সংলাপ শব্দটিকেও বির্তকিত করার অপচেষ্টা চলছে -ড. কামাল

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংস্কারের মতো সংলাপ শব্দটিকেও এখন বির্তকিত করার অপচেষ্টা চলছে। ২০০৭ সালে সংস্কার শব্দকে বির্তকিত করা হয়েছিলো। বলা হতো ওরা সংস্কারপন্থী ওদের পিটাও। কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য সংস্কার আর শান্তির জন্য সংলাপ প্রয়োজন। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগকির ঐক্য আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সন্ত্রাস চাই না, শান্তি ও গনতন্ত্র চাই, জাতীয় সংলাপের বিকল্প নেই’- এই দাবিতে নাগরিক ঐক্যের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুই ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সংগঠনটির আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এতে সভাপতিত্ব করেন।
কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, জেএসডির সাধারণ সম্পদক আব্দুল মালেক রতন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহম্মেদ, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ এবং ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল।
চলমান সংকট থেকে উত্তরনের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে সংলাপের প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, এটা শুধু দুই দলের মধ্যে হলে চলবে না। জাতীয় সংলাপে বসতে হবে। দেশের মালিক হচ্ছে ১৬ কোটি জনগণ। কোনো দল, ব্যক্তি বা পরিবারের নয়। দেশের জনগণ শান্তি চায়, সুশাসন চায়, কার্যকর গণতন্ত্র চায়। এ জন্য জনগণের কথা শুনতে হবে।
ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, সরকারকে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের কথা শুনতে হবে। যারা সংবিধানকে বিশ্বাস করেন তাদের বক্তব্য শুনতে হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় সংলাপ-সমাঝোতার জন্য কাজ করবো। এ জন্য সবার সহযোগীতা চাই। কারণ দেশের মধ্যে আজ একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আসম আবদুর রব বলেন, সন্ত্রাস-সহিংসতা বোমাবাজি চাই না। এসবের উৎস খুজে বের করতে হবে। একপক্ষ বলছেন, সংলাপ বসবেন না তাহলে সমস্যা সমাধাণ করবেন কিভাবে? আমাদের কি আবার মুক্তিযুদ্ধের মতো হাতিয়ার হাতে নিতে হবে? তিনি বলেন, দেশের সংকট সমাধানে দেশের মুরব্বীদের কথা শুনছেন না। বিদেশীদের নাক গলানো শুরু হয়ে গেছে, এটা ভাল না। দেশের মুরব্বীদের কথা শুনুন। তাদের দেখে নেয়ার হুমকির পরিণতি ভাল হবে না। তাতে দেশ ভয়াবহ হুমকির মধ্যে পড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের মধ্যে আজ এমন পরিবেশ তৈরি হতো না, যদি সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ না করতো। গায়ের জোরে কোনো সমস্যাই সমাধাণ করা যায় না। বিএনপিকে রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এখন জঙ্গি বানানোর চেষ্টা করা হচেছ। আমরা সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে। যারা রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা করছে তারা রাজনীতি বোঝে না। সরকারের দায়িত্ব এসব বন্ধ করা। তবে এ জন্য বিচার বহিভুত হত্যাকান্ড করা যাবে না। সন্ত্রাস চাই না। শান্তি চাই। প্রয়োজন সংলাপের।

No comments

Powered by Blogger.