বাউফলের স্লুইস গেট- দ্রুত সংস্কারে বাঁচবে কৃষি

বাউফলের ৬টি খরস্রোতা খালের মুখে নির্মিত স্লুইস গেটগুলো এখন অচল হয়ে পড়েছে। একটি স্লুইস গেট নির্মাণ ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে। অন্য স্লুইস গেটগুলোর মধ্যে কোনোটি খালের মুখে পলি জমে যাওয়ার কারণে, কোনোটির পানি ওঠানামার দরজা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জোয়ার-ভাটার সময় পর্যন্ত খালে অতিরিক্ত পানি ঢুকতে না দেওয়া বা পানি ধরে রাখার মতো অত্যাবশ্যকীয় কাজ করতে পারছে না। শনিবার সমকালে প্রকাশিত 'বাউফলের ৬ স্লুইস গেট কৃষকের গলার কাঁটা' শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে ওই এলাকার কৃষি ও কৃষকের ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। অথচ ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও জলাবদ্ধতার হাত থেকে এক লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার কৃষকের জানমাল রক্ষার জন্য স্লুইস গেটগুলো আশির দশক থেকে নব্বইয়ের দশকের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও স্লুইস গেটগুলো দেখাশোনার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কর্মী ও কর্মকর্তা না থাকায় এগুলো অকেজো হয়ে পড়লেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কানে পানি যায়নি। আর এ অবস্থা শুধু বাউফলের স্লুইস গেটগুলোর ক্ষেত্রেই ঘটেছে তা নয়, সমকালসহ দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিভিন্ন এলাকার অচল বা নষ্ট হয়ে যাওয়া স্লুইস গেটের বিবরণ প্রায়শ প্রকাশ পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পানি উন্নয়ন বোর্ড ফান্ডের অভাব ও লোকবল স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করে। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে, স্লুইস গেটের চাবি অপারেটর না থাকায় এহেন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নির্মাণের পর দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে পুরনো হয়ে যাওয়া নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু এভাবে দায়িত্ব এড়ানো যায় না। পলি নিয়মিত অপসারণ করা এবং স্লুইস গেটের বিভিন্ন অংশ সংস্কারের মাধ্যমে এগুলোকে সচল রাখা যেত। এর জন্য প্রয়োজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতা। আমরা আর সময়ক্ষেপণ না করে বাউফলের স্লুইস গেটগুলোকে কার্যক্ষম করে তোলার মাধ্যমে এলাকার কৃষি ও কৃষকের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.