ফিলিস্তিনিদের তৃতীয় ইন্তিফাদার কথা by মো: বজলুর রশীদ

ইন্তিফাদা আরবি শব্দ নাফাদ থেকে উৎপত্তি। এর মানে কাঁপানো, জাগরণ, আড়মোড়া ভেঙে ওঠা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, বিদ্রোহ ও মুক্তি লাভ করা ইত্যাদি। আধুনিককালে প্রথম ১৯৫২ সালে মিসরের বিপ্লবের অনুসরণে ইন্তিফাদা শব্দ ব্যবহার করা হয় ইরাকে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে যখন সোসালিস্ট ও কমিউনিস্ট দল রাস্তায় বিক্ষোভ করতে নামে। ফিলিস্তিনিদের কাছে ইন্তিফাদা মানে পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরাইলিদের জুলুমের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণ-আন্দোলন।
আরববিশ্বে আরো অনেক ইন্তিফাদা রয়েছে যেমন- ১৯৬৫ সালের বাহরাইন ইন্তিফাদা, সাহারা ইন্তিফাদা ২০০৫, আরব বসন্তকেও ইন্তিফাদা বলা হয়, এর আরেক নাম তিউনিসিয়া ইন্তিফাদা, ২০১১ সালের ইয়েমেনি ইন্তিফাদা, মিসরীয় ইন্তিফাদা ২০১১ ইত্যাদি। ফিলিস্তিনে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ প্রথম ইন্তিফাদা এবং ২০০০ থেকে ২০০৫ দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময়কাল ধরা হয়। জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নতুনভাবে ফিলিস্তিনিদের ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছেন। তৃতীয় ইন্তিফাদার ডাক এটি। ৮ ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে ইন্তিফাদার শুরুর দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইহুদিবাদী শত্রুদের’ বিরুদ্ধে এই ইন্তিফাদা। ট্রাম্প যেন তার ঘোষণার জন্য পরিতাপ করে এটাই আমাদের পণ। ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনিরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। ইহুদি পুলিশের সাথে রাস্তায় রাস্তায় সংঘর্ষ হচ্ছে। সেনারা বেথেলহেমে জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করছে। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা হরতাল ডেকেছে, স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে। আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এসব বিক্ষিপ্ত ঘটনায় শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত, ১৫ জন নিহত এবং ৯০০ জন গ্রেফতার হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭, প্রথম ইন্তিফাদার ৩০ বছর পূর্তি হলো। দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে এটি হলো ইতিহাসখ্যাত একটি প্রতিরোধ ও জাগরণ। ফিলিস্তিনিদের জায়গা জমি এ সভ্য যুগে কিভাবে দখল করে রাখা যায়, এটিই বিশ্ববাসীর কাছে বড় প্রশ্ন। ইন্তিফাদার মাধ্যমে এ বিষয়টি বিশ্বসভায় জানিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ প্রবণতা হঠাৎ করে পরিবর্তিত হয় যখন ৯ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদা শুরু হয়। আইজাক রবিন ইন্তিফাদা থামানোর জন্য ‘বজ্রমুষ্টি’ নীতি গ্রহণ করেন। তিনি আন্দোলনরত ফিলিস্তিনিদের ‘হাড়গোড় ভেঙে দেয়ার’ নির্দেশ দেন। অথচ আমেরিকার প্রচার মাধ্যম তাকে ‘শান্তির পায়রা’ বলে প্রচার করে। বীর জেইত বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলনের পক্ষে কিছু কাজ করা হয়, তা বন্ধ করে দেয়া হলো। অনেক ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। ইন্তিফাদা খুব তাড়াতাড়ি তার গতিপথ সৃৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। প্রথম ইন্তিফাদায় ২৫০,০০০ ফিলিস্তিনি আহত হলেও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পরিচালিত হতে শুরু করে ফিলিস্তিনিদের গণ-আন্দোলন। ফিলিস্তিনিরা যেন মুক্তির লক্ষ্যে দিশা খুঁজে পায়। কঠিন সংগ্রামে আত্মত্যাগে উজ্জীবিত হতে শেখে। দেশপ্রেমমূলক কবিতা কারাগার থেকে গোপনে পাচার হয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। সঙ্গীত শিল্পীরা দেশপ্রেমমূলক সঙ্গীত ও সুর সৃষ্টি করেন। এসব গান টেপ ও সিডিতে দেদার প্রচারিত হতে থাকে। বীর জেইত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শরিফ কানানা ‘ইন্তিফাদা জোকস’ কালেকশান প্রকাশ করেন। ফিলিস্তিনিরা আগে কী বলত, আর এখন তাদের জোকসের কী পরিবর্তন তা এই কালেকশন পড়লে বোঝা যাবে। চেতনা ও মূল্যবোধের যে পরিবর্তন ও অগ্রগতি তা এখানে বিধৃত হয়েছে। ওই সময়ে ইসরাইলি সেনারা স্কুল বন্ধ করে দেয়; পপুলার কমিটি ঘরের ভেতর স্কুল বানায়।
সেগুলোও একসময় বন্ধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হয়; তখন পপুলার কমিটি আন্ডারগ্রাউন্ড স্কুল বানায়। মনে করা হয়, ইন্তিফাদা ফিলিস্তিনি সংগ্রামের ‘সোনালি যুগ’। ফিলিস্তিনিরা অনেক শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে এবং তাদের গন্তব্যে পৌঁছার সম্মিলিত ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদাকে আল আকসা ইন্তিফাদাও বলা হয়। এটা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের উত্থান যা শুরু হয় সেপ্টেম্বরের ২০০০ সালে যখন অ্যারিয়েল শ্যারন টেম্পল মাউন্ট পরিদর্শনে যান। ফিলিস্তিনিরা এটাকে খুবই অবমাননাকর মনে করে। কেননা টেম্পল মাউন্ট হলো মুসলমানদের হারাম আল শরিফ। এটি জেরুসালেমের পুরনো শহরের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলোর অন্যতম। কয়েক হাজার বছর ধরে এটি ধর্মীয় স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মুসলমান, খ্র্রিষ্টান ও ইহুদিরা এটা ব্যবহার করেছে। স্থানটিতে আল আকসা মসজিদ, কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামের স্থাপনাগুলো অবস্থিত। চারটি ফটকের সাহায্যে এখানে প্রবেশ করা যায়। বতর্মানে এগুলো ইসরাইলি পুলিশের পাহারাধীন। আল আকসা প্রাঙ্গণ থেকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হয়। ফিলিস্তিনিরা পাথর দিয়ে সৈন্যদের অবরোধ আর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ইসরাইলি সৈন্যরা গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে। এক সময় ফিলিস্তিনিরা আত্মঘাতী বোমা ও বন্দুক হামলা চালায়। ইসরাইলিরা চালায় ট্যাংক ও বিমান হামলা। উভয় পক্ষে হতাহত বেড়ে যায়। ৬৪ জন বিদেশীসহ তিন হাজার ফিলিস্তিনি এবং এক হাজার ইসরাইলি মারা যায়। মিসরের শারম আল শেখে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ সালে মাহমুদ আব্বাস ও অ্যারিয়েল শ্যারনের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে এই ইন্তিফাদার গতি রুদ্ধ হয়। ইসরাইলিরা এটাকে অসলো যুদ্ধ এবং কখনোবা আরাফাতের যুদ্ধ বলে ডাকে। অসলো চুক্তি ১৯৯৩ এবং ১৯৯৫ তে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তিতে গাজার কিছু অংশ এবং পশ্চিম তীর থেকে বিভিন্ন ধাপে সেনা প্রত্যাহারের উল্লেখ ছিল এবং ফিলিস্তিনি অথরিটি এই দুই স্থানে স্বাধীনভাবে প্রশাসন পরিচালনার সিদ্ধান্তও ছিল। কথা ছিল, ফিলিস্তিনিরা পাঁচ বছর পরীক্ষামূলকভাবে এলাকা শাসন করবে এবং এই সময়ের মধ্যে স্থায়ী চুক্তি করা হবে। এ চুক্তির কার্যকারিতা বিনষ্ট করার জন্য ফিলিস্তিনিরা ও ইসরাইলিরা একে অপরকে দোষ দিতে থাকে, কেননা এই অসলো শান্তি প্রচেষ্টা এক্কেবারে নস্যাৎ হয়ে যায়। চুক্তির পরই ৪০৫ ফিলিস্তিনি ও ২৫৬ ইসরাইলি নিহত হয়। দ্বিতীয় ইন্তিফাদা কোন তারিখে শেষ হয় তা নির্ধারণ করা কষ্টকর। অসুস্থ ইয়াসির আরাফাত ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে মৃত্যুবরণ করেন। তিন দশক ধরে তিনি ফিলিস্তিনিদের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুতে ফিলিস্তিনিরা গতি হারিয়ে ফেলে। এরপর ফাতাহ-হামাস সংঘর্ষ বিস্তার লাভ করে। ২০০৫ সালের শারম আল শেখ বৈঠকে ইন্তিফাদার ইতি টানেন আব্বাস। অ্যারিয়েল শ্যারন ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেন। পশ্চিম তীর থেকে ইহুদিরা চলে যায়। ৮ ফেব্রুায়ারি ২০০৫ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাস ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যদিও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ এর বিরুদ্ধাচারণ করে। ট্রাম্পের উসকানিমূলক ঘোষণা এখন ফিলিস্তিনে তৃতীয় ইন্তিফাদার জন্ম দিতে পারে। এতে আরো ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করতে পারে, ভূমি-ঘর-সম্পদ আরো ধ্বংস হতে পারে। হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়া ৭ ডিসেম্বর নতুন ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছেন এবং হামাসের সকল ইউনিটকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশসহ মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রক্রিয়া ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের ঘোষণার বহু দিক রয়েছে। জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানীরূপে স্বীকৃতির এ ঘোষণা মানবিক মূল্যবোধের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। এই ঘোষণার ফলে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ক্ষমতাকে সংহত করা হয়েছে। অপর দিকে নিজের ঘরেও ট্রাম্পের ক্ষমতাকে সংহত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আরব বিশ্বের চিহ্নিত ‘বন্ধু’ গুলো মূলত কি করে, তাও খতিয়ে দেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইরান স্বাভাবিকভাবেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ও মুসলিম বিশ্বের কথা বলবে। তখন ইরানকে একহাত দেখে নেয়ার ও সতর্ক করার পুরো সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইসরাইল তো বলেই দিয়েছে, এখন ইরানের পালা। ইরান পরমাণু বোমা তৈরির চেষ্টা করলেই ইসরাইল ইরানে আক্রমণ চালাবে। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের টনি ব্লেয়ার বলেই দিয়েছেন, ইরাক যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ইরানের ওপরও প্রয়োগ করা হবে। ট্রাম্প এবং হিলারি উভয়ের পরিবারে আসল ইহুদি রয়েছে এবং উভয়েই ইসরাইলকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যে এ প্রতিশ্রুতিতে বেশি এগিয়ে তা জানিয়ে দেয়া এবারের জেরুসালেম ঘোষণার একটি কারণ। ট্রাম্পের আগামী নির্বাচনে ইসরাইলি সমর্থনের জন্য কোনো অনুরোধ আর জানাতে হবে না কিংবা ইসরাইল-প্রীতির বিষয়ে রিপাবলিকানদের আর কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না।শুরুতে ফিলিস্তিনিরা মনে করত- আরব রাষ্ট্রগুলো সঙ্কট থেকে তাদের উদ্ধার করবে। কিন্তু পরে দেখা গেল আরব রাষ্ট্রগুলো বিশেষ করে মিসরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল সিসি ইসরাইলের সাথে কোনো সঙ্কট সৃষ্টি করতে চান না। জর্ডান ফিলিস্তিনি-উদ্বাস্তু শিবির রাখতে চায়নি। তখন প্যালেস্টাইনি স্যালভেশান ফ্রন্ট গঠিত হয়। গাজা থেকে এর প্রথম সংগ্রাম শুরু হয়। গাজার ক্যাম্পগুলোর প্রশাসন মিসর ও কুয়েত দেখভাল করত। ১৯৫৭ সালে কুয়েতে ইয়াসির আরাফাত,
খলিল আল উজির ও সালাহ খালাফ আল ফাতাহ গঠন করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের মাধ্যমে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়। ফলে ইসরাইল তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। ১৯৬৭ সালে মিসরীয় প্রেসিডেন্ট নাসের পিএলও প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের পর ইসরাইল ৬,৬৫,০০০ ফিলিস্তিনিকে উদ্বাস্তু বানায়। তখন পিএলও স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং একটি সেকুলার ও গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান একত্রে বসবাস করবে এরূপ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্য ছিল, ফলে ইসরাইলকে উৎখাতের উদ্দেশ্য তিরোহিত হয়। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই ১৯৪৮ সালে এক লাখ ফিলিস্তিনি দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছে। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফিলিস্তিনিদের ওপর মহাদুর্যোগ নেমে এলেও অন্য কোনো আরব দেশ দুঃখের ভাগীদার হয়নি। এমনই পরিবেশে ট্রাম্পের জেরুসালেম ঘোষণা ফিলিস্তিনি আরবদের নতুন করে জাগরণের সঞ্চার করেছে বৈকি! ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে শান্তি প্রচেষ্টাকে এগিয়ে না নিয়ে বরং হত্যা করেছেন। ফলে পশ্চিম তীর ও গাজাসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত, মুসলমানদের পবিত্র দিনগুলোতে এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তেজিত জনতা ইসরাইলি সেনাদের সাথে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ইসরাইলি সেনা হতাহত হয়নি। আগের দু’টি ইন্তিফাদায় ইসরাইলি সেনা ও সম্পদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় ফিলিস্তিনিরা ৫৭৭ জন ফিলিস্তিনিকেও হত্যা করেছিল। এর মধ্যে ৫০ শতাংশকে হত্যা করা হয় ইসরাইলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে। এ দিকে সহায় সম্বলহীন ফিলিস্তিনিরা বেঁচে থাকার তাগিদে ইসরাইলের পক্ষে কাজ করেছে। এখন এর সংখ্যা আরো বেশি। অনেকে একটি রুটির জন্য পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য এসব করেছে। চেক পোস্টে নিজের মাকে ইসরাইলি হায়েনার হিংস্রতা থেকে বাঁচানোর জন্য ইহুদিদের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। প্রথম ইন্তিফাদার ৩০ বছর পর ফিলিস্তিনিদের আগের সে উদ্যম, শক্তি, সাহস, বিত্ত ও সংগ্রামী চেতনা আর নেই। ফিলিস্তিনিরা সহায়-সম্বলহীন একটি জাতিতে পরিণত হয়েছে। ইসরাইল খুব তাড়াতাড়ি তিন লাখ ইহুদিকে অধিকৃত আরবভূমিতে বসত নির্মাণ করে বসবাসের সুযোগ করে দেবে। তখন ওই এলাকায় ফিলিস্তিনিরা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে। এমন প্রেক্ষাপটে আরো একটি পরিপূর্ণ ইন্তিফাদার পরিস্ফুটন হবে কি না তাতে সংশয় রয়ে গেছে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার

No comments

Powered by Blogger.