পুলিশ-জনতা এক হয়ে জঙ্গিবাদ দমন করতে হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তাই পুলিশ ও জনতা এক হয়ে এসব অপরাধ দমন করতে হবে। বুধবার বিকালে ঢাকার নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং সেল দোহার-নবাবগঞ্জ থানা আয়োজিত মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, দোহার-নবাবগঞ্জ এখন মানুষের শান্তির নিবাস। এখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো অস্তিত্ব নেই। কারণ একসময় রাজনীতির নামে হত্যা-হামলা-মামলার যে অপরাজনীতির বিকাশ ঘটেছিল আমার সময়ে তা বন্ধ হয়ে গেছে। আমার দলের কোনো লোক সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও দখলের রাজনীতিতে জড়িত নয়। তিনি আরও বলেন, আজকের শিশুরা যাতে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে পরিবারকে আগে সচেতন হতে হবে। তবেই তারা আগামী দিনের মানবসম্পদে পরিণত হবে। বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নবাবগঞ্জ শহীদ মিনার থেকে জাতীয় পার্টির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সালমা ইসলাম এমপি সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় হাজার হাজার জনতা তাকে স্বাগত জানান।
প্রধান অতিথি ও অন্য অতিথিদের নিয়ে তিনি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। সালমা ইসলাম বলেন, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। তাই তাদের সুখে-দুঃখে প্রতিনিয়ত ঝড়-বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে প্রতিটি এলাকায় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছি। আশা করি, দোহার-নবাবগঞ্জের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে সার্বিক উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা সহজ হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দক্ষ দেশ পরিচালনার প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশ জনতার পাশে থেকে আজ সারা দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দোহার-নবাবগঞ্জে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপির বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, তিনি (সালমা ইসলাম) জনগণের পাশে আছেন। বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে দোহার-নবাবগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা ভালো বলেও মন্তব্য করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের কথা চিন্তা করেই জনকল্যাণমূলক নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মানুষ যাতে আগামী রমজানে নির্বিঘেœ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে সে বিষয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কোনো অশুভ চক্র জনজীবনের নিরাপত্তা বিনষ্ট করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৪০ জন হতদরিদ্রকে ভ্যান ও ৪০ জন দুস্থ মহিলাকে সেলাই মেশিন দেয়া হয়। এর আগে দুপুরে দোহারের সাইনপুকুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দ্বিতল ভবন উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানের সভাপতিত্বে নবাবগঞ্জে মহাসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, আইজিআর খান আবদুল মান্নান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সাবেক এমপি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, সাবেক এমপি খন্দকার হারুন অর রশীদ, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য আবদুল বাতেন মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা ড. আবদুল হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামান, আবুবকর সিদ্দিক, দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ, পনিরুজ্জামান তরুণ, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন ঝিলু, সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন, দোহার উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি মজিবুর রহমান, দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন শিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন, মরিয়ম জালাল শিমু, ওসি মোস্তফা কামাল, ওসি সিরাজুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি নবাবগঞ্জ উপজেলা সদস্য সচিব শরফুদ্দিন আহমেদ শরীফ, ঢাকা জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর চোকদার, কফিল উদ্দিন, মো. শাজাহান, একেএম আবদুল হালিম, এমএ মজিদ, দোহারের সভাপতি ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ, সদস্য সচিব আবদুল আলীম প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে পপ সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম, আঁখি আলমগীর, নকুল কুমার বিশ্বাসসহ দেশ বরেণ্য শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ সময় হাজারও জনতার মিলনমেলায় পরিণত হয় নবাবগঞ্জ পাইলট স্কুল মাঠ।
No comments