ভারতে দাবদাহে মৃতের সংখ্যা ৮০০

ভারতজুড়ে তীব্র দাবদাহে মৃতের সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, কয়েক দিনের উচ্চতাপমাত্রায় মৃতের সংখ্যা ৮০০-তে পৌঁছায়। রাজধানী নয়া দিল্লির তাপমাত্রা বর্তমানে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভিন্ন হাসপাতালে হিটস্ট্রোকের শিকার মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণ ছাড়া মানুষকে ঘর ছেড়ে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে তেলাঙ্গানার আদিলাবাদ, খাম্মাম, নালগোন্ডা ও করিমনগর জেলায়। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু সব জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যবাসীকে সকাল ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় না বেরুতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রচণ্ড গরমে স্বস্তির খোঁজে কয়েকজন কিশোর।
ছবিটি সম্প্রতি নয়াদিল্লি থেকে তোলা। ছবি: এএফপি
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে। সেখানে গত এক সপ্তাহে গরমজনিত কারণে ৫৫১ জন মানুষ মারা গেছেন। সোমবারও রাজ্যজুড়ে তাপমাত্রা ছিল ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বিশেষ কমিশনার পি তুলসি রানি বলেন, রাজ্য সরকার মানুষের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে সেসব প্রচার করা হচ্ছে। মানুষকে মাথায় টুপি পরা ছাড়া বাইরে বের না হতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি পান করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রাজধানী দিল্লিসহ ভারতের বেশির ভাগ অংশেই গতকালও ছিল মাত্রাতিরিক্ত গরম। সব সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু থাকায় অনেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করছেন। হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, রাজধানীতে সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সময়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়েও এটি ৫ ডিগ্রি বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশের সীমান্তবর্তী তেলেঙ্গানা রাজ্যে নিহত হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩১ জন। সেখানে সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশাতে ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আজ ও আগামীকালও ৪৫ ডিগ্রির ওপরে থাকবে তাপমাত্রা। পশ্চিমবঙ্গে নিহত হয়েছেন আরও ১৩। সেখানে দিনের বেলায় গাড়িচালকদের গাড়ি না চালানোর আহ্বান জানিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। ভারতজুড়ে দাবদাহে নিহতদের বেশির ভাগই গরিব মানুষ। প্রতি বছরই এমন বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে। এ ছাড়া, হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ সংকটে ভোগে।

No comments

Powered by Blogger.