দূষণে বিপর্যস্ত গোয়ালিছড়া

কুচকুচে কালো। উৎকট দুর্গন্ধ। পানি না বলে কালো পদার্থ বলাই শ্রেয়। যেন কৃষ্ণগহ্বর। গোয়ালিছড়ার এই পানিও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তা করে চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা।
সিলেট নগরের কাজিরবাজার এলাকা দিয়ে প্রবহমান গোয়ালিছড়া। অন্য কোনো উৎস না থাকায় এই ছড়ার (খালবিশেষ) ওপর নির্ভরশীল আশপাশের অনেক বাসিন্দা।
কাজিরবাজার থেকে সুরমা নদীতে গিয়ে মিশেছে গোয়ালিছড়া। এ ছড়ায় নিয়মিত ফেলা হচ্ছে নগরের বর্জ্য-আবর্জনা। এখন দূষণে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ছড়াটি। নানা বর্জ্য মিশে ছড়ার পানি কালো ও পুতি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েছে। প্লাস্টিকের বোতল, খড়, হাসপাতালের পরিত্যক্ত বর্জ্যের ছড়াছড়ি এখানে।
ছড়ার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা শাহীনূর ইসলাম বলেন, আগে ছড়ার পানি খুবই স্বচ্ছ ছিল। কয়েক বছর ধরে ছড়াটি দূষণে বিপর্যস্ত। ছড়ার পানি ব্যবহার করে আশপাশের বস্তির মানুষ চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, হাসপাতালের বিষাক্ত বর্জ্য, রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্ট ও পচাগলা খাবার ফেলার কারণেই ছড়াটি দূষণের শিকার হচ্ছে। এটা রোধে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিলে এখনো ছড়াটি দূষণের কবল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’-এর সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বলেন, সিলেট নগরে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ছড়া রয়েছে। এসব ছড়া গিয়ে সুরমা নদীতে মিশেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দখল-দূষণে অধিকাংশ ছড়াই হারিয়ে যেতে বসেছে। যে কয়েকটি ছড়া এখনো টিকে আছে, এর মধ্যে গোয়ালিছড়া অন্যতম। এ ছড়াটির অস্তিত্ব রক্ষা করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, গোয়ালিছড়াটি প্রায় নিয়মিতভাবেই সিটি করপোরেশন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। কিন্তু অসচেতন ব্যক্তিদের কারণে ছড়াটি বারবার দূষণের শিকার হচ্ছে। এটা রোধে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যে বা যারা ছড়ায় ময়লা-আবর্জনা ফেলবে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দূষণে দূষণে কালো কুচকুচে হয়ে পড়েছে সিলেট নগরের কাজিরবাজার এলাকার গোয়ালিছড়ার পানি। দূষিত সেই পানিতে কর্কশিট নিয়ে দুরন্তপনায় মেতেছে এক বালক। ছবিটি দুপুরের l প্রথম আলো

No comments

Powered by Blogger.