সমুদ্রসীমার ১২ বস্নকে তেল-গ্যাস উত্তোলনের কাজ আগামি বছর শুরু

আগামী বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার ১২টি বস্নকে তেল গ্যাস উত্তোলনের কাজ শুরু করা যাবে। গতবছর ডিসেম্বরে নির্ধারিত ১২টি বস্নকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রোবাংলার আহ্বানকৃত আন্তর্জাতিক দরপত্র,
মূল্যায়ন শেষে নির্বাচিত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আগামী জুন-জুলাই মাসে উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষরিত হবে। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিগুলো আগামী বছরের প্রথম দিকেই তেল গ্যাস উত্তোলনের কাজ শুরু করতে পারবে।
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার নির্ধারিত ১২টি বস্নকের মধ্যে গভীর সমুদ্রে ৩টি এবং অগভীর সমুদ্রে ৯টি বস্নকে সর্বমোট ৬১ হাজার ৬৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করা হবে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৪১ বর্গকিলোমিটার এলাকা পড়েছে গভীর সমুদ্রে। বাকি ৫১ হাজার ৫৮৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা অগভীর সমুদ্রে পড়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, গতবছর ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০১২ নামে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্যে নির্ধারিত ১২টি বস্নকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রোবাংলার আহ্বানকৃত আন্তর্জাতিক দরপত্র আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত জমা দেয়া যাবে।
সূত্র জানায়, সমুদ্রে তেল গ্যাস উত্তোলনে আগ্রহী ১৪টি বিদেশি কোম্পানি দরপত্রের শিডিউল কিনেছে। এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা দরপত্র গ্রহণকারী ১২টি কোম্পানির সঙ্গে মডেল পিএসসি ২০১২-এর বিভিন্ন শর্ত নিয়ে আলোচনা করেছে। পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে আগ্রহী কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে, মডেল পিএসসি ২০১২-এর শর্তানুযায়ী কোম্পানি তাদের লাভ নিতে পারবে কোন ধরনের শুল্ক ছাড়া। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের সুবিধা কোম্পানি পাবে।
তেল গ্যাস উত্তোলনে আগ্রহী ১৪টি বিদেশি কোম্পানি দরপ্রত্রের শিডিউল কিনলেও এ পর্যন্ত মোট ১২টি কোম্পানি এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠক করেছে।
এর মধ্যে, বাংলাদেশের তেল গ্যাস ক্ষেত্রে নিয়োজিত স্থলভাগে গাস উত্তোলনকারী (৫১ শতাংশ) সবচেয়ে বড় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি 'শেভরন', গভীর সমুদ্রে ১০ ও ১১ নম্বর বস্নকে নিয়োজিত অপর যুক্তরাষ্ট্রীয় কোম্পানি 'কনোকো-ফিলিপস' এবং অগভীর সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলনে নিয়োজিত অস্ট্রেলীয় কোম্পানি 'সন্তোস' সহ যেসব কোম্পানি দরপত্রের শিডিউল কিনেছে তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেল ও আইপিআর আনাদারকো পেট্রোলিয়াম, অস্ট্রেলীয় কোম্পানি কারনাভন, সিঙ্গাপুরের কৃশ এনার্জি, চীনের ন্যাশনাল অফশোর ওয়েল করপোরেশন (সিনুক), ভারতের অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন (ওএনজিসি) ও বাহরাইন পেট্রোলিয়াম কোম্পানি : অর্থাৎ মোট ১০টি কোম্পানি গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হক, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর ও পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মডেল পিএসসি ২০১২-এর বিভিন্ন শর্ত বিষয়ক বৈঠকে অংশগ্রহণ করে।
এর আগে আরও দুটি কোম্পানি একই বিষয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে বৈঠক করেছিল এবং পরে বাকি দুটি কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।
গভীর সমুদ্রের তিনটি বস্নক হচ্ছে ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১। আর অগভীর সমুদ্রের ৯টি বস্নক হচ্ছে এসএস-০২ থেকে এসএস-০৪ ও এসএস-০৬ থেকে এসএস-১১। এছাড়া রিংগফেসড এলাকা কুতুবদিয়া এবং টেকনাফ দরপত্রে রাখা হয়েছে। এদের যথাক্রমে বস্নক এসএস-১০ ও এসএস-০৪ এ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কুতুবদিয়ায় গ্যাস কাঠামো অনেক আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.