সংকট সমাধানে ব্যর্থ হলে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা: যুক্তরাষ্ট্র

জেনেভা বৈঠকে ইরান তার নতুন পরমাণুকেন্দ্র পরিদর্শন করতে দিতে রাজি হওয়ার পর এবার ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে কথা বললেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। তিনি বলেছেন, ইরান ‘আন্তরিকভাবেই’ তার নতুন পরমাণুকেন্দ্র পরিদর্শন করতে দিতে রাজি। ইরান সব সময় প্রকাশ্যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। ওই কর্মসূচির ব্যাপারে তারা কখনোই গোপনীয়তার আশ্রয় নেয়নি। নতুন পরমাণুকেন্দ্রের ব্যাপারেও তারা যথাযথ সময়েই আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থাকে (আইএইএ) জানিয়েছে।
ইরান তার পরমাণু সংকট ‘কূটনৈতিকভাবে’ সমাধানে ব্যর্থ হলে মার্কিন কংগ্রেস তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। মার্কিন সিনেটের ব্যাংকিং কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর ক্রিস্টোফার ডড বলেছেন, ‘ইরান সংকট মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে কংগ্রেস প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ইরানের পরিশোধিত তেল রপ্তানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। এ ব্যাপারে আগামী মঙ্গলবার সিনেটের ব্যাংকিং কমিটিতে শুনানি হবে।
জেনেভায় গত বৃহস্পতিবার ছয় বিশ্ব-পরাশক্তির সঙ্গে ইরানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ গতকাল শনিবার এ ব্যাপারে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম তাদের আগের নীতি থেকে সরে আসেনি। তারা অভিযোগ করেছে, ইরান গোপনে পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে। ইরান সম্পর্কে ওই প্রচারণা মানুষের মগজে না ঢোকা পর্যন্ত পশ্চিমা গণমাধ্যম বারবার ওই অভিযোগ করে যাবে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচিসংক্রান্ত প্রধান আলোচক সাইদ জলিলি আবারও বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ইরানের বৈধ ও নৈতিক অধিকার। ইরান এই কর্মসূচি ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। জেনেভা বৈঠক শেষে গত শুক্রবার দেশে ফিরে তেহরান বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। ওই বৈঠকে ইরানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন জলিলি। তিনি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ইরানের শতভাগ বৈধ কর্মকাণ্ডেরই একটি অংশ। শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইরান এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
জেনেভা বৈঠকের পর পরমাণু সংকট নিরসনে ওয়াশিংটন ও তার মিত্র দেশগুলো ইরানের প্রতি দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, এ ব্যাপারে তেহরান কালক্ষেপণ করলে তাদের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে এবং বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হবে।
জাতিসংঘ আণবিক সংস্থার (আইএইএ) প্রধান মোহাম্মদ এল-বারাদির গতকাল শনিবার রাতেই ইরান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ইরানের আণবিক জ্বালানি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহির সঙ্গে তিনি সাক্ষাত্ করবেন।
ইরানের কোম নগরে একটি সামরিক ঘাঁটির কাছে নতুন ওই পরমাণুকেন্দ্র স্থাপনের কথা তেহরান গত ২১ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে আইএইএকে জানিয়েছিল। জেনেভা বৈঠকে ইরান তার নতুন ওই পরমাণুকেন্দ্র পরিদর্শনে জাতিসংঘকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.