প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস 'সামাজিক ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রেই বেশিকার্যকর'

সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের নতুন অভিযাত্রা শুরু করেছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর এ ভাবনা আলোচিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। অনেক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে বাংলাদেশে আসছে। এ নিয়ে কাজ হচ্ছে বিভিন্ন দেশেও। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। গ্রামীণ ব্যাংকের সদর দপ্তরে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ
প্রথম আলো: সামাজিক ব্যবসার ধারণাটি কীভাবে এল? ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে জোবরার বেলতলী গ্রামের মতো কোনো ঘটনা কি আপনাকে প্রেরণা জুগিয়েছে? কিংবা অন্য কোনো দেশের উদাহরণ?
মুহাম্মদ ইউনূস: আমি ক্রমান্বয়ে অনেক কোম্পানি সৃষ্টি করেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যাংকিং, টেলিকম, সৌরশক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, টেক্সটাইল, তাঁত, বিপণন ইত্যাদি। কোনোটাতেই আমার কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা রাখিনি। সব কটিই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবসায়িক উদ্যোগ হিসেবে সৃষ্টি করেছি, ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য নয়। এ অভিজ্ঞতাগুলো থেকে মনে প্রশ্ন এল, এ ধরনের কোম্পানির কথা তো অর্থনীতিশাস্ত্রে নেই। এটা নেই কেন? এটা তাত্ত্বিক কাঠামোতে সংযুক্ত করতে আপত্তি কী? দেখলাম, এটাই তাত্ত্বিক কাঠামোতে বিরাট ঘাটতি। সেটা পূরণ করার উদ্দেশ্যে সামাজিক ব্যবসার ধারণাটি নিয়ে এসেছি।
প্রথম আলো: যে প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক ব্যবস্থায় আসছে, তাদের কাজের ধরন একেবারেই আলাদা। তাদের সঙ্গে সমন্বয়টা কীভাবে হচ্ছে?
মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসা হিসেবে যেসব কোম্পানি আমরা করেছি, তার প্রতিটিই স্বতন্ত্র কোম্পানি। যার যার কাজ সে সে করে। ভবিষ্যতে যখন এ রকম অসংখ্য সামাজিক ব্যবসার সৃষ্টি হবে, হয়তো তখন সামাজিক ব্যবসার চেম্বার অব কমার্স হবে—নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য। মুনাফার ব্যবসায় যতটুকু সমন্বয়ের দরকার তার চেয়ে এতে বেশি সমন্বয়ের দরকার নেই। যার যার কাজ সে সে করবে। অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য একটা কাঠামো সৃষ্টি করা যেতে পারে।
প্রথম আলো: এখন পর্যন্ত বেশ কিছু খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করেছেন। এর বাইরেও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা মোকাবিলা করছেন কি?
মুহাম্মদ ইউনূস: প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের আগ্রহে এগিয়ে এসেছে। সাধারণত বিভিন্ন সম্মেলনে তাদের সঙ্গে দেখা হয়, আলাপ হয়। আমার বই নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ হয়। অনেকে সামাজিক ব্যবসাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে আসে। ৪ ও ৫ নভেম্বর জার্মানিতে সামাজিক ব্যবসাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন হয়ে গেল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী, অধ্যাপক, ছাত্ররা এতে যোগ দেন। তাঁরা আরও জানতে চান। বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে সামাজিক ব্যবসা করার মূল উদ্দেশ্য, আমার তত্ত্বাবধানে তাঁরা ব্যবসা করতে চান—যাতে ভুল করে না ফেলেন। একবার তাঁরা অভ্যস্ত হয়ে গেলে নিজেরাই করবেন। অন্যান্য দেশেও করবেন। এখন যেমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো হাইতি, কলম্বিয়া, আলবেনিয়াতে সামাজিক ব্যবসা শুরু হতে যাচ্ছে। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো, বিশেষ করে হাঙ্গেরিতে রোমা জিপসিদের নিয়ে বিরাট সামাজিক সমস্যা। জাপানে আত্মহত্যার সমস্যা। গ্লাসগোতে চতুর্থ প্রজন্মের বেকার মানুষকে নিয়ে সৃষ্ট জটিল সমস্যা সমাধানে সামাজিক ব্যবসা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। বিনিয়োগের জন্য তহবিল লাগবে। সে জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল সৃষ্টি হচ্ছে। এই তহবিলের মাধ্যমে ভবিষ্যতে অনেক উদ্যোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশেও তহবিল সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
প্রথম আলো: সামাজিক ব্যবসায় রাষ্ট্রের ভূমিকা কীভাবে দেখেন?
মুহাম্মদ ইউনূস: রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো প্রাথমিক আয়োজন এর জন্য জরুরি শর্ত নয়। বর্তমানে কোম্পানি আইনই যথেষ্ট। সামাজিক ব্যবসা নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ-সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পূর্ণ মালিকের বিষয়। মালিক কোনো মুনাফা নেবে না—এ বিষয়ে মনস্থির করে ব্যবসা করলে সেখানে সরকারের করার কিছু নেই। তাছাড়া আমি বলছি যে সামাজিক ব্যবসা সরকারের কাছ থেকে কোনো রকম কর সুবিধা চাইবে না। তাতে অনেক ঝামেলা কমে যায়।
প্রথম আলো: করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান শর্ত নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন, দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও গতিশীলতা। ব্যক্তির মুনাফা বা উচ্চ বেতন কর্মক্ষমতার উৎস হিসেবে কাজ করে বলে ধরে নেওয়া হয়। সামাজিক ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যক্তির উদ্দীপনাকে কীভাবে কাজে লাগাবেন?
মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে সনাতন ব্যবসার অনেক ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই। শুধু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে পার্থক্য। মুনাফামুখী এবং মুনাফাবিহীন হওয়ার মধ্যে পার্থক্য। সামাজিক ব্যবসায় কোম্পানি মুনাফা করবে। কিন্তু মালিক মুনাফা নেবে না। শুধু মূলধন ফেরত নিতে পারবে। তাতেই অনেক কিছু পাল্টে যায়। কর্মকর্তাদের বেতন, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাজারে যে রকম প্রচলিত আছে, সেভাবেই হবে। বোনাস পাওয়া, পদোন্নতি পাওয়া এগুলো অন্যান্য ব্যবসার মতোই হবে। কিন্তু তাদের দক্ষতা ও সাফল্যের মাপকাঠি ভিন্ন হবে। জিজ্ঞেস করতে পারেন মালিকের উদ্দীপনাটা কোত্থেকে আসবে। সেটা আসবে মানুষের জীবনে শুভ পরিবর্তন আনতে পারার আনন্দ থেকে। সামাজিক সমস্যার সমাধানে কৃতিত্ব অর্জন করার আনন্দের মাধ্যমে।
প্রথম আলো: দরিদ্র মানুষের খরচের বড় অংশ চলে যায় খাবার কিনতে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পণ্যের দাম বাড়লে বেড়ে যায় দারিদ্র্য। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের খাদ্যের চাহিদা কীভাবে মেটানো যাবে বলে মনে করেন?
মুহাম্মদ ইউনূস: খাদ্যের অভাব এবং খাদ্যের উচ্চমূল্য অবশ্যই সামাজিক সমস্যা। যেহেতু এগুলো সমস্যা, কাজেই এগুলো সমাধানে সামাজিক ব্যবসার কাঠামোকে কাজে লাগানো যাবে। খাদ্যের অভাব থাকলে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো যায়। উচ্চমূল্য কমাতে হলে ন্যায্যমূল্যে খাদ্য বাজারজাত করার জন্য সামাজিক ব্যবসা করা যায়। মোট কথা, সমস্যা থাকলেই তার জন্য সামাজিক ব্যবসা পদ্ধতি কাজে লাগানো যায়। বিনা মূল্যে বিতরণ, ভর্তুকি দিয়ে বিতরণ ইত্যাদির পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা বিবেচনা করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাবে, সামাজিক ব্যবসা অনেক বেশি কার্যকর।
প্রথম আলো: এ পর্যন্ত বিশ্বের বেশ কিছু খ্যাতনামা ব্র্যান্ড সামাজিক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে। আগামী দিনে আসছে আরও কিছু। কীভাবে এদের যুক্ত করলেন? কোন প্রক্রিয়ায়?
মুহাম্মদ ইউনূস: মূলত এগুলো হয় সামাজিক ব্যবসার পরিচিতি বাড়ার মাধ্যমে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিজনেস স্কুলে এটা পড়ানো হচ্ছে। কাজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো জানতে পারছে। এ নিয়ে সম্মেলন হচ্ছে, সেমিনার হচ্ছে। একজনের দেখাদেখি আরেকজন এগিয়ে আসছে। ডানোন করলে Nestle আসে। Adidas করলে Nike আসে ইত্যাদি। যত দিন এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে, তত দিন এটা সম্প্রসারিত হবে।
প্রথম আলো: সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো নানা রকম সেবাধর্মী কর্মকাণ্ডে অর্থ বিনিয়োগ করে। সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রেই তারা কাজটি করে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসার মতো বৃহত্তর পরিসরে তাদের সার্থকভাবে যুক্ত করা কতখানি সফল হবে?
মুহাম্মদ ইউনূস: সিএসআর (সামাজিক দায়বদ্ধতা) শুরু হয়েছিল সেবাধর্মী কাজ করার জন্য। পরে অতিমাত্রায় বুদ্ধিমান কর্মকর্তাদের হাতে পড়ে সেই লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে এটা কোম্পানির ইমেজ সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত হয়ে পড়েছে। সিএসআরের বর্তমান পরিণতিতে অনেকেই দুঃখিত। সিএসআরকে সামাজিক ব্যবসার দিকে নিয়ে যাওয়ার একটা উদ্যোগ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে সামাজিক ব্যবসার জন্য পৃথক বিনিয়োগ চাওয়া যেতে পারে। যেমন ডানোন করেছে।
সামাজিক ব্যবসা বহুজাতিক কোম্পানি কিংবা বড় ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল বিষয় নয়। এটার প্রধান শক্তি হবে ব্যক্তিগত উদ্যোগ। একক উদ্যোগ। এটার মূলমন্ত্র হলো সৃজনশীলতা। এটার প্রধান বাহক প্রযুক্তি। বহুজাতিক কোম্পানির চেয়েও বড় উদ্যোক্তা হবে ওই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজে ব্যক্তি হিসেবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিরাট শক্তিধর ব্যবসায়িক যন্ত্র হলেও এটা পরিচালনা করেন যাঁরা, তাঁরা অন্য দশজন মানুষের মতোই। তাঁদের অনেকে ক্রমে ক্রমে ব্যক্তি হিসেবে সামাজিক ব্যবসায় নেতৃত্ব দেবেন। তাঁরা সামাজিক ব্যবসা সৃষ্টি করবেন, তহবিল সৃষ্টি করবেন।
ব্যক্তি মানুষের মনে যদি স্বার্থহীনতা থাকে, তাহলে সামাজিক ব্যবসা সফল হবে, সম্প্রসারিত হবে। যদি না থাকে, তাহলে সামাজিক ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে। সামাজিক ব্যবসা যদি সমাজের সমস্যা সমাধানের প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে এটার অগ্রযাত্রা থামিয়ে রাখা যাবে না। আর যদি সে প্রমাণ না মেলে, তাহলে সামাজিক ব্যবসার কথা শুনতে যত মধুরই মনে হোক, এটা মানুষ শিগগিরই ভুলে যাবে।
প্রথম আলো: সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের কথা বলছেন। এর আওতায় দেশের কত সংখ্যক মানুষকে আনা সম্ভব?
মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে নানা সমস্যার কার্যকর সমাধান পাওয়া সম্ভব। এটা ব্যবসা রচনা করার নিপুণতা ও সৃজনশীলতার ওপর নির্ভর করবে। আমি মালিক, মুনাফা করতে চাই না, এ রকম একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে এ রকম ব্যবসার মাধ্যমে অনেক কিছু সম্ভব। দেশের সব মানুষের সমস্যার সমাধান হওয়ার কথাটা আসবে দ্বিতীয় পর্যায়ে। প্রথম পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে ১০ জন, ৫০ জন, ১০০ জন মানুষের সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় কি না, সেটা নিশ্চিত হওয়া। এটা নিশ্চিত হওয়া গেলে বোঝা গেল, রোগের ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে। এখন একই ওষুধ যতজন সেবন করবে, ততজন নিরাময় হবে। তার জন্য সম্প্রসারণের প্রশ্ন আসবে। বিনিয়োগের প্রশ্ন আসবে। এটা অপেক্ষাকৃত অনেক সহজ বিষয়। ওষুধ আবিষ্কারটাই হলো মূল কাজ। সেখানে সৃজনশীলতা কাজে আসে। প্রযুক্তি কাজে আসে। তারুণ্য কাজে আসে।
প্রথম আলো: বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো উৎসাহ পাচ্ছেন কি?
মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসা তো মাত্র শুরু হলো। ক্রমান্বয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হবে। নিশ্চয়ই তাদের আগ্রহ বাড়বে।
প্রথম আলো: বিশ্বব্যাপী সামাজিক ব্যবসার প্রভাব কতখানি? কারা এর সঙ্গে আছেন?
মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসা এখন মাত্র যাত্রা শুরু করেছে। এখনো এটা বেশি লোকের কাছে পরিচিত হয়নি। বেশি লোক এ রকম উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত হয়নি। যেগুলো শুরু হয়েছে, সেগুলো অনেকটা তাদের নিজ নিজ ‘স্বপ্ন’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। স্বপ্ন হিসেবে এগুলো অতি চমৎকার ও আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে। কিন্তু যত দিন এগুলো বাস্তবে রূপান্তরিত না হবে, তত দিন এর প্রভাব বিস্তারিত হবে না। তবে মানুষের আগ্রহ দেখে উৎসাহ জাগে।
কারা জড়িত আছে? যাদের হাতে প্রযুক্তি আছে, ব্যবসার অভিজ্ঞতা আছে, সামাজিক সচেতনতা আছে, তারা এগিয়ে আসছে। আমরা নিজেরা কিছু কোম্পানি করেছি। কিছু যৌথ উদ্যোগে করেছি বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে। ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে। কয়েকটি দেশে এরকম উদ্যোগ শুরু হয়েছে, যার সঙ্গে আমিও যুক্ত আছি। কলম্বিয়া, আলবেনিয়া, স্কটল্যান্ড, ইতালি, হাইতি, রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, জাপান, চীন ইত্যাদি।
প্রথম আলো: নোবেল পুরস্কারের পর মর্যাদাসম্পন্ন বিভিন্ন পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন। কীভাবে মূল্যায়ন করেন এসব স্বীকৃতিকে?
মুহাম্মদ ইউনূস: যেকোনো পুরস্কারই একটা বিশেষ স্বীকৃতি। এটা আমাদের উজ্জীবিত করে। অনুপ্রেরণা দেয়। বড় পুরস্কারগুলো দেশের জন্য একটা সম্মান এনে দেয়। দেশকে পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচিত করে তোলে। দেশের মানুষও অনুপ্রাণিত হয়। দেশের তরুণ সমাজ নিজেদের শক্তি সম্বন্ধে আত্মবিশ্বাসী হয়। অনেক সময় আমরা নিজেদের চারদিকে নানা সমস্যা দেখে বিপর্যস্ত বোধ করি।
আমাদের দেশেরই একটা কাজের জন্য বড় মাপের একটা স্বীকৃতি পেলে আবার মনোবল মজবুত হয়ে ওঠে। হাজারো সমস্যার মধ্যেও আমরা পৃথিবীর সবার জন্য সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি আবিষ্কার করে দিতে পারছি, এটা জেনে নিজেদের ওপর বিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারি। আমাদের ছেলেমেয়েরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে গিয়ে, বিশেষ করে উন্নত দেশে গিয়ে তাদের সমস্যা সমাধান করে দিয়ে আসতে পারছে, এটা জেনে নিজেদের যোগ্যতা সম্বন্ধে আস্থাবান হয়ে উঠি।
প্রত্যেকটা স্বীকৃতি আরও নতুন স্বীকৃতি অর্জনের জন্য সাহস জোগায়। সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
==================================
আলোচনা- 'তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয়' by by মোহাম্মদ জমির  রাজনৈতিক আলোচনা- 'গণতন্ত্রের স্বার্থে পারস্পারিক সম্মানবোধ' by ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ  শিল্প-অর্থনীতি 'চরম দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে' by জাহাঙ্গীর শাহ  বিশেষ রচনা- মেডির মিরাকল by মাসুদ রহমান  ভ্রমণ- 'ঘুরি দেশে দেশে' by মাহফুজ রহমান  প্রকৃতি- 'বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে হাঁক, দ্বিগুণ হবে বনের বাঘ' by খসরু চৌধুরী  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'সংসদীয় গণতন্ত্র, না ভানুমতির খেল' by সোহরাব হাসান  গল্পালোচনা- 'এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু...' by মুস্তাফা জামান আব্বাসী  ফিচার গল্প- ‘ইতালির রাস্তায় পুলিশ খুঁজতাম' by বাবুল আক্তার  খবর- মৃত ভেবে মাছুমার নিথর দেহ ওরা ফেলে দেয় মহাসড়কে  অদ্ভুত ফিচার- 'বাংলার বিস্ময়ঃ আশ্চর্য কুলাগিনা' by মেহরিন জাহান  স্মরণ- 'ডা. মিলনকে যেন না ভুলি' by পলাশ আহসান  রাজনৈতিক আলোচনা- 'যার যা কাজ' by আতাউস সামাদ  নিবন্ধ- 'অবলা বলে কেন না-বলা থাকবে' by মোস্তফা হোসেইন  ইতিহাস- সিপাহি বিদ্রোহঃ সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে  আন্তর্জাতিক- 'কোরিয়া সীমান্তে তুলকালাম' by দাউদ ইসলাম  আন্তর্জাতিক- 'চেচনিয়ার ‘যুদ্ধবাজ ইমাম’ by মিজান মল্লিক  আন্তর্জাতিক- আমি স্বাধীনতা চাই না: রমজান কাদিরভ  সাহিত্যালোচনা- 'মৃত্যুশতবার্ষিকীর তলস্তয়' by আন্দালিব রাশদী  গল্পসল্প- 'দুঃখটাকে ভাগাভাগি করি' by মুহম্মদ জাফর ইকবাল  গল্প- 'দাদার দোকানে শূন্য দশক' by সালাহউদ্দিন


দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যে
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ ও ইফতেখার মাহমুদ


এই সাক্ষাৎকার'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.