আগামী বছর বিশ্ববাজারে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা পাবে বাংলাদেশ

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশ আগামী বছর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধা পাবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রপ্তানি-বাণিজ্যের সমস্যা ও এর সমাধান’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে এ জন্য অবশ্য বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিওর) দোহা রাউন্ড সম্পন্ন হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকায় ইপিবির কার্যালয়ে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয় সেমিনারটি। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান জালাল আহমেদের উপস্থাপনায় সেমিনারে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. আবু আবদুল্লাহ, ইপিবির দুই মহাপরিচালক রাখাল চন্দ্র বর্মণ ও আমীর হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আসিফ ইকবাল, বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল ও লিনেন উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির চেয়ারম্যান এম আনিসুজ্জামান এবং বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক সমিতি এবং বিভিন্ন পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ৪৮০টি পণ্য ছাড়াও ভারতের স্পর্শকাতর তালিকা থেকে বাংলাদেশের আরও ৬১টি পণ্য বাদ দেওয়ার বিষয়ে এখন কাজ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ভবিষ্যৎ ইতিবাচক।
সেমিনারে রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ২৬টি সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের ব্যাপারে সরকারের প্রতি দাবি জানান দেশের রপ্তানিকারকেরা।
এর আগে ইপিবির পক্ষ থেকে আটটি চেম্বার, ৪২টি পণ্যভিত্তিক সমিতি ও ১৬৭টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের কাছে রপ্তানি-বাণিজ্যের সমস্যা এবং সমাধান বিষয়ে তাদের পরামর্শ জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে একটি চেম্বার, ১৮টি পণ্যভিত্তিক সমিতি ও ১৪টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তাদের পরামর্শ ইপিবিতে জমা দিয়েছে। এসব পরামর্শ ও সমস্যা যাচাই-বাছাই করে ২৬টি সমস্যা চূড়ান্ত করেছে ইপিবি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মংলা বন্দরকে সক্রিয় করা, ব্যাংক সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা, সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্যাকেজিং পদ্ধতি উন্নত করে কার্গো ফ্লাইট চালু করার কথা সরকার ভাবছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর বাংলাদেশ যে ৩৫টি মেলায় অংশ নেয় সেগুলোতে এখন থেকে অন্তত একটি স্টল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের জন্য বরাদ্দ রাখার নির্দেশ দেন ফারুক খান।
চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও অবরোধসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশে এগুলো ঠেকানো খুবই কঠিন। তবে এও ঠিক, গরিব ও অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী কখনো প্রতারিত হয়ে, কখনোবা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতির সঙ্গে সম্পর্কিত কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে।
আবু আবদুল্লাহ জানান, অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড গঠিত হয়েছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। আগামী ছয় মাস পরে এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সনদ দেওয়ার মতো সক্ষমতা অর্জনে সক্ষম হবে।

No comments

Powered by Blogger.