চাইবেন আইলের সংখ্যা বিপুলভাবে কমিয়ে আনতে। বড় বড় প্লটে ফসল বোনা ও কাটার কাজ করবে যন্ত্র। এ প্লটের ভেতরে যাদের জমি পড়বে, সেই ক্ষুদ্র এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাঝারি কৃষক তার মালিকানার হিস্যা অনুযায়ী ফসলের ভাগ পাবেন। কিন্তু এ ভাগ যে ন্যায্য হবে_ সেটা বলার উপায় নেই। বরং এটাই সম্ভবত ঘটবে, কৃষক তাকিয়ে দেখবে যে তার জমির ফসলের প্রধান অংশ চলে যাচ্ছে নতুন ধরনের মালিকের গোলায়।
এ ধরনের বিনিয়োগকারীরা চাল, গম, মরিচ কিংবা আলু অথবা শীতকালীন সবজি বড় বড় বাজারের জন্য নিয়ে যাবে। একটি অংশ যাবে বিদেশে রফতানি হয়ে। তারা উন্নতমানের বীজ আনবে, প্রয়োজনে তা আমদানি করবে। কৃষি থেকে তাদের হাতে অঢেল অর্থ আসবে। যেমনটি হয় তৈরি পোশাকে। এ শিল্পে আমরা দেখতে পাই, একজন মালিক বছর শেষে যা লাভ পান, তার কারখানার কয়েক হাজার কর্মীর মোট বেতন-ভাতা হয় সে তুলনায় কম। যাদের জমি নিয়ে এসব বড় বড় খামার গড়ে উঠবে, তাদের অনেকেই সেখানে কাজ করবে মজুর হিসেবে। বলতে পারি, এ ধরনের পরিবর্তন অচিরেই হবে এবং এর প্রভাবে কৃষিতে উন্নতি ঘটবেই। কিন্তু কৃষির উন্নতি ঘটলেও কৃষকের উন্নতি হবে সে তুলনায় সামান্য। কৃষি থেকে যে বিপুল অর্থ উপার্জন হতে থাকবে, তার সামান্যই মিলবে তাদের জন্য। জমির সর্বোত্তম ব্যবহার হতে থাকবে এবং যারা এখানে অঢেল পুঁজি খাটাবে, তারাই মূল লাভ ভোগ করবে।
আমাদের দেশে কৃষি নিয়ে সীমিত পরিসরে গবেষণা হয়। তবে সরকারি গবেষণার সুবিধা হচ্ছে, এর সুফল ধনী-গরিব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা কেন্দ্র যখন কোনো নতুন উচ্চফলনশীল জাতের বীজ বাজারে ছাড়ে, যে কেউ তা কিনে নিয়ে জমিতে ফেলতে পারে। কিন্তু বেসরকারি উদ্যোক্তারা যখন কৃষিতে গবেষণায় অর্থ খাটাবেন, তখন এর সুফল কেবল তারাই ভোগ করবেন। ইতিমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে এবং আগামী কয়েক বছরে তা আরও বাড়বে। তারা উন্নত বীজ উৎপাদন করবে এবং তা চড়া মূল্যে বিক্রয় করবে। দরিদ্র কৃষকদের জন্য কম মূল্যে বাজারে তারা ছাড়বে না।
আগামী কয়েক বছরে ফসলে বৈচিত্র্য আসবে। অনেক ধরনের কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করা হবে এবং তা থেকে মূল্য সংযোজন হবে। 'প্রাণ'-এর মতো আরও অনেক কোম্পানি আমরা দেখতে পাব। তাদের কাঁচামালের জোগান দেওয়ার জন্য বিশাল আকারের আলুর ক্ষেত এবং আম-পেয়ারা-আনারসের বাগান গড়ে তোলা হবে। তারা দিগন্তবিস্তৃত মরিচের ক্ষেত গড়ে তুলবে এবং উৎপাদিত ফসল চলে যাবে সুদৃশ্য মোড়কে বিশ্বের নানা দেশে। আলু থেকে তৈরি হবে চিপস। আম থেকে তৈরি জুস শোভা পাবে ইউরোপ-আমেরিকার সেরা দোকানের তাকে। কিন্তু তাতে সাধারণ কৃষকের জীবনমানে তেমন উন্নতি ঘটবে বলে মনে করার কারণ নেই। এ কারণে আমার ধারণা, বাংলাদেশে কয়েক বছরের মধ্যেই বড় ধরনের কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট তৈরি হবে এবং তা পরিচালনার জন্য গড়ে উঠতে থাকবে সংগঠন। এটা হবে বঞ্চিতদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। দলমত নির্বিশেষ সব কৃষকই এতে শামিল হবে। প্রকৃতই এ ধরনের সংগঠন যদি গড়ে ওঠে, তা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হতে পারে। আমাদের এ ভূখণ্ডে এক সময় তেভাগা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। বর্গাচাষিরা ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ পাওয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়েছিল। কিন্তু ছয় দশক আগের কথা কেবলই স্মৃতি। এরপর আর শক্তিশালী কৃষক আন্দোলন সৃষ্টি হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দলের কৃষক সংগঠন রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাতে কৃষকের কোনো স্বার্থ নেই। মূল দলের রাজনৈতিক ভিত জোরালো করতেই এর নেতৃত্ব ব্যস্ত থাকে। আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, কৃষক যখন দেখবেন, তার জমির ফসল কেবল মূলধন খাটানোর কারণে মৃষ্টিমেয় কিছু লোকের সমৃদ্ধি এনে দিচ্ছে, সেটা তিনি মেনে নেবেন না। প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠবেন।
বায়োটেকনোলজির ব্যবহার এখন পর্যন্ত কৃষিতে তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। বেসরকারি বিনিয়োগ যত বাড়তে থাকবে, এ প্রযুক্তিও আসবে। এর ফলে উৎপাদনশীলতা অনেক বেড়ে যাবে।
তবে বেসরকারি বিনিয়োগের কারণে প্রচুর জমি 'অকৃষকদের' কর্তৃত্বে এলেও এর বাইরেও অনেক জমি থাকবে। এ জমির মালিকানা থাকবে স্বল্পবিত্তের কৃষকদের হাতে। স্পষ্টতই দুই ধরনের জমিতে বিনিয়োগের মাত্রায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকবে এবং তার প্রভাব পড়বে উৎপাদনশীলতায়। ধনী কৃষকরা প্রচুর মূলধন খাটাবেন এবং লাভবান হবেন। উৎপাদন ব্যয়ও ভিন্ন হবে। আধুনিক বড় খামারে উৎপাদন ব্যয় পড়বে তুলনামূলক কম। তাদের উৎপাদিত ফসল মার যাওয়ার ঝুঁকিও কম থাকবে। এর বিপরীত চিত্র দেখা যাবে ক্ষুদ্র কৃষকের জমিতে। তাদের কাছে সরকারি কৃষি গবেষণার সুফল পেঁৗছাবে অনেক দেরিতে।
দক্ষিণাঞ্চলের কথা বলতে পারি। সিডর ও আইলার পর অনেক জমিতে লবণ-পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে চাষাবাদের জন্য যে প্রযুক্তি তাদের দরকার ছিল, সেটা জোগান দিতে পারত সরকার। কিন্তু বাস্তবে সেটা ঘটেনি। তারা চেয়েছে লবণাক্তসহিষ্ণু ধানের বীজ। কিন্তু সরকার সময়মতো ত সরবরাহ করতে পারেনি। আবার এটাও দেখা গেছে, সরকার যে বীজ সরবরাহ করেছে তা জমির উপযোগী থাকছে না জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। অনেক এলাকায় সূর্যের তাপ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় পুরনো জাতের বীজ কাজে আসছে না। এই প্রযুক্তি হস্তান্তর কাজে সরকারের চেয়ে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা অনেক বেশি সফল হবেন_ তাতে সন্দেহ নেই।
উত্তরাঞ্চলের জমি নিয়েও আমার দুশ্চিন্তা রয়েছে। আগামী কয়েক বছরে সেখানে খরার প্রকোপ বাড়বে। এখন এক কেজি বোরো ধান ফলাতে তিন হাজার লিটার পানি দরকার পড়ে। নদ-নদী ও খালের পানি পর্যাপ্ত না মেলায় কৃষকরা মাটির নিচের পানির ওপর বেশি নির্ভর করছে। এ পানি ব্যবহার করার পদ্ধতির কারণে প্রচুর পানির অপচয় ঘটছে। কৃষকরা নতুন প্রযুক্তি শিখছে। তারপরও তাদের তুলনায় বেসরকারি বড় খামার মালিকরা পানি সাশ্রয়ে এগিয়ে থাকবে।
কৃষি বেসরকারি খাতে যত চলে যাবে, ধানের আবাদে তার প্রভাব পড়তে থাকবে। তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি আনবে, বিনিয়োগ বাড়াবে। ধান চাষে অনেক ঝামেলা। ঝুঁকিও বেশি। কিন্তু লাভ তুলনামূলক কম। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ হয় এমন ফসলের দিকে ঝুঁকতে থাকবে। রফতানি বাজারের চাহিদাও তাদের বিবেচনায় থাকবে। কিন্তু আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে, ধানের আবাদ কমে গেলে খাদ্য নিরাপত্তা দারুণভাবে বিঘি্নত হবে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর। বাজারে চালের দাম বেশি থাকবে। ঘাটতি মেটাতে নির্ভরতা বাড়বে আমদানির ওপর। এতে বাড়বে মানুষের ক্ষোভ। সমাজে সৃষ্টি হবে অস্থিরতা।
আমরা এখন জোর গলায় তৈরি পোশাক শিল্প খাতের কথা বলি। এখানে ৩০-৩৫ লাখ নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। কিশোরী-তরুণীরা আর 'চাকর' নয়। স্বাধীনভাবে তারা করছে 'চাকরি'। কৃষিও এমনভাবেই বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের খাত হয়ে উঠবে বলে আমার ধারণা। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারও শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকবে। কিন্তু কৃষকের স্বপ্নের সুদিন শেষ। তার বিপদ দিনে দিনে বাড়বে। অস্তিত্বে টান পড়বে। তার যে জমি সোনালি ধানে ভরে যেত সেখানে চাষ হবে স্ট্রবেরি কিংবা এ ধরনের আরও অর্থকরী পণ্য।
অরগানিক ফসল চাষেও জোর পড়তে পারে। এখানে রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই। চাষাবাদে কৃত্রিমতা নেই। এ কারণে উৎপাদন ব্যয় বেশি পড়বে। কিন্তু সমাজে যেহেতু একটি শক্তিশালী ধনবান গোষ্ঠী রয়েছে এবং পরিবেশ-পুষ্টি সচেতনতা বাড়ছে, তাই বাড়তি ব্যয়ে উৎপাদিত ফসলের বাজার পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এ পদ্ধতির যতই প্রসার ঘটুক, আমাদের কৃষির সমস্যার তা সমাধান দেবে না।
আমি এতক্ষণ যা বললাম তাতে কেউ বলতেই পারেন যে, সম্ভাবনার মধ্যে যে সংকট নিহিত. সেটাই আমি বড় করে দেখেছি। এখান থেকে যে করণীয় বের হয়ে আসে সেটাই আমি তুলে ধরতে চাই। মূলকথা হচ্ছে, আমাদের কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের পরিচয় এবং ঐতিহ্য ধরে রাখা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবও যতটা সম্ভব মোকাবেলা করার প্রস্তুতি চাই। এ জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জমি যেন কোনোভাবেই তার মালিক অর্থাৎ কৃষকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা। কেবল আইন প্রণয়ন নয়, তার প্রয়োগে সরকারের সর্বোচ্চ সদিচ্ছা থাকতে হবে।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, কেবল চাষের জমির আওতা বাড়ানো নয়, উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর প্রতি মনোযাগী হতে হবে। শুধু দিগন্তবিস্তৃত সোনালি ধানের নাচন দেখে উৎফুল্ল হলে চলবে না; জমি থেকে কত বেশি ফসল আসে সেটাও দেখতে হবে। কিন্তু এ জন্য রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহার করা চলবে না। বরং তার ব্যবহার সীমিত রাখায় যত্নবান হওয়া চাই।
কৃষকের জন্য ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ধান-চাল-গমের মতো ফসলের সংগ্রহমূল্য সরকার বিভিন্ন সময়ে নির্ধারণ করে দেয়। পাটের ক্ষেত্রে এ দাবি থাকলেও তা আদায় হয়নি। পরিবেশ নিয়ে আমাদের যেমন উদ্বেগ আছে, তেমনি এ বিষয়ে সচেতনতাও বাড়ছে। এ কারণে পাটের মতো ফসলের চাষ আগামীতে বাড়বে বলে ধারণা করা যায়। আগামী কয়েক বছরে পাট প্রকৃত অর্থেই সোনার আঁশ হয়ে উঠুক_ এ প্রত্যাশা থাকবে। ধান-চাল-গমের বাইরে আরও কয়েক ধরনের ফসলের সংগ্রহমূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিলে কৃষক লাভবান হবে।
আরেকটি বিষয়ে মনোযাগ দিতে হবে_ পানি ব্যবস্থাপনা। ভূগর্ভস্থ পানি যত কম উত্তোলন করা যায়, ততই মঙ্গল। খাল-নদীর পানি ব্যবহারের প্রতি আমাদের অধিক মনোযোগী হতে হবে। এটা সুলক্ষণ যে, সরকারিভাবে ড্রেজিং কাজ গুরুত্ব পাচ্ছে। এ জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে চাই উপযুক্ত পরিকল্পনা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের বৃষ্টিনির্ভর ফসল চাষাবাদে সমস্যা বাড়ছে এবং আগামীতে তা আরও প্রকট হবে বলেই শঙ্কা। আমাদের প্রধান দুটি ফসল ধান ও পাট বৃষ্টিপাতের ওপর বহুলাংশে নির্ভর করছে। বৃষ্টিপাত কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হলে বিকল্প হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভের পানি। কিন্তু যেহেতু প্রতি বছর ভূপৃষ্ঠে প্রচুর পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেটা আমাদের কাজে লাগাতেই হবে। আমি আশা করব, সামনের দশকটিতে এর আয়োজনে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে। বাংলাদেশকে খাল-নদী-বিলের দেশ বলা হয়। কিন্তু এখন অনেক এলাকায় তা কেবলই দীর্ঘশ্বাস। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই হবে। আর এ জন্য চাই ভূপৃষ্ঠে পানির অনেক অনেক জলাধার।

শাইখ সিরাজ :গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

No comments

Powered by Blogger.