দুর্নীতির অভিযোগে জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক by আরিফুল ইসলাম
দেশটির সরকারি নিউজ এজেন্সি বারনামা সহ প্রায় সবকটি গণমাধ্যম এবং রয়টার্স সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ সরানোর ঘটনায় নাজিব বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, তহবিল থেকে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না।
গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরের আদালত প্রাঙ্গণে তার পক্ষে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন তার ছেলে মোহাম্মদ নিজার। চিঠিতে ৭১ বছর বয়সী নাজিব রাজাক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হিসাবে আমার তত্ত্বাবধানে মালয়েশিয়ার প্রধান উন্নয়ন তহবিল ওয়ানএমডিবির বিপর্যয় ঘটেছে জেনে প্রতিদিন আমার কষ্ট হয়। এ জন্য আমি মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইছি। তিনি আরও বলেন, তিনি যে সৌদি আরব থেকে তহবিল পেয়েছিলেন তা ছিলো রাজনৈতিক অনুদান হিসেবে প্রাপ্ত। যদিও পেট্রোসৌদির দুই কর্মকর্তা সুইস আদালতে ১এমডিবি তহবিল আত্মসাতের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং পরে তারা তাদের অপরাধ অস্বীকার করেছেন।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন নাজিব ১এমডিবি নামে একটি তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই তহবিলের উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তারা এবং তাদের সহযোগীরা প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা অন্তত ছয়টি দেশে দুর্নীতির দায়ে তদন্তের মুখে পড়ে। পরে বিশ্বাস ভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
২০২২ সালে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং সাবেক ১এমডিবি ইউনিট এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল থেকে অবৈধভাবে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং এবং ২১ কোটি রিংগিত জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার প্রাক্তন রাজার নেতৃত্বে এক ক্ষমা বোর্ড তার শাস্তি অর্ধেক করে দেওয়া হলে সম্প্রতি সে ক্ষমা জাতির কাছে নি:শর্তভাবে ক্ষমা চাইলে তার ক্ষমা চাওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
এদিকে নাজিব আরও কয়েকটি দুর্নীতির মামলার মুখোমুখি আছেন। গত পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া ১এমডিবির দুর্নীতি মামলায় নাজিবকে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে হবে কিনা তা আগামী ৩০ অক্টোবর, বুধবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কুয়ালালামপুরের হাইকোর্টের রায়ের জন্য।
No comments