ঘ্রাণ ছড়িয়ে শেষ হচ্ছে ফল উৎসব

পিরামিডের আদলে ফলের পসরা। ছবি: আবদুস সালাম
আ কা মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণ। চারপাশ আম-কাঁঠালের ঘ্রাণে ম ম করছে। গেট দিয়ে ঢুকতেই ডান পাশে আম বিক্রির বেশ কিছু স্টল। চলছে দোকানির হাঁকডাক, আর দরদাম। কিছুটা সামনে এগোলেই প্রদর্শনীর মূল ফটক। চোখে পড়ল একটি অস্থায়ী ফল চত্বর। তার মাঝখানে পিরামিডের মতো উঁচু কাঠের খোপ, সেখানে থরে থরে ফল সাজানো। ঢাকায় ফার্মগেটের খামারবাড়িতে চলতে থাকা ‘জাতীয় ফল প্রদর্শনী’ উৎসবের শেষ দিনে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ল। তিন দিনের এ মেলা আজ বুধবার শেষ হচ্ছে। প্রদর্শনী খোলা থাকবে রাত আটটা অবধি। এ উৎসবের আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
প্রদর্শনীতে ছয়টি সরকারি, বেসরকারি সংস্থা মিলে ৪২টি প্রতিষ্ঠানের ৬০টি স্টল রয়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিজেদের ফল বা উৎপাদিত পণ্য এনে এখানে পসরা সাজিয়েছেন স্টল মালিকেরা। প্রদর্শনীতে আছে দুর্লভ ফল টক আতা, তৈকর, আঁশফল, পিচফল, স্ট্রবেরি পেয়ারা, খুদি জাম, চেরি, তারকা ফল, জাবাটিকা, ডেফল, আলু বোখারা, বিলাতি গাব, গোলপাতা ফল, পাম্প ফল, যজ্ঞ ডুমুর, বিলিম্বি, সাতকড়া, আরবরাই ইত্যাদি।
ফল প্রদর্শনী উৎসবের অস্থায়ী চত্বরের পুরোটাই নানা
রকমের ফলে ঢাকা ছিল। ছবি: আবদুস সালাম
প্রচলিত ফলের মধ্যে আছে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, পেঁপে, সুপারি, আঙুর, আনারস, তরমুজ, লেবু, নারকেল, বিভিন্ন প্রজাতির কলা, আমড়া, কামরাঙা ইত্যাদি। এ ছাড়া আছে পান, ভুট্টা ও ভুট্টার আটা, মধু, আচার ও কাসুন্দি। আরও আছে মাশরুম চাষপদ্ধতি, বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম, ছাদে বাগান প্রকল্প প্রদর্শনী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে খুব ভিড় হয়। শিক্ষার্থী, তরুণ এবং সাধারণ লোকজনই বেশি আসছেন। প্রদর্শনীতে প্রায় ১৩৫ জাতের আম আনা হয়েছে। বিক্রির ব্যবস্থাও আছে।’
প্রদর্শনীতে রয়েছে সূর্যপুরী, চোষা, ফনিয়া, দাড়িকা, বারমামী, কুমারিকা, রাংগুয়াই, ভূত বোম্বাই, সিঁদুরী, রঙ্গিনা, কুয়া পাহাড়ি, আশ্বিনা, সুন্দরি গুটি, কালিভোগ, রানি পছন্দ, ল্যাংড়া, আম্রপালি, গোবিন্দভোগ, বাউ আম, কাচামিঠাইসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টল। ছবি: আবদুস সালাম
আমবিক্রেতা নাজমা আক্তার বললেন, মোটামুটি সবাই-ই কম-বেশি আম কিনছেন। তবে, বোম্বাই, ল্যাংড়া ও মল্লিকার চাহিদা একটু বেশি। গাছপাকা আমও পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টলকর্মী শহিদুল ইসলাম বললেন, ‘আমাদের স্টলে প্রায় ১০০ প্রজাতির ফল দেখানো হচ্ছে। নতুন ও অপরিচিত ফল নিয়ে মানুষের আগ্রহ ব্যাপক। সবাই আসছেন, প্রশ্ন করছেন, আমরা উত্তর দিচ্ছি।’
প্রদর্শনী আসা লোকজনের একজন তপন রায়। তিনি বললেন, ‘আমাদের দেশের ফলফলাদি অনেক সমৃদ্ধ, এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। অনেক ফল দেখলাম, যা আমার কাছে নতুন।’

No comments

Powered by Blogger.