পশ্চিমবঙ্গকে এবার হারাতে পারবে বাংলাদেশ?

ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমস নিয়ে কলকাতার ক্রীড়াঙ্গনে কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি প্রথমবার। ২০০৭ সালের সেই সফরটা বাংলাদেশ দল মনে রেখেছে মূলত রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে পাওয়া বিপুল অভ্যর্থনা। পরের বছর পশ্চিমবঙ্গ দলকেও একইভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশে। এটাই এই গেমসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক।
২০০৯ সালে গেমসটা হয়নি। ২৫-২৭ মার্চ তৃতীয় গেমসে খেলতে আজ রাতে সড়কপথে কলকাতায় রওনা হচ্ছে বাংলাদেশ দল। দলটি প্রায় ২০০ সদস্যের, খেলোয়াড় ১৪০ জন (পুরুষ ৮৭, মহিলা ৫৩)।
খেলা মোট দশটি। নতুন যুক্ত হয়েছে তিনটি খেলা: ব্যাডমিন্টন (পুরুষ-মহিলা), জুডো (পু.), জিমন্যাস্টিকস (পু.-ম.)। বাদ পড়েছে ভলিবল ও ক্রিকেট। থাকছে অ্যাথলেটিকস (পু.-ম.), সাঁতার (পু.-ম.), ফুটবল (ম.), খো খো (পু.), কাবাডি (পু.), বাস্কেটবল (পু.), শ্যুটিং (পু.-ম.)। ২৪ মার্চ তিন দিনের গেমস উদ্বোধন নেতাজি ইনডোরে। শ্যুটিং আসানসোলে হবে। বাকি সব খেলা কলকাতায়।
এই গেমসের সঙ্গে ‘সম্প্রীতি’, ‘বন্ধুত্ব’ শব্দগুলোই বেশি মানায়। তার পরও এটি যেহেতু প্রতিযোগিতাও তাই সোনা-রুপার হিসাবও চলে আসে। জয়-পরাজয় ধরলে এখন পর্যন্ত ফল ১-১। প্রথমবার ৮ খেলায় পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ৩৮ সোনা। বাংলাদেশ ৩০ সোনা। দ্বিতীয়বার নিজ মাঠে শুধু মান বাঁচেনি বাংলাদেশের, ৯ খেলায় পশ্চিমবঙ্গকে বড় ব্যবধানে হারানোর ‘তৃপ্তি’ও আছে। বাংলাদেশ সেবার পেয়েছে ৪৫ সোনা, পশ্চিমবঙ্গ ২৪ সোনা। এবার ৬১ সোনা, পশ্চিমবঙ্গকে তাদের মাঠে এবার হারিয়ে আসতে পারবে বাংলাদেশ দল?
বাংলাদেশ দল কিন্তু হারিয়ে আসার স্বপ্ন নিয়েই যাচ্ছে। কেননা, এটা দেশের মর্যাদার প্রশ্নও। কাল বিওএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বললেন, ‘৫০ ভাগের ওপরে সোনা আশা করি আমরা।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, নতুন ঢোকা বাস্কেটবল-জুডো ভালো করতে পারে। আগের দুবারের চ্যাম্পিয়ন খো খোতে এবারও ভালো করার আশা। কাবাডিতেও তা-ই। তবে পশ্চিম বাংলা ব্যাডমিন্টনে খুব ভালো হওয়ায় এই খেলায় কী হবে বলা যাচ্ছে না। জিমন্যাস্টিকসেও তেমন জোরালো আশা নেই।
২১ সদস্যের শ্যুটিং দলে আছেন দেশের সেরা সব শ্যুটারই। এখানে ভালো না করতে পারাটা তাঁদের জন্য হবে বিব্রতকর। এসএ গেমসে ভারতীয় দলে মাত্র দুই-তিনজন সাঁতারু থাকায় বাংলাদেশ দল ধরে নিচ্ছে, সাঁতারে ভালো ফল হবে। তবে অ্যাথলেটিকসের দলের অবস্থা ভালো নয়। এসএ গেমসে বাজে ফল করা অ্যাথলেটদের জন্য এই সফর পরীক্ষাই বটে।
গত মাসে বাংলাদেশে দক্ষিণ এশীয় গেমস হয়েছে। মাসখানেক পাওয়া গেছে ইন্দো-বাংলার প্রস্তুতির জন্য। যদিও সময়টা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি নানা কারণে। তার পরও বিওএর কোচিং কমিটির প্রধান মিজানুর রহমানের (মানু) আশাবাদ, ‘কিছু ছোটখাটো সমস্যা থাকলেও আশা করি গেমসে আমাদের দল ভালো করবে।’
গেমসটা এবার শুধু বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের নয়। বিওএর মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদ জানালেন, ‘এটা সব বাংলাভাষীর গেমস। আসাম, ত্রিপুরার বাংলাভাষীরাও পশ্চিমবঙ্গ দলের হয়ে এবার খেলছে।’

No comments

Powered by Blogger.