শেয়ারের বিপরীতে ঋণদানে নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ

মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে শেয়ারের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার নিয়ম-নীতি যথাযথভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণ বিতরণে বিচক্ষণ ও দূরদর্শী হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের।
বাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ সময় বলা হয়, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো এতে ব্যর্থ হলে এসইসি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।
বৈঠক শেষে এসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়া সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, এসইসি চায় বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে। এ ব্যাপারে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ভাবনা জানতেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও বৈঠক করা হবে।
এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সংস্থাটির সদস্য মনসুর আলম ও ইয়াসিন আলী, নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, এ টি এম তারিকুজ্জামান, সাইফুর রহমান, ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরিফ খানসহ বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, এসইসির পক্ষ থেকে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিদের কাছে গত দুই দিনের লেনদেন ও সূচক বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দাম বাড়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ রয়েছে কি না, তাও জানতে চায় এসইসি।
এর জবাবে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিদের প্রায় সবাই বলেন, বাজারে উত্থান-পতন একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। আর ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেন ব্যাংকিং খাতের অর্ধবার্ষিক পরিচালন মুনাফার কথা।
তাঁরা আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সংবাদপত্রের মাধ্যমে বেশির ভাগ ব্যাংকের অর্ধবার্ষিক পরিচালন মুনাফার তথ্য বাজারে চলে এসেছে। প্রকাশিত এসব খবরে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর মুনাফা তুলনামূলক ভালো। এটা ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দাম বাড়াতে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে।
এদিকে গতকাল সকাল থেকেই বাজারে এ বৈঠকের খবর ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে নানা ধরনের গুজব। এসব গুজবের মধ্যে অন্যতম হলো: এসইসি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শেয়ারের মূল্য আয়ের অনুপাত (পিই) আরও কমাতে হতে পারে—এ গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। আর তাই সকালের দিকে প্রথম এক ঘণ্টা বাজার বাড়লেও শেষ দিকে পড়ে যায়।
বাজার পরিস্থিতি: গতকাল লেনদেন শুরু হওয়ার প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইয়ের সাধারণ সূচক প্রায় ৬০ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৩৪০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু এর পর থেকেই সূচক কমতে শুরু করে। দিন শেষে সূচক আগের দিনের পর্যায়ে নেমে আসে।
তবে লেনদেন আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ২৪৬ কোটি টাকার শেয়ার।
সিএসইতে সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৬৩৮ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ১৬৯ কোটি টাকার শেয়ার।

No comments

Powered by Blogger.