ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত খুনি

নয় মাস আগে পুলিশ খিলক্ষেতের টানপাড়ায় সীমানাপ্রাচীরের পাশে নর্দমা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মাথাবিহীন ও বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছিল। এর তিন দিনের মাথায় চলতি বছরের ২৫ মার্চ জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে লাশটি মিরপুর ১২ নম্বরের বাসিন্দা কুলসুম আক্তারের (২৮) বলে শনাক্ত হয়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা যুবক এনামুল হকের সঙ্গে কুলসুমের ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে গতকাল বুধবার পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, এনামুলই খুনি। গত ২২ মার্চ পুলিশ বস্তাবন্দী ওই লাশ উদ্ধার করে। গামছা দিয়ে লাশটির হাত-পা বাঁধা এবং বিবস্ত্র ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বিমানবন্দর থানায় হত্যা মামলা করে। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এজাজ শফী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ওই নারীর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে কুলসুমের জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে লাশটি শনাক্ত করা হয়। তিনি মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ইলিয়াস মোল্লার বস্তিতে থাকতেন। কুলসুমের পরিচয় জানার পর পুলিশ তাঁর আত্মীয়দের খুঁজে বের করে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যায় জড়িত সন্দেহে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে এনামুল হককে (৩০) গ্রেপ্তার করে। তিনি মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ৫ নম্বর সড়কের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাঁর বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। তাঁরও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কুলসুমের ডিএনএর সঙ্গে এনামুলের ডিএনএ নমুনা মিলে যায়। পুলিশ পরিদর্শক এজাজ শফী বলেন, গতকাল ডিএনএ প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, এনামুলই কুলসুমের খুনি। এখন এনামুলকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। তদন্তে জানা গেছে, কুলসুম জীবিত থাকাকালে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকতেন। একপর্যায়ে কুলসুমের সঙ্গে এনামুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর এনামুল জানতে পারেন, কুলসুমের আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এতে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুলসুমের মাথা বিচ্ছিন্ন করে খুন করেন। পরে বস্তায় ভরে লাশ ফেলে দেন এনামুল। কুলসুমের বিচ্ছিন্ন হওয়া মাথা এখনো পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

No comments

Powered by Blogger.