যুক্তরাষ্ট্র-দ.কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া শেষ

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে চার দিনের যৌথ সামরিক মহড়া গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু যুদ্ধের হুমকি উপেক্ষা করে জাপান সাগরে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের উদ্দেশে আগামী সোমবার সিউলে মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা আলোচনায় বসবেন বলে জানা গেছে।
উত্তর কোরিয়া গত মঙ্গলবার কোরিয়া যুদ্ধের ৫৭তম বার্ষিকী পালন করেছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত এক কনসার্টে অংশ নেন দেশটির নেতা কিম জং ইল।
কয়েক বছরের মধ্যে দুই দেশের সবচেয়ে বড় এই সামরিক মহড়ায় মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন, অন্য ২০টি যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজ, চারটি এফ-২২ র‌্যাপটর স্টিলথ যুদ্ধবিমানসহ ২০০টি বিমান ও আট হাজার সেনা অংশ নেন। দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় যৌথ মহড়া শেষ হয়। মার্কিন একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আমরা যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছি। যাতে দক্ষিণ কোরিয়া যেকোনো সময় উত্তর কোরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে তাদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সূত্র জানায়, গত রোববার থেকে কোরিয়া সীমান্তে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সামরিক তৎপরতা দেখা যায়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর কোরিয়া দেশটিতে সাইবার হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে সিউলের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার। প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ দূত রবার্ট এইনহর্ন শিগগিরই সিউল পৌঁছাবেন। উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপসহ আরও কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আগামী সোমবার মার্কিন ও কোরিয়ার কর্মকর্তাদের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিএনএ গতকাল জানায়, কোরিয়া যুদ্ধের ৫৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কনসার্টে যোগ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং ইল। এ সময় ‘২৭ জুলাই আমাদের বিজয় দিবস’, ‘আমাদের নেতা সবচেয়ে ভালো’ প্রভৃতি স্লোগানে প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানানো হয়।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধজাহাজ চেওনান গত ২৬ মার্চ পীতসাগরে ডুবে যায়। এতে ৪৬ জন নাবিকের মৃত্যু হয়। ২০ মে পাঁচ জাতির সমন্বয়ে গঠিত একটি তদন্ত দলের প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার টর্পেডোর আঘাতে ওই যুদ্ধজাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। উত্তর কোরিয়া অবশ্য বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.