পা ধরানোর পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সেই অধ্যাপক

পা ধরানোর পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোনতাজ উদ্দীন। তার চেয়ে ৫ বছরের জুনিয়র কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার  (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশ্রাফুল ইসলামের পা ধরে ক্ষমা চাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না অধ্যাপক মোনতাজ উদ্দীন। তিনি এ লাঞ্ছনার হাত থেকে রক্ষা পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। তিনি জানান, তিনি যখন আত্মহত্যা করতে যান সে সময় তার একমাত্র শিশুকন্যার মুখটি বারবার ভেসে ওঠে। শিশুটি বাবা বলে আর ডাকতে পারবে না। না তিনি আর আত্মহত্যা করতে পারলে না। তিনি তার মেয়ের মুখে বাবা ডাকটি আবার শুনতে চান। এর পরে তিনি বিষয়টি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতাদের কাছে অবহিত করেন।
এদিকে সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে ফুঁসে ওঠেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজে ছুটে যান বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতাসহ সাধারণ শিক্ষকরা। বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন অব্যাহত রাখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে স্থানীয় আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্রসমাজ (জেপি), উদীচীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন। শিক্ষক নেতারা শিক্ষামন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করলে জুনিয়র হয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাকে পা ধরতে বাধ্য করার ঘটনায় পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি কমিটি, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড এবং পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া ঘটনা খতিয়ে দেখতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।
উল্লেখ্য, ৯ই এপ্রিল এইচএসসি ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালে বাগবিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে অধ্যক্ষের কক্ষে অধ্যক্ষ ও ইউএনও মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদারের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে শিক্ষক মোনতাজ উদ্দীনকে ম্যাজিস্ট্রেটের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করান।

No comments

Powered by Blogger.