আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাসেল-২ বাস্তবায়ন ২০১২ সাল থেকে

দেশের ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ব্যাসেল-২ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ জন্য সময় নির্ধারণ করেছে ২০১২ সাল।
২০১২ সাল থেকে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাসেল-২ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সর্বশেষ রীতিনীতি অনুসরণ শুরু হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ লক্ষে গত সোমবার দেশের ২৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সার্কুলার জারি করেছে। এই সার্কুলারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাসেল-২ বাস্তবায়নের পথ নকশা প্রদান করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে যে ইতিমধ্যে দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাসেল বাস্তবায়ন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এখন চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আন্তর্জাতিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রয়োগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য খসড়া দিকনির্দেশনা প্রস্তুত করা হবে।
খসড়া দিকনির্দেশনা প্রস্তুত হওয়ার পর আগামী বছর অর্থাৎ ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে বিবরণী দাখিল শুরু করতে হবে।
এক বছর ধরে পরীক্ষামূলক এই বিবরণী দাখিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টির ওপর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বাড়ানো হবে। এই কাজে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লে তা সংশোধনও করা হবে।
পরীক্ষামূলক সময়কালে চিহ্নিত অসঙ্গতি বা সমস্যা নিরসন করে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রস্তুত করা হবে। আর ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা সার্কুলার আকারে প্রকাশ করা হবে।
এরপর ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চূড়ান্তভাবে ব্যাসেল-২ দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বিবরণ দাখিল শুরু করবে। সে অনুযায়ী তাদের মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ ঝুঁকির জন্য প্রমিত পদ্ধতি (স্ট্যান্ডার্ডাইজড অ্যাপ্রোচ), বাজার ঝুঁকির জন্য প্রমিত বিধিভিত্তিক পদ্ধতি (স্ট্যান্ডার্ডাইজড রুল বেজড অ্যাপ্রোচ) এবং পরিচালনগত ঝুঁকির জন্য মৌলিক নির্দেশক পদ্ধতি (বেসিক ইন্ডিকেটর অ্যাপ্রোচ) মেনে ব্যাসেল-২ বাস্তবায়ন করবে।
আর ২০১৫ সালের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রসর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করবে বলে পথ নকশায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ব্যাসেল-২ হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজির পর্যাপ্ততার ন্যূনতম মান নির্ধারক। ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টের (বিআইএস) আওতায় ব্যাসেল কমিটি অন ব্যাংক সুপারভিশন আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য একগুচ্ছ নিয়ন্ত্রণবিধি প্রণয়ন করে যা ব্যাসেল-১ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে তা সংশোধন ও হালনাগাদ করে ব্যাসেল-২ করা হয়।
ব্যাসেল-১ বিধিতে ঋণের ঝুঁকির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর ব্যাসেল-২ বিধিতে বিনিয়োগ ও ঋণের বিপরীতে সৃষ্ট ঝুঁকি মোকাবিলায় ন্যূনতম কী হারে কী পরিমাণ পুঁজি সংরক্ষণ করতে হবে, তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.