দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকে পড়ল জাপানি যুদ্ধজাহাজ

চীনকে বার্তা দিতে প্রথমবারের মতো সংবেদনশীল তাইওয়ান প্রণালীতে একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে জাপান । জাপানের ইয়োমিউরি শিম্বুন সংবাদপত্র একাধিক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদন করেছে ।  টোকিওর দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিজেদের জাহাজ চলাচলের অধিকারের ওপর জোর দিতেই এমন পদক্ষেপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথমবার তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানি যুদ্ধজাহাজ জেএস সাজানামি-কে  দেখা যায়। পূর্ব চীন সাগর থেকে বৃহস্পতিবার জাপানি নৌসেনার সাজানামি নামে ডেস্ট্রয়ার গোত্রের ওই যুদ্ধজাহাজটি তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি সূত্র জানিয়েছে যে  প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা যুদ্ধজাহাজটিকে তাইওয়ান প্রণালীতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধজাহাজের উত্তরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রণালীতে গত বুধবার অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের সামরিক নৌযানও  দেখা গিয়েছিল।

ঘটনাচক্রে, তিনটি দেশই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ‘আমেরিকার ঘনিষ্ঠ’ এবং ‘চীন  বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, জাপানি যুদ্ধজাহাজটি তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করার সময় এটিকে পর্যবেক্ষণে  রেখেছে চীনা সামরিক বাহিনী। প্রসঙ্গত একই দিনে চীন প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে  একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে পরীক্ষা করে । যুক্তরাষ্ট্র এবং তাইওয়ান উভয়ই বলেছে যে, 'তাইওয়ান প্রণালী' একটি প্রধান শিপিং এবং বাণিজ্যিক সমুদ্রপথ। এটি আন্তর্জাতিক জলসীমার অংশ এবং সব ধরনের নৌ জাহাজের জন্য উন্মুক্ত। তবে প্রণালীর সার্বভৌমত্ব ও এখতিয়ার দাবি করা বেইজিং এর সঙ্গে একমত নয়। কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরই ছিল একমাত্র বিদেশি নৌবাহিনী যারা নিয়মিত এই প্রণালী অতিক্রম করত। তবে সম্প্রতি এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বৃটেন ও ফ্রান্স। দুই সপ্তাহ আগে জার্মানি কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই প্রণালী দিয়ে নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ চালিয়েছে। গত সপ্তাহে, প্রথমবারের মতো চীনের লিয়াওনিং বিমানবাহী জাহাজ তাইওয়ানের কাছে দুটি জাপানি দ্বীপের মধ্যে যাত্রা করেছিল। এর সঙ্গে ছিল দুটি ডেস্ট্রয়ার। বেইজিং,   তাইওয়ানকে তার ভূখণ্ডের অংশ হিসাবে দেখে, পানির  উপরও তারা এখতিয়ার দাবি করে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য অনেক দেশের মতে, তাইওয়ান প্রণালীতে এই ধরনের টহল অনুশীলন স্বাভাবিক ঘটনা ।
সূত্র : dw

mzamin

No comments

Powered by Blogger.