প্রথম ম্যাচেই উজ্জ্বল ইউসুফ

অভিজ্ঞতার মূল্য ঢাকা লিগে নিজের প্রথম দিনেই বুঝিয়ে দিলেন মোহাম্মদ ইউসুফ। তামিম-ঝড়ের পর আরেক অভিজ্ঞ ফয়সাল হোসেনের সঙ্গে ইউসুফের জুটি সূর্যতরুণের বিপক্ষে ৩ উইকেটের দারুণ এক জয় এনে দিয়েছে মোহামেডানকে। দিনের সবচেয়ে বড় ম্যাচটি অবশ্য হয়েছে একতরফা, মাহমুদউল্লাহর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে বগুড়ায় গাজী ট্যাংককে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। আরেক একতরফা ম্যাচে রাজশাহীতে বিকেএসপিকে ১০১ রানে হারিয়েছে বিমান, মুশফিকুর রহিম পেয়েছেন লিগে টানা তৃতীয় ফিফটি।বিকেএসপিতে ওপেনার ইমতিয়াজের ১৮ বলে ২৪ রানের পরও ৪০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় টসজয়ী সূর্যতরুণ। চতুর্থ উইকেটে ১৩৭ রানের জুটি গড়ে আবদুর রাজ্জাকের দলকে টেনে তোলেন জুনায়েদ সিদ্দিক ও হামিদুল ইসলাম। ১০৬ বলে ৭১ করেন হামিদুল, ১০১ বলে ৭১ জুনায়েদ। শেষ দিকে ২ চার ও ৪ ছয়ে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধীমান ঘোষের ১৯ বলে ৩৯ দলের রানকে নিয়ে যায় ২৪৫-এ।
এই রান তাড়া করতে যেমন প্রয়োজন, মোহামেডানকে তেমনই শুরুই এনে দিয়েছেন তামিম ইকবাল ও ইংলিশ ব্যাটসম্যান মঈন আলী। দুজনের ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি আসে ৬২ বলে। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ রানের জুটির পর ৯ রানের মধ্যে তামিম, শামসুর ও সাকিবকে আউট করে ম্যাচে ফেরে সূর্যতরুণ। আগের ম্যাচে ৪৫ বলে ৬৯ করা তামিম কাল ৬৬ করেছেন ৫ চার ও ৪ ছয়ে। এ অবস্থা থেকে মোহাডোনকে জয়ের কিনারায় নিয়ে যায় পঞ্চম উইকেটে ইউসুফ-ফয়সালের ৯৭ রানের জুটি। ৪ চার ও ১ ছয়ে ৫৪ রান করে আউট হন ফয়সাল, সমান চার-ছয়ে ইউসুফ ৫৮। বল লেগেছে ৯৬টি, কিন্তু ফিরেছেন দলের জয়কে সঙ্গী করেই। আগের ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বরের সঙ্গে টাই করা মোহামেডান ফিরল জয়ের ধারায়।বগুড়ায় আবাহনীর বোলারদের সম্মিলিত আক্রমণে ১৩১ রানেই গুঁড়িয়ে যায় দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপের গাজী ট্যাংক। শাহরিয়ার নাফীস (৪), অধিনায়ক নাঈম ইসলাম (০), অলক কাপালি (২) ও সাব্বির রহমানদের (১২) ব্যর্থতার দিনে বিশ পেরোতে পেরেছেন শুধু দুই শ্রীলঙ্কান থিলিনা পারানাভিতানা (২৩) ও কৌশল্য বীরারত্নে (২১)। ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার মাহমুদউল্লাহ, ২টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই টিনএজ পেসার আবুল হাসান ও আলাউদ্দিন বাবু। ইমরুল কায়েস (১৫), রনি তালুকদার (০) ও আনামুল হককে (০) ২২ রানের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়ে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল গাজী। কার্সেলডাইন-মাহমুদউল্লাহর অবিচ্ছিন্ন ১১০ রানের জুটিতে আবাহনী টানা তৃতীয় জয় পেয়ে যায় আর কোনো উইকেট না হারিয়েই। ৭৮ বলে অপরাজিত ৫৭ করেন মাহমুদউল্লাহ, ৭১ বলে অপরাজিত ৫১ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান কার্সেলডাইন।
চতুর্থ ম্যাচে এসে এবারের লিগে প্রথমবারের মতো আউট হয়েছেন মুশফিকুর, তবে তার আগে করেছেন ৮০। ৬৪ রানে ৩ উইকেট হারানো বিমানকে আকাশে উড়িয়েছে শ্রীলঙ্কান বাথিয়া পেরেরার সঙ্গে মুশফিকুরের ১০৬ রানের জুটি। আগের দুই ম্যাচে ৮৭ ও ৭৭ রান করা মুশফিকুর এবার ৮০ করেছেন ৯২ বলে, ১০ চার ও ১ ছয়ে। পেরেরার ৬৮ এসেছে ১০৪ বলে। শেষ দিকে জিসান আসিফের ২৭ বলে ৩০ ও মোশারফ হোসেনের ৫ বলে অপরাজিত ১৫ রানে ৪৮ ওভারের ম্যাচে ২৫২ করে বিমান। বিকেএসপি জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারেনি কখনোই, নিয়মিত উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় ১৫১ রানে। জাতীয় দলের পেসার শফিউল ইসলামের পাশাপাশি দুটি করে উইকেট পেয়েছেন শরিফউল্লাহ এবং বাঁহাতি স্পিনার মোশারফ হোসেন।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
সূর্যতরুণ: ৫০ ওভারে ২৪৫/৭ (হামিদুল ৭১, জুনায়েদ ৬৯, ধীমান ৩৯*, ইমতিয়াজ ২৪; শামসুর ২/৩০, মঈন ২/৪৫, সাকিব ২/৪৫, এনামুল ১/৪৩)। মোহামেডান: ৪৯.১ ওভারে ২৪৬/৭ (তামিম ৬৬, ইউসুফ ৫৮*, ফয়সাল ৫৪, মঈন ২০; রিজওয়ান ৩/৩৫, রাজ্জাক ২/৪৪, সোহরাওয়ার্দী ২/৪৭)। ফল: মোহামেডান ৩ উইকেটে জয়ী।
গাজী ট্যাংক: ৩৯.১ ওভারে ১৩১ (পারানাভিতানা ২৩, বীরারত্নে ২১; মাহমুদউল্লাহ ৩/২৪, আবুল হাসান ২/৩০, আলাউদ্দিন ২/২৩, ফরহাদ ১/২, সাকলাইন ১/২০, তাপস ১/২৬)। আবাহনী: ২৯.৩ ওভারে ১৩২/৩ (মাহমুদউল্লাহ ৫৭*, কার্সেলডাইন ৫১*; রাসেল ২/২০, বীরারত্নে ১/১৮)। ফল: আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী।
বিমান: ৪৮ ওভারে ২৫২/৭ (মুশফিকুর ৮০, পেরেরা ৬৮, জিসান ৩০, জহুরুল ২৩; সৌম্য ২/৪৪, রিয়াজ ২/৬১, আবিদ ১/১৯, আসিফ ১/৪৩)। বিকেএসপি: ৪৪ ওভারে ১৫১ (আসিফ ৪০, জুপিটার ৩৭, তরিকুল ২১; শরিফউল্লাহ ২/২০, শফিউল ২/২৫, মোশারফ ২/৩৮, ইলিয়াস ১/১৪, পেরেরা ১/১৪, মনোয়ার ১/৩৯)। ফল: বিমান ১০১ রানে জয়ী।

No comments

Powered by Blogger.