নিরুত্তাপ নির্বাচনের মাঠ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনের মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। জেলার বাকি চারটি আসনের মধ্যে তুলনামূলকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অন্য আসনের প্রার্থীরা ঢিমেতালে প্রচার চালালেও সদর আসনের প্রার্থীরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনী এলাকায় শোভা পাচ্ছে পোস্টার ও ফেস্টুন। কিন্তু নির্বাচনের মাঠ রয়েছে নিরুত্তাপ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলা ও বিজয়নগর উপজেলা নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন। এ আসনের ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৪৫ হাজার ৯৯। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ আসনের ভোটার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির (জেপি) ডা. ফরিদ আহমেদ (বাইসাইকেল), বিএনএফের জহিরুল হক ভূঁইয়া (টেলিভিশন) ও ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী সৈয়দ নাঈমুদ্দিন (মোমবাতি)। তবে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ ও জেপি প্রার্থী ছাড়া অন্যরা নেই।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তেমন উত্তাপ না থাকলেও এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রার্থীরা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা গণসংযোগ, নির্বাচনী সভা ও মতবিনিময় করেছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় কর্মিসভা, গণসংযোগ, নির্বাচনী সভা ও মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে নৌকা মার্কার সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ হচ্ছে। এ ছাড়া প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে কর্মিসভা করছেন।
এ আসনে প্রচার ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জেপি প্রার্থী ও জাতীয় বীর প্রয়াত আবদুল কুদ্দুস মাখনের অনুজ ডা. ফরিদ আহমেদ। নির্বাচনী এলাকায় নৌকা মার্কার পোস্টারের পাশাপাশি বাইসাইকেল মার্কার পোস্টারও শোভা পাচ্ছে। শহরে বিলি করা হচ্ছে সাইকেল মার্কার লিফলেট।
গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভায় মোকতাদির চৌধুরী গত তিন বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।
জেপি প্রার্থী ডা. ফরিদ আহমেদ প্রচার-প্রচারণায় নিজেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ডাকসুর সাবেক জিএস ও সাবেক এমপি, জাতীয় বীর প্রয়াত আবদুল কুদ্দুস মাখনের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে তিনি বিজয়ী হলে আবদুল কুদ্দুস মাখনের মতো এলাকাবাসীর সেবা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাইসাইকেল মার্কায় ভোট চাইছেন।
বিএনএফ প্রার্থী জহিরুল হক ভূঁইয়া (টেলিভিশন) ও ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী সৈয়দ নাঈমুদ্দিন (মোমবাতি) কোনো প্রচারে অংশ নিচ্ছেন না।
এমনকি নির্বাচনী এলাকায় তাদের দু'জনের কোনো পোস্টারও নেই। তাদের নিয়ে ভোটারদের রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। প্রার্থীদের ভোটাররা চেনেন না বলেও জানা গেছে।
নির্বাচনী মাঠ ঘুরে ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোকতাদির চৌধুরী এমপির সঙ্গে লড়াই হবে জেপি প্রার্থী ডা. ফরিদ আহমেদের। তবে এটি হবে অসম লড়াই। এ আসনে মোকতাদির চৌধুরীর জয় সুনিশ্চিত।

No comments

Powered by Blogger.