পাকিস্তানে আবারও ন্যাটোর তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা

পাকিস্তানে গতকাল শনিবার আবারও হামলা চালিয়ে ন্যাটোর ২৯টি তেলবাহী ট্যাংকার জ্বালিয়ে দিয়েছে বন্দুকধারী ব্যক্তিরা। গত এক সপ্তাহে এ ধরনের ছয়টি হামলা চালানো হলো।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের প্রত্যন্ত মিতরি এলাকায় গতকালের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।
তালেবান জঙ্গিদের হত্যা করতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী সম্প্রতি পাকিস্তানের আফগান-সীমান্তবর্তী এলাকায় চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জোরদার করেছে। এর প্রতিশোধ নিতেই তারা ন্যাটোর সরবরাহ-যানের ওপর একের পর এক হামলা শুরু করেছে।
মিতরি এলাকার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, ‘ন্যাটোর তেলবাহী ট্যাংকারগুলো রাস্তার ধারের একটি রেস্তোরাঁর পাশে পার্ক করা ছিল। শনিবার খুব সকালের দিকে প্রায় ৩০ জন বন্দুকধারী সেখানে হামলা চালায়। এতে স্থানীয় দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।’
আবদুল মতিন জানান, ওই হামলায় ২৯টি ট্যাংকারে আগুন লেগে যায়। পার্শ্ববর্তী সিব্বি শহর থেকে দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তিনি বলেন, ‘আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারব।’
আবদুল মতিন আরও জানান, ট্যাংকারগুলো আফগানিস্তানে যাচ্ছিল। শুক্রবার রাতে সেগুলো মিতরি শহরে আসে।
রাস্তার পাশের ওই হোটেলের কর্মচারী আবদুল কাদির বলেন, ‘প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। দৌড়ে বাইরে আসার পর দেখি, বন্দুক হাতে একদল মানুষ হোটেলের অন্য কর্মচারী এবং ট্যাংকারের চালকদের কাছে না আসার হুমকি দিচ্ছে। এরপর একের পর এক গুলি করে তারা ট্যাংকারগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়।’ এই হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি।
পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ ঘটনার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কোনো পক্ষকে দায়ী করা যাচ্ছে না। তবে আমি বলতে পারি, সন্ত্রাসীরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ হামলার সময় বন্দুকধারী ব্যক্তি জ্বলন্ত ট্যাংকার লক্ষ্য করে একটি রকেটও নিক্ষেপ করে বলে তিনি জানান।
ন্যাটোর রসদ সরবরাহ পথ খুলে দিয়েছে: পাকিস্তান গতকাল আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর রসদ সরবরাহের বন্ধ করে দেওয়া পথটি আবার খুলে দিয়েছে। দেশটির সীমানা লঙ্ঘনের জন্য ন্যাটো আনুষ্ঠানিকভাবে যে ক্ষমা চেয়েছে, সেটাও মেনে নিয়েছে পাকিস্তান।
ন্যাটোর হেলিকপ্টার হামলায় তিন সেনা নিহত হওয়ার পর পাকিস্তান খাইবার এলাকার তোর্কহামে অবস্থিত ওই সীমান্ত পথটি ১০ দিন আগে বন্ধ করে দেয়।

No comments

Powered by Blogger.