৬ই জুন ঢাকা আসছেন মোদি- ২০ চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা, বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা হতে পারে by মিজানুর রহমান

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা ও  দিল্লি। আগামী ৬ই জুন দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি বাংলাদেশে আসছেন। দু’দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল একই সময়ে সফরসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সফরে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়, মোদির এ সফর দুই দেশের বিদ্যমান সুসম্পর্ককে আগামী দিনে আরও জোরদার করবে।  এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এদিকে মোদির সফরে ঢাকার প্রত্যাশা কি? জানতে চাইলে পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের তেমন কোন প্রত্যাশা নেই। তবে যেটুকু জানা গেছে তিনি ‘উদার’ মন নিয়ে এখানে আসছেন। তার সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে। ঢাকা-দিল্লি উভয়ে যোগাযোগে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ আশা করছে সফরটি অত্যন্ত সফল হবে। একটি সফরের সঙ্গে যত ধরনের উপাদান প্রয়োজন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে তার সবই থাকবে। প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে নতুন এবং নবায়ন মিলে অন্তত ২০টি চুক্তি সইয়ের। এর মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক ও বিনিময়পত্র রয়েছে। আগামী দিনে দুই দিনের সম্পর্ক কিভাবে এগিয়ে যাবে সে সম্পর্কিত একটি যৌথ বিবৃতি সই করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। নতুন আরও ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে ভারত- এমন ঘোষণা আগেই এসেছিল। পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে গতকাল যে খবর বেরিয়েছে তা হলো প্রস্তাবিত ঋণের পরিমাণ নাটকীয়ভাবে দ্বিগুণ বা তিনগুণও হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তির বিষয়ে এ সফরে চূড়ান্ত কিছু হবে এমন আশা করছে না বাংলাদেশ। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আসছেন এমন কোন তথ্য এখনও পায়নি পররাষ্ট্র দপ্তর। সফর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অত্যন্ত ছোট একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। ৬ই জুন সকালে বিশেষ বিমানে আসবেন, যাবেন ৭ই জুন সন্ধ্যায়। হিসাবে দুদিন হলেও কার্যত ৩৬ ঘণ্টা বাংলাদেশে অবস্থান করবেন তিনি। জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে যাবেন। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী নেতাদের সঙ্গে তার দেখা হতে পারে। ঢাকার বাইরে কোন কর্মসূচি নেই তার। তবে রাজধানীতে তরুণদের উদ্দেশে বক্তৃতা করবেন দিল্লির কিং নরেন্দ্র মোদি।। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই বক্তৃতার আয়োজন করছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেই বক্তৃতা হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সহায়তা দিতে আগ্রহী ভারত চীনসহ অনেক দেশ।  মোদির সফরে ভারতের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আসতে পারে। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় বাংলাদেশ এখনই এ নিয়ে কোন প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকার করতে চায় না। এমনকি মোদির সফরেও নয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর কাভার করতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রায় ১০০ প্রতিনিধি ঢাকা আসছেন। মোদির সফরসঙ্গী হিসেবে নয়, ওই প্রতিনিধিরা নিজ খরচেই আসছেন। তারা এরই মধ্যে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন। সেগুনবাগিচার কর্মকর্তারা আশা করছেন আগামী ৬ ও ৭ই জুন দুনিয়ার দৃষ্টি ঢাকার ওপরেই থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.