টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না মুক্তিযোদ্ধা বারেক

স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযাদ্ধা আব্দুল বারেক অস্ত্র হাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে করেছেন। কিন্তু রণাঙ্গণের সেই মানুষটি কি কখনো ভেবেছেন শেষ বয়সে এসে হুইল চেয়ার তার সঙ্গী হবে। বছর তিনেক আগে গোসলখানায় পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভেঙে যায় ষাটোর্ধ্ব বয়সী এই মুক্তিযোদ্ধার। দুইবার অস্ত্রোপচার করেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। চিকিৎকরা বলেছেন, আরেকবার অস্ত্রোপচার করলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে অস্ত্রোপচার করাতে পারছেন না আব্দুল বারেক। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারেক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ৩ নং সেক্টর কমান্ডার এ কে এম শফিউল্লাহ ও সেকশন কমান্ডার নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। আব্দুল বারেকের ছেলে কাজল মিয়া বলেন,  ভিটেমাটি বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা করিয়েছি। এখনও তিনি সুস্থ হননি। হুইল চেয়ারেই বাবার দিন কাটে। চিকিৎসকরা আবারও অস্ত্রোপচার করার কথা বলেছেন। কিন্তু টাকা পাবো কই। আব্দুল বারেকের আব্দুল স্ত্রীও অসুস্থ। তার তিন ছেলে কৃষি কাজ করেন। আব্দুল বারেক বলেন, যখন সুস্থ ছিলাম তখন সবাই আমার খবর নিতো। 
এখন অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে থাকলেও কেউ খোঁজ নেয় না। যুদ্ধের মাঠে মরে গেলেও কোনো আফসোস থাকতো না। এখন চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরতে হচ্ছে। তবে আমার খুব ইচ্ছে হয় জীবনের শেষ দিনগুলোতে যদি নিজের পায়ে হাঁটতে পারতাম। এ বিষয়ে তেলিহাটি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল আউয়াল মৃধা বলেন, ‘বারেকের শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নয়। তার চিকিৎসার জন্য সরকারি সহায়তা চেষ্টা করেও পাইনি। পরে বিভিন্ন সময় নিজেরাই টাকা তুলে তার চিকিৎসায় সহায়তা করেছি। সরকার যদি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতো তাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা শান্তি পেতাম।’ এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘উনাকে প্রতি মাসের ভাতা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন করলে তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।’ শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনা আকতার বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেকের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে চিকিৎসা সহায়তা করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.